ICC Champions Trophy 2025 Match Details: ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের শীর্ষ ৮টি দল অংশগ্রহণ করবে। ২৮ বছর পর পাকিস্তান প্রথমবারের মতো একটি আইসিসি টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে যাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।
এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী দলগুলো হলো – পাকিস্তান (আয়োজক দেশ হিসেবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্যতা অর্জন করেছে), আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। এই দলগুলো ২০২৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে শীর্ষ ৭টি স্থান অর্জনের মাধ্যমে এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেয়েছে।
প্রতিযোগিতাটি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হবে, প্রতিটি গ্রুপে ৪টি করে দল থাকবে। গ্রুপ পর্বে রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে খেলা হবে, যার পর নক-আউট পর্বে যাবে দলগুলো। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সেমিফাইনালে উঠবে এবং সেখান থেকে বিজয়ী দলগুলো ফাইনালে খেলার সুযোগ পাবে। ফাইনাল ম্যাচটি ৯ মার্চ, ২০২৫ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত হবে।
ICC Trophy History: বিরাট কোহলির অসাধারণ রেকর্ড: ক্রিকেট বিশ্বে নতুন কীর্তি গড়লেন রান মেশিন!
এই টুর্নামেন্টের জন্য পাকিস্তান তিনটি ভেন্যু প্রস্তাব করেছে – করাচি, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডি। করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ৩টি, লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে ৭টি এবং রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে এই আয়োজন নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। ভারত এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানে খেলতে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি তারা পাকিস্তানে দল পাঠাবে কিনা। এমনকি একটি হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ স্থানে যেমন শ্রীলঙ্কা বা দুবাইতে স্থানান্তর করা যেতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, আইসিসি টুর্নামেন্টের সময়সূচি প্রকাশের নির্ধারিত সময়সীমা (১১ নভেম্বর) অতিক্রম করেছে। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) নিশ্চিত করেছে যে ভারতীয় দর্শকদের জন্য যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হবে, যার মধ্যে দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়াকরণ এবং টিকেট বরাদ্দ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কোপা আমেরিকার ফাইনাল: আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া মহারণের লাইভ দেখার গোপন কৌশল!
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাস দীর্ঘ এবং গৌরবময়। এটি সর্বশেষ ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার পর এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা এবং চাহিদার কারণে ২০২৫ এবং ২০২৯ সালের জন্য এটি পুনরায় চালু করা হয়েছে। পাকিস্তান বর্তমানে চ্যাম্পিয়ন, যারা শেষ সংস্করণে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল।
গ্রুপ A:
– ভারত
– পাকিস্তান
– নিউজিল্যান্ড
– বাংলাদেশ
গ্রুপ B:
– আফগানিস্তান
– অস্ট্রেলিয়া
– ইংল্যান্ড
– দক্ষিণ আফ্রিকা
প্রতিযোগিতার সাময়িক সময়সূচি অনুযায়ী, প্রথম ম্যাচটি ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে করাচিতে নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি হবে ১ মার্চ, ২০২৫ তারিখে লাহোরে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে। সেমিফাইনাল ম্যাচগুলো ৫ এবং ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে যথাক্রমে করাচি এবং রাওয়ালপিন্ডিতে। ফাইনাল ম্যাচটি ৯ মার্চ, ২০২৫ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত হবে।
পাকিস্তানকে IMF-এর চেয়েও বেশি অর্থ সাহায্য দিতে পারত ভারত – রাজনাথ সিংহের চাঞ্চল্যকর মন্তব্য
এই টুর্নামেন্টের জন্য নির্ধারিত তিনটি ভেন্যুর ধারণক্ষমতা নিম্নরূপ:
– করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়াম: ৩৪,২৩৮ জন
– লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়াম: ২৭,০০০ জন
– রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম: ১৫,০০০ জন
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দলগুলো হলো ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া, যারা দুটি করে শিরোপা জিতেছে। ভারত ২০০২ এবং ২০১৩ সালে, আর অস্ট্রেলিয়া ২০০৬ এবং ২০০৯ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। অন্যান্য বিজয়ী দলগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা (১৯৯৮), নিউজিল্যান্ড (২০০০), শ্রীলঙ্কা (২০০২), ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২০০৪) এবং পাকিস্তান (২০১৭)।
এই টুর্নামেন্টে সর্বাধিক রান করেছেন ক্রিস গেইল (৭৯১ রান), আর সর্বাধিক উইকেট নিয়েছেন কাইল মিলস (২৮টি)।
২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুধুমাত্র একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টই নয়, এটি পাকিস্তানের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দীর্ঘ ২৮ বছর পর দেশটি একটি বড় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইভেন্টের আয়োজন করতে যাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে। এটি পাকিস্তানের জন্য তাদের ক্রিকেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং আয়োজন দক্ষতা প্রদর্শনের একটি সুবর্ণ সুযোগ।
তবে, এই আয়োজন নিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ভারতের অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং একটি নিরাপদ ও সফল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা।
যাই হোক, এই টুর্নামেন্ট শুধু পাকিস্তানের জন্যই নয়, সমগ্র ক্রিকেট বিশ্বের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিশ্বের সেরা আটটি দলকে একত্রিত করবে, যা নিঃসন্দেহে ক্রিকেট ভক্তদের জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ অভিজ্ঞতা হবে। বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি হবে সবচেয়ে আকর্ষণীয়, যা দুই দেশের মধ্যে ক্রিকেট কূটনীতির একটি নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলে আশা করা যায়
মন্তব্য করুন