India Pakistan nuclear capabilities comparison: ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতায় নতুন মোড় এসেছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI) এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের কাছে এখন পাকিস্তানের চেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতের কাছে ১৭২টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের রয়েছে ১৭০টি।
SIPRI-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত ২০২৩ সালে তার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার সামান্য বৃদ্ধি করেছে। গত বছর ভারতের কাছে ১৬৪টি পরমাণু অস্ত্র ছিল, যা এ বছর বেড়ে ১৭২ হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা ১৭০ তেই স্থির রয়েছে।এই প্রথমবারের মতো ২৫ বছরে ভারতের পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেল। ১৯৯৯ সাল থেকে পাকিস্তানের কাছে ভারতের চেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র ছিল।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে চীন দ্রুত গতিতে তার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার বাড়াচ্ছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে চীনের কাছে ৪১০টি পরমাণু অস্ত্র ছিল, যা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বেড়ে ৫০০ হয়েছে। SIPRI-এর গবেষক হ্যান্স ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, “চীন অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে দ্রুত গতিতে তার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার বাড়াচ্ছে।”
চীনের প্রাচীন কৌশলে গরমে বাড়ি ঠান্ডা রাখুন, বিদ্যুৎ বিল বাঁচান!
ভারত “No First Use” নীতি অনুসরণ করে, যার অর্থ হল ভারত কখনোই প্রথমে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না। তবে SIPRI-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ভারত এখন দীর্ঘ পাল্লার অস্ত্রের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, যা চীনের যে কোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।
ভারতের পরমাণু অস্ত্র তিনটি প্ল্যাটফর্মে বিন্যস্ত:
এই ত্রিশক্তি ভারতকে একটি শক্তিশালী পরমাণু প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করে।
ভারতের কাছে বিভিন্ন ধরনের ব্যালিস্টিক মিসাইল রয়েছে:
এছাড়াও Agni-VI (১০,০০০-১২,০০০ কিমি পাল্লা) মিসাইল বিকাশের পর্যায়ে রয়েছে।
ভারত Comprehensive Nuclear-Test-Ban Treaty (CTBT) এবং Nuclear Non-Proliferation Treaty (NPT) স্বাক্ষর করেনি। ভারতের মতে এই চুক্তিগুলি ত্রুটিপূর্ণ এবং বৈষম্যমূলক।তবে ভারত Biological Weapons Convention এবং Chemical Weapons Convention স্বাক্ষর ও অনুমোদন করেছে। ২০০৯ সালে ভারত স্বেচ্ছায় তার সমস্ত রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করে।
১৯৮৮ সালে ভারত ও পাকিস্তান একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যাতে উভয় দেশ একে অপরের পরমাণু স্থাপনায় আক্রমণ না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে দুই দেশ তাদের পরমাণু স্থাপনার তালিকা বিনিময় করে।
ভারতের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তি ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে। এটি পাকিস্তানকে তার পরমাণু কর্মসূচি আরও জোরদার করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।অন্যদিকে, চীনের দ্রুত পরমাণু শক্তি বৃদ্ধি ভারতকে উদ্বিগ্ন করছে। এর ফলে ভারত তার দীর্ঘ পাল্লার মিসাইল সিস্টেম আরও উন্নত করতে পারে।
(Suzuki Burgman Street 125): মাক্সি-স্কুটার স্টাইলে রাস্তা জয় করতে প্রস্তুত!
SIPRI-এর গবেষক হ্যান্স ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, “প্রায় সব পরমাণু শক্তিধর দেশেই পরমাণু অস্ত্র বাড়ানোর পরিকল্পনা বা উল্লেখযোগ্য চাপ রয়েছে।”ভারতীয় পরমাণু নীতি বিশেষজ্ঞ মনপ্রীত সেঠি মনে করেন, “ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনও কম আস্থা ও বিশ্বাসের।”
ভারতের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে যাওয়া এবং চীনের দ্রুত পরমাণু শক্তি বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি করছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই অঞ্চলে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা। পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে আরও বেশি সহযোগিতা ও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে যাতে পরমাণু প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।