India plastic bag ban consumer responses: ভারত সরকার ১ জুলাই ২০২২ থেকে একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে প্লাস্টিক ব্যাগ, স্ট্র, কাটলারি, প্লেট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা পরিবেশ রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে ভারতীয় ক্রেতারা কতটা প্রস্তুত প্লাস্টিক ব্যাগ ছাড়া কেনাকাটা করার জন্য তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম কয়েক মাস বড় শহরগুলোতে কিছুটা সফলতা দেখা গেলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আগের মতোই হয়ে যাচ্ছে।
বাজারে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক আইটেম সহজলভ্য, বিশেষত ছোট ব্যবসায়ীরা এখনও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করছেন। মুম্বাইয়ে প্রথম দুই সপ্তাহে ২২৫ কেজি প্লাস্টিক জব্দ করা হলেও পরবর্তীতে তা কমে গেছে। দিল্লিতে প্রথম ১৫ দিনে ২১ টন নিষিদ্ধ প্লাস্টিক জব্দ করা হয়েছিল।All India Plastic Manufacturers’ Association এর মতে, ভারতের প্লাস্টিক শিল্পে প্রায় ৩০,০০০ ইউনিট রয়েছে যার বার্ষিক টার্নওভার ২.২৫ লক্ষ কোটি টাকা। এই শিল্পে ৪০ লক্ষেরও বেশি লোক কর্মরত। নিষেধাজ্ঞার ফলে এই শিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।ক্রেতাদের জন্য প্লাস্টিক ব্যাগের বিকল্প খুঁজে পাওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগের দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য তা কিনে ব্যবহার করা কঠিন হয়ে পড়ছে। একটি প্লাস্টিক ব্যাগের দাম ১০-১৫ পয়সা হলেও কাগজের ব্যাগের দাম ২০-২৫ পয়সা।
বোতলজলে বিপদ: প্রতি ঢোকে গিলছেন হাজার হাজার প্লাস্টিক কণা!”
এছাড়া পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগের দাম ১ টাকা থেকে শুরু করে কয়েক টাকা পর্যন্ত হতে পারে।তবে পরিবেশের দিক থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ করার অনেক সুফল রয়েছে। প্লাস্টিক দূষণ কমবে, জলাশয় ও নর্দমা বন্ধ হওয়ার সমস্যা কমবে, বন্যপ্রাণীর ক্ষতি রোধ হবে। বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ করলে বিশ্বের তেলের ব্যবহার ৪% কমবে বলে অনুমান করা হয়।তবে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সরকারের পক্ষে সব জায়গায় নজরদারি করা কঠিন, বিশেষত গ্রামাঞ্চলে। অনেক ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করেও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া প্লাস্টিক শিল্পের চাপেও সরকার পড়েছে।
এই দেশগুলোতে Facebook নিষিদ্ধ – জানলে অবাক হবেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। প্রয়োজন সামগ্রিক পদক্ষেপ – সস্তা ও সহজলভ্য বিকল্প, recycling ব্যবস্থার উন্নয়ন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি। একটি circular economy গড়ে তোলার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান খুঁজতে হবে।সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় ক্রেতারা এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয় প্লাস্টিক ব্যাগ ছাড়া কেনাকাটা করার জন্য। অভ্যাস পরিবর্তন, বিকল্পের অভাব, খরচ বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে অনেকেই এখনও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করছেন। তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে। সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর মিলিত প্রচেষ্টায় আশা করা যায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।