Hrithik Roshan diet and exercise routine: বলিউডের গ্রিক গড হৃতিক রোশন ৫১ বছর বয়সেও তাঁর অসাধারণ ফিটনেস নিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন। ‘কহো না প্যার হ্যায়’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হওয়া এই তারকা অভিনেতা বর্তমানে বলিউডের সবচেয়ে ফিট অভিনেতাদের একজন। তাঁর চমৎকার শরীরচর্চা ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে তিনি এখনও যুবকদের মতো ফিট ও সুস্থ রয়েছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক হৃতিক রোশনের ডায়েট ও ওয়ার্কআউট রুটিন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
হৃতিক রোশনের ডায়েট প্ল্যান
হৃতিক রোশনের ব্যক্তিগত ফিটনেস প্রশিক্ষক ক্রিস গেথিন জানিয়েছেন, হৃতিক প্রতিদিন ৬-৭টি মিল খান। তাঁর খাবারে থাকে:
- ডিমের সাদা অংশ
- চিকেন
- হোয়ে প্রোটিন
- মাছ
- জটিল কার্বোহাইড্রেটের উৎস যেমন ওটস, কুইনোয়া, চাল ও মিষ্টি আলু
হৃতিকের ডায়েটে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুব সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়। তাঁর প্রতিটি খাবারে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারের সুষম মিশ্রণ থাকে।প্রতি ৩ ঘণ্টা অন্তর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করেন হৃতিক। যদি কোনো কারণে খাবার খেতে না পারেন, তাহলে প্রোটিন শেক খান। তিনি সবসময় সম্পূর্ণ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করেন।
মস্তিষ্কের মহাকাব্য: আপনার সন্তানের প্রতিভা বিকাশের ১০টি অমোঘ কৌশল
হৃতিক রোশনের ওয়ার্কআউট রুটিন
হৃতিক রোশনের ওয়ার্কআউট রুটিন খুবই কঠোর ও পরিকল্পিত। তাঁর নিয়মিত ওয়ার্কআউট রুটিনে রয়েছে:
- সপ্তাহে ৫ দিন ওয়েট ট্রেনিং
- প্রতিদিন ৪৫-৬০ মিনিট ওয়েট ট্রেনিং
- প্রতি সেশনে ২টি বডি পার্ট নিয়ে কাজ করা (যেমন – ব্যাক ও বাইসেপস, চেস্ট ও ট্রাইসেপস, শোল্ডার ও অ্যাবস)
- প্রতিদিন কমপক্ষে ১০,০০০ পা হাঁটা
- প্রতিদিন ৪০ মিনিট এরোবিক এক্সারসাইজ (বিচে জগিং, সাঁতার ইত্যাদি)
হৃতিকের ট্রেনার জানিয়েছেন, তাঁর ওয়ার্কআউট রুটিন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করা হয় যাতে শরীর একঘেয়েমি থেকে মুক্ত থাকে।
হৃতিক রোশনের ফিটনেস রুটিনের বিশেষ দিকগুলি
হৃতিক রোশনের ফিটনেস রুটিনের কয়েকটি বিশেষ দিক রয়েছে:
- কার্ডিও: হৃতিক প্রতিদিন একবার বা দুইবার কার্ডিও করেন। এর মধ্যে রয়েছে রানিং, এলিপটিক্যাল ট্রেনিং, স্টেয়ারমাস্টার রোয়িং, সাঁতার ইত্যাদি।
- ফাংশনাল ওয়ার্কআউট: ৩০ মিনিটের ফাংশনাল ওয়ার্কআউটে থাকে বক্সিং, কেটলবেল এক্সারসাইজ, ব্যাটল রোপস, প্লাইওমেট্রিক ড্রিল ইত্যাদি।
- অ্যাবস ওয়ার্কআউট: হৃতিক তাঁর বিখ্যাত সিক্স-প্যাক অ্যাবস বজায় রাখতে ১০ মিনিটের একটি বিশেষ অ্যাবস রুটিন অনুসরণ করেন।
- ঘুম ও বিশ্রাম: হৃতিক রাত ৯টায় ঘুমাতে যান এবং সকাল ৫টা-৬টায় ঘুম থেকে ওঠেন।
- হাইড্রেশন: প্রতিদিন ৪-৫ লিটার পানি পান করেন হৃতিক।
হৃতিক রোশনের ফিটনেস ট্রান্সফরমেশন
হৃতিক রোশন সম্প্রতি তাঁর আসন্ন ছবি ‘ফাইটার’-এর জন্য অসাধারণ শারীরিক পরিবর্তন এনেছেন। এই ট্রান্সফরমেশনের জন্য তিনি মাত্র ৫ সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন। এই সময়ে তিনি যে রুটিন অনুসরণ করেছিলেন:
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
ওয়ার্কআউট | প্রতিদিন সকালে ৬০-৭০ মিনিট ওয়েট ট্রেনিং, ৩০-৪৫ মিনিট কার্ডিও |
ডায়েট | প্রতি মিলে ২০০-২২০ গ্রাম প্রোটিন, ৪০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট |
হাইড্রেশন | প্রতিদিন ৪ লিটারের বেশি পানি পান |
ঘুম | রাত ৯টায় ঘুমাতে যাওয়া |
রিকভারি | গ্রাউন্ডিং, রেড লাইট থেরাপি, হাইপারবারিক চেম্বার, আইস বাথ, সনা, ম্যাসাজ ইত্যাদি |
হৃতিক রোশনের ফিটনেস মন্ত্র
হৃতিক রোশন সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ২০২৫ সালের ফিটনেস মন্ত্র শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন:”শক্তিশালী দেখানো আর শক্তিশালী হওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। এই বছর আমি আসল জিনিসটার পেছনে যাচ্ছি।”এই পোস্টে তিনি তাঁর দৃঢ় পেশীবহুল শরীর প্রদর্শন করেছেন, যা দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন যে ৫১ বছর বয়সেও তিনি এত ফিট থাকতে পারেন।
সফলতার ১৫টি অভ্যাস: শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের জীবন থেকে শেখার মতো পাঠ
হৃতিক রোশনের ফিটনেস রুটিন থেকে আমরা দেখতে পাই যে সুস্থ ও ফিট থাকার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কঠোর পরিশ্রম ও নিয়মানুবর্তিতা আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। তবে মনে রাখতে হবে, প্রত্যেকের শরীর ও চাহিদা আলাদা। তাই নিজের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী একজন পেশাদার ফিটনেস প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে ব্যক্তিগত ফিটনেস রুটিন তৈরি করা উচিত।হৃতিক রোশনের মতো ফিট ও সুস্থ থাকতে হলে শুধু ব্যায়াম নয়, জীবনযাত্রার সামগ্রিক পরিবর্তন আনতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম – এই চারটি বিষয়ের সমন্বয়ে আমরাও দীর্ঘদিন সুস্থ ও সক্রিয় থাকতে পারি। হৃতিক রোশনের ফিটনেস যাত্রা আমাদের সকলের জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা আমাদের নিজেদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হতে অনুপ্রাণিত করে।