Human metapneumovirus India: ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (ICMR) সোমবার জানিয়েছে যে, হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (HMPV) ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে, যার মধ্যে ভারতও রয়েছে। তবে ICMR জানিয়েছে যে, দেশে এখনও পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জা-লাইক ইলনেস (ILI) বা গুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত রোগের (SARI) ক্ষেত্রে কোনও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি দেখা যায়নি।
ICMR-এর রুটিন সার্ভিল্যান্সের মাধ্যমে কর্ণাটকে দুটি HMPV কেস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে একজন ৩ মাসের শিশু কন্যা এবং অন্যজন ৮ মাসের শিশু পুত্র। উভয় শিশুকেই ব্রঙ্কোনিউমোনিয়ার ইতিহাস সহ বেঙ্গালুরুর ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শিশু কন্যাটিকে চিকিৎসার পর ছাড়া হয়েছে, অন্যদিকে শিশু পুত্রটি সুস্থ হয়ে উঠছে।গুজরাটের আহমেদাবাদেও একটি HMPV কেস শনাক্ত হয়েছে, যা ভারতে তৃতীয় কেস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই ঘটনায় একটি দুই বছর বয়সী শিশু জড়িত, যাকে সর্দি ও কাশির লক্ষণ নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
ভাইরাসের নাম | হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (HMPV) |
আবিষ্কারের বছর | ২০০১ |
পরিবার | নিউমোভিরিডে |
প্রধান লক্ষণ | কাশি, জ্বর, নাক বন্ধ, শ্বাসকষ্ট |
বিস্তার | কাশি, হাঁচি বা ব্যক্তিগত সংস্পর্শের মাধ্যমে |
ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী | শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি |
HMPV একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস যা উপরের শ্বাসনালীর সংক্রমণ ঘটায়। এটি সাধারণত ৩ থেকে ৬ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ করে। HMPV সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়ায়। দূষিত পৃষ্ঠ স্পর্শ করা, কাশি, হাঁচি এবং হাত মেলানোর মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।HMPV প্রতিরোধের জন্য বর্তমানে কোনও টিকা নেই। চিকিৎসা মূলত লক্ষণ উপশমের দিকে লক্ষ্য রাখে। তবে, নিম্নলিখিত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:
ডঃ হর্ষল আর সালভে, এইমস নয়াদিল্লির অতিরিক্ত অধ্যাপক জানিয়েছেন, “HMPV নতুন ভাইরাস নয়। এটি দীর্ঘদিন ধরে ভারতে প্রচলিত ফ্লু ভাইরাসের অংশ। ফলে, ভারতীয় জনসংখ্যার বেশিরভাগই এর বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছে।”কেরালা স্টেট IMA রিসার্চ সেলের চেয়ারম্যান ডঃ রাজীব জয়দেবন বলেছেন, “HMPV সাধারণ সর্দির একটি পরিচিত কারণ। স্ব-সীমিত সর্দির জন্য আমরা সাধারণত কোন ব্যয়বহুল পরীক্ষা করি না। তাই এই ভাইরাস পাওয়া কোনও অস্বাভাবিক বা উদ্বেগজনক বিষয় নয়।”
HMPV সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারত সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে:
দিল্লি সরকার সোমবার রাজধানীর সকল হাসপাতালকে সম্ভাব্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগের বৃদ্ধি মোকাবেলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৌরভ ভারদ্বাজ জারি করা একটি নির্দেশিকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগকে পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করতে এবং সময়োপযোগী আপডেটের জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।কর্ণাটক সরকারও জনগণকে আশ্বস্ত করেছে যে HMPV নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, কারণ এটি ইতিমধ্যেই দেশে বিদ্যমান। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দিনেশ গুণ্ডু রাও বলেছেন, “আমি মনে করি না যে আমাদের প্যানিক বাটন টিপতে হবে, কারণ HMPV নতুন ভাইরাস নয়, এটি ইতিমধ্যেই বিদ্যমান।”
HMPV সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য। তবে, জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সরকার ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। জনগণের সচেতনতা ও সহযোগিতা এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মন্তব্য করুন