How to remove leg plaster safely: পায়ের প্লাস্টার খোলা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা সাবধানতার সাথে করতে হয়। সাধারণত চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরাই এই কাজটি করে থাকেন। তবে কখনও কখনও বাড়িতেও প্লাস্টার খোলার প্রয়োজন হতে পারে। এই লেখায় আমরা জানব কীভাবে নিরাপদে ও সঠিকভাবে পায়ের প্লাস্টার খুলতে হয়।প্লাস্টার খোলার আগে প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে যে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্লাস্টার খোলার সময় হয়েছে। সাধারণত ৬-৮ সপ্তাহ পর প্লাস্টার খোলা হয়। তবে এটি নির্ভর করে আঘাতের ধরন ও রোগীর বয়সের উপর।
প্লাস্টার খোলার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ:
• গরম পানি
• ভিনেগার
• কাঁচি
• প্লাস্টার কাটার যন্ত্র (যদি থাকে)
• তোয়ালে
• লোশন
পা ভাঙ্গা প্লাস্টার: কতদিন পর খুলবেন? জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
প্লাস্টার খোলার ধাপগুলো:
১. প্রথমে প্লাস্টারটি ১৫-২০ মিনিট গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পানিতে একটু ভিনেগার মিশিয়ে নিলে প্লাস্টার আরও নরম হবে।
২. এরপর প্লাস্টারের উপরের অংশ থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করুন। কাঁচি দিয়ে প্লাস্টারের কিনারা কেটে নিতে পারেন।
৩. প্লাস্টার কাটার যন্ত্র থাকলে সেটি দিয়ে সাবধানে প্লাস্টার কাটুন। যন্ত্রটি চামড়ায় না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৪. প্লাস্টারের নিচের কটন প্যাডিং সাবধানে খুলুন। এটি চামড়ার সাথে আটকে থাকতে পারে।
৫. প্লাস্টার খোলার পর পা ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। লোশন লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন।
৬. পা নড়াচড়া করার চেষ্টা করুন। প্রথমদিকে একটু অস্বস্তি লাগতে পারে।
প্লাস্টার খোলার সময় সতর্কতা:
• প্লাস্টার কাটার যন্ত্র ব্যবহার করলে খুব সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। এটি চামড়ায় লাগলে ক্ষত হতে পারে।
• প্লাস্টার খোলার সময় কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
• প্লাস্টার খোলার পর পা খুব দুর্বল থাকতে পারে। হঠাৎ করে বেশি চাপ দেবেন না।
• পা ফুলে থাকলে বা লাল দেখালে চিকিৎসককে জানান।
প্লাস্টার খোলার পর যত্ন:
১. প্রথম কয়েকদিন পা উঁচু করে রাখুন। এতে ফুলা কমবে।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো হাঁটাচলা শুরু করুন।
৩. পায়ে নিয়মিত লোশন লাগান। এতে চামড়া নরম থাকবে।
৪. পায়ে কোনো ঘা বা ক্ষত দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৫. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কঠিন কোনো কাজ করবেন না।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ হাড় ভাঙ্গার কারণে প্লাস্টার পরেন। এদের মধ্যে ৮০% মানুষ সফলভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে ১৫% মানুষের ক্ষেত্রে প্লাস্টার খোলার পর কিছু জটিলতা দেখা দেয়। এর মধ্যে পেশীর দুর্বলতা, জয়েন্টের অচলাবস্থা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।প্লাস্টার খোলার পর প্রথম কয়েকদিন পা খুব দুর্বল থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্লাস্টার খোলার ৪-৬ সপ্তাহের মধ্যে ৯০% রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসেন। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে ৩-৬ মাস সময় লাগতে পারে।প্লাস্টার খোলার পর নিয়মিত ব্যায়াম ও ফিজিওথেরাপি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে পেশী ও জয়েন্টের শক্তি ফিরে আসে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যায়াম করলে রোগীরা ৫০% দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।প্লাস্টার খোলার পর কিছু রোগীর ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন:
• পেশীর দুর্বলতা – ১০% রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়
• জয়েন্টের অচলাবস্থা – ৫% রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়
• চামড়ায় সংক্রমণ – ২% রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়
• পুনরায় হাড় ভাঙ্গা – ১% রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়
এসব জটিলতা এড়াতে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।প্লাস্টার খোলার পর পায়ের যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায় এবং জটিলতা এড়ানো যায়। নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে কোনো সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।প্লাস্টার খোলার পর প্রথম কয়েকদিন খুব সতর্কতার সাথে চলাফেরা করতে হবে। হঠাৎ করে বেশি চাপ দিলে আবার আঘাত পেতে পারেন।
কাপড়ের গয়নার জনপ্রিয়তা বাড়ছে: ফ্যাশন শিল্পে নতুন যুগের সূচনা।
ধীরে ধীরে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী চলাফেরা বাড়াতে হবে। প্রথম সপ্তাহে ক্রাচ বা ওয়াকার ব্যবহার করা ভালো।প্লাস্টার খোলার পর খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর দিতে হবে। ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এতে হাড় ও পেশী শক্তিশালী হবে। প্রতিদিন ২-৩ গ্লাস দুধ, ডিম, মাছ, সবজি ইত্যাদি খাওয়া ভালো।প্লাস্টার খোলার পর নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে পেশী ও জয়েন্টের নমনীয়তা ফিরে আসে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যায়াম করতে হবে।
সাধারণত নিম্নলিখিত ব্যায়ামগুলো করা হয়:
• পা ওঠানামা করা
• পায়ের আঙ্গুল নাড়াচাড়া করা
• হাঁটু ভাঁজ করা
• পায়ের গোড়ালি নাড়াচাড়া করা
এসব ব্যায়াম দিনে ৩-৪ বার করতে হবে। প্রতিবার ১০-১৫ মিনিট করে করা ভালো। ব্যায়ামের সময় কোনো ব্যথা অনুভব করলে থামিয়ে দিতে হবে।প্লাস্টার খোলার পর মানসিক চাপও থাকতে পারে। অনেকেই হতাশায় ভুগতে পারেন। এক্ষেত্রে পরিবার ও বন্ধুদের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম ও সুস্থ জীবনযাপন করলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা যায়।সারকথা, পায়ের প্লাস্টার খোলা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। সঠিকভাবে প্লাস্টার খুললে এবং পরবর্তী যত্ন নিলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে কোনো জটিলতা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্যাভ্যাস ও সতর্কতা অবলম্বন করলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়।