India tea production slump 2024: ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসে ভারতের চা উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩.৪% কমে গেছে। টি বোর্ডের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এই সময়কালে মোট চা উৎপাদন হয়েছে ৬৪৬.৮৪ মিলিয়ন কেজি, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৭৪৭.৫৩ মিলিয়ন কেজি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই উৎপাদন হ্রাসের পিছনে প্রধান কারণ হল অস্বাভাবিক আবহাওয়া এবং অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত।ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিত রাহা জানিয়েছেন, “জুলাই মাসে অসম ও পশ্চিমবঙ্গে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কারণে উৎপাদন মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। এর ফলে উত্তর ভারতের চা উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে গেছে।”উত্তর ভারতের প্রধান চা উৎপাদনকারী রাজ্য অসমে জুলাই মাসে উৎপাদন কমেছে ১৫.৫৩%, যা দাঁড়িয়েছে ৭৮.৩০ মিলিয়ন কেজিতে।
Drinking Tea and Coffee: স্বাদের আনন্দ নাকি স্বাস্থ্যের ঝুঁকি?
গত বছর একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ৯২.৭০ মিলিয়ন কেজি। পশ্চিমবঙ্গেও উৎপাদন কমেছে ২১%, যা দাঁড়িয়েছে ৪১.৫৯ মিলিয়ন কেজিতে।দক্ষিণ ভারতে অবশ্য উৎপাদন বেড়েছে ৭% এবং দাঁড়িয়েছে ২২.৬৮ মিলিয়ন কেজিতে। তামিলনাড়ুতে উৎপাদন বেড়েছে ১৪.৬%, কিন্তু কেরালা ও কর্ণাটকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উৎপাদন কমেছে।চা উৎপাদনের এই হ্রাসের সাথে সাথে দামও কমছে, যা শিল্পের জন্য দ্বিগুণ সমস্যা সৃষ্টি করছে।
জানুয়ারি থেকে মার্চ ২০২৪-এ গড় নিলাম মূল্য ছিল ১২৮.১২ টাকা প্রতি কেজি, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৪৪.২১ টাকা।চা শিল্পের এই সংকট মোকাবেলায় ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আবেদন জানিয়েছে। বিশেষ করে দার্জিলিং চা শিল্পের জন্য এই সহায়তা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে।নিচের টেবিলে ২০২৪ সালের মার্চ মাসের চা উৎপাদনের অনুমান দেখানো হলো:
অঞ্চল | বড় উৎপাদক (মিলিয়ন কেজি) | ছোট উৎপাদক (মিলিয়ন কেজি) | মোট (মিলিয়ন কেজি) |
---|---|---|---|
অসম ভ্যালি | ১৯.৭৭ | ১৪.৭৩ | ৩৪.৫০ |
কাছাড় | ১.৩৩ | ০.৭৭ | ২.১০ |
দুয়ার্স | ৫.৮৮ | ৪.৭২ | ১০.৬০ |
তেরাই | ৩.৭৮ | ৪.৩২ | ৮.১০ |
দার্জিলিং | ০.২৫ | ০.০৫ | ০.৩০ |
উত্তর ভারত | ৩১.০১ | ২৪.৫৯ | ৫৫.৬০ |
তামিল নাড়ু | ৩.৭৮ | ১.১২ | ৪.৯০ |
কেরালা | ১.৩৩ | ০.২৭ | ১.৬০ |
কর্ণাটক | ০.২৫ | ০.০৭ | ০.৩২ |
দক্ষিণ ভারত | ৫.৩৬ | ১.৪৬ | ৬.৮২ |
সর্বমোট | ৩৬.৩৭ | ২৬.০৫ | ৬২.৪২ |
কোন রেশন কার্ডে কত খাদ্যশস্য পাবেন গ্রাহকরা? দেখে নিন আপডেটেট তথ্য
এই উৎপাদন হ্রাসের প্রভাব শুধু চা শিল্পেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর ফলে দেশের রপ্তানি আয় কমতে পারে এবং লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের জীবিকা প্রভাবিত হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী মাসগুলোতে যদি আবহাওয়া অনুকূল থাকে তাহলে উৎপাদন কিছুটা পুনরুদ্ধার হতে পারে।চা শিল্পের এই সংকট মোকাবেলায় সরকার ও শিল্প সংস্থাগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং চা চাষের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে এই শিল্পকে টেকসই করে তোলা প্রয়োজন।