India Gate construction details: ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বুকে দাঁড়িয়ে আছে ইন্ডিয়া গেট – একটি ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ দেওয়া ভারতীয় সৈন্যদের স্মরণে নির্মিত হয়েছিল। এই বিশাল স্থাপত্যকর্মটি শুধু একটি পর্যটন আকর্ষণই নয়, বরং এটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়।
ইন্ডিয়া গেটের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯২১ সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে (১৯১৪-১৯১৯) প্রাণ দেওয়া ভারতীয় সৈন্যদের স্মরণে এটি নির্মিত হয়। ১৯২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ডিউক অফ কনট এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।প্রখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিয়েন্স এর নকশা অনুযায়ী এটি নির্মিত হয়। লুটিয়েন্স প্যারিসের আর্ক ডি ট্রায়োম্ফ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এর নকশা করেন।১৯৩১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড আরউইন এটি উদ্বোধন করেন। প্রথমে এটিকে “অল ইন্ডিয়া ওয়ার মেমোরিয়াল আর্চ” নামে অভিহিত করা হতো।
ইন্ডিয়া গেট ৪২ মিটার উচ্চতার একটি বিশাল তোরণ। এটি লাল বারাতপুর পাথরের ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। তোরণের উপরের অংশে “INDIA” শব্দটি খোদাই করা আছে, যার দুই পাশে MCMXIV (১৯১৪) এবং MCMXIX (১৯১৯) লেখা রয়েছে।এর গায়ে ১৩,৫১৬ জন ভারতীয় ও ব্রিটিশ সৈন্যের নাম খোদাই করা আছে, যারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও তৃতীয় আফগান যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছিলেন। মোট ৭০,০০০ ভারতীয় সৈন্যের স্মৃতি বহন করে এই স্মৃতিসৌধ।
৭০,০০০ টাকার মধ্যে সেরা গেমিং ল্যাপটপ: দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আপনার বাজেটে!
১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে শহীদ সৈন্যদের স্মরণে ১৯৭২ সালের ২৬ জানুয়ারি ইন্ডিয়া গেটের নীচে অমর জওয়ান জ্যোতি স্থাপন করা হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এটি উদ্বোধন করেন।এখানে একটি উল্টানো রাইফেল ও হেলমেটের পাশে অবিরাম জ্বলন্ত একটি মশাল রাখা হয়েছে। এটি ভারতের অজ্ঞাত সৈনিকের সমাধি হিসেবে বিবেচিত হয়।
ইন্ডিয়া গেট শুধু একটি স্মৃতিসৌধই নয়, এটি ভারতের জাতীয় ঐক্য ও গৌরবের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়। প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে এখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।এছাড়া এটি দিল্লির অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী এখানে ভিড় করে। বিকেলের দিকে এর চারপাশের সবুজ লন এলাকায় পিকনিক করতে আসে অনেকে।
ইন্ডিয়া গেট শুধু একটি স্থাপত্যকর্মই নয়, এটি ভারতের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বীর সৈনিকদের স্মৃতি বহন করে এই অমর কীর্তি। আগামী প্রজন্মকে দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইন্ডিয়া গেট একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।