Current Statistics SAMAR-2 Missile test India: ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) তাদের নতুন স্বদেশী বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সমর-২ (SAMAR 2) এর প্রথম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করতে চলেছে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে।
এই নতুন ব্যবস্থাটি প্রায় ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তু আক্রমণ করতে সক্ষম, যা এর পূর্বসূরি সমর-১ এর ৮ কিলোমিটার সীমার তুলনায় অনেক বেশি।আইএএফ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “প্রথম উৎক্ষেপণ পরীক্ষা ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।” সমর-২ ব্যবস্থাটি দুটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে। এটি রাশিয়ান R-27 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে, যেগুলো মূলত বায়ু থেকে বায়ু আক্রমণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল কিন্তু এখন ভূমি থেকে বায়ু আক্রমণের জন্য পুনঃব্যবহার করা হচ্ছে।একজন আইএএফ কর্মকর্তা বলেছেন, “এখানে চ্যালেঞ্জটি হল যে বায়ু থেকে বায়ু ক্ষেপণাস্ত্রগুলো, যেগুলোর শেল্ফ লাইফ শেষ হয়ে গেছে এবং বিমান থেকে উৎক্ষেপণের জন্য নিরাপদ নয়, সেগুলোকে ভূমি থেকে বায়ু আক্রমণের ভূমিকায় ব্যবহার করা হচ্ছে।”
সমর-২ ব্যবস্থাটি যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার এবং ড্রোনের মতো বিভিন্ন ধরনের আকাশীয় হুমকি মোকাবেলা করতে সক্ষম। এর আগে সমর-১ ব্যবস্থাটি ইন্টারন্যাশনাল ডিফেন্স এভিয়েশন এক্সপোজিশনে প্রদর্শিত হয়েছিল, যা তারাং শক্তি ২০২৪ মহড়ার পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই মহড়াটি ভারতের এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বহুজাতিক বিমান যুদ্ধ অনুশীলন, যেখানে ১০টি বিদেশী বিমান বাহিনী অংশগ্রহণ করেছিল এবং আরও ১৮টি দেশ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিল।
অগ্নিবীরদের জন্য মোদি সরকারের বড় পদক্ষেপ, এবার আরো বেশি সুযোগ
সমর-১ এবং সমর-২ উভয় ব্যবস্থাই রাশিয়ান বায়ু থেকে বায়ু ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। সমর-১ R-73E ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত, যেখানে সমর-২ R-27 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করবে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তাদের শেল্ফ লাইফ অতিক্রম করে ফেলেছে এবং বিমান থেকে উৎক্ষেপণের জন্য নিরাপদ নয়, তাই এগুলোকে ভূমি থেকে বায়ু আক্রমণের ভূমিকায় পুনঃব্যবহার করা হচ্ছে।এই উদ্ভাবনী পদ্ধতিটি ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টার একটি উদাহরণ। পুরনো অস্ত্রগুলোকে নতুন ভূমিকায় ব্যবহার করে ভারত তার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে এবং একই সাথে সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করছে।
সমর-২ এর পাশাপাশি, ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) প্রজেক্ট কুশা নামে একটি স্বদেশী দীর্ঘ পাল্লার ভূমি থেকে বায়ু ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার উপরও কাজ করছে। এই ব্যবস্থাটি ৩৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তু আক্রমণ করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে এটি কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।এছাড়াও DRDO ইন্ডিজেনাস ভেরি শর্ট-রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (VSHORADS) তৈরি করেছে।
এটি একটি ম্যান-পোর্টেবল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম যা কম উচ্চতায় স্বল্প দূরত্বের আকাশীয় হুমকি মোকাবেলা করতে পারে।বর্তমানে ভারতের বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে S-400 বায়ু প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং ইজরায়েলের সহযোগিতায় তৈরি মধ্যম পাল্লার ভূমি থেকে বায়ু ক্ষেপণাস্ত্র (MRSAM) ব্যবস্থা। এছাড়াও আইএএফ ইজরায়েলি SpyDer, সোভিয়েত যুগের Pechora, OSA-AK, Tunguska, Strela, এবং Shilka, Zu-23-2B বিমান বিরোধী কামান, আপগ্রেড করা L-70 বিমান বিরোধী কামান এবং Igla MANPADS (ম্যান-পোর্টেবল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম) ব্যবহার করে।
ঋষি সুনকের পতন: ভারত-ইউনাইটেড কিংডম সম্পর্কের নতুন অধ্যায়?
সমর-২ এর সফল পরীক্ষা ভারতের বায়ু প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে। এটি দেশের সীমান্ত এলাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে বিমান ও ড্রোন আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। এছাড়া এই ধরনের স্বদেশীয় প্রযুক্তি উন্নয়ন ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে আত্মনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সামগ্রিকভাবে, সমর-২ এর আসন্ন পরীক্ষা ভারতের বায়ু প্রতিরক্ষা অবকাঠামো উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং কৌশলগত সামরিক পরিকল্পনা উভয়কেই তুলে ধরে। আগামী বছরগুলোতে এই ধরনের আরও উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে ভারত তার সামরিক সক্ষমতা আরও বাড়াতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে।