চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ভারত-বাংলাদেশ প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপ ভেঙে পড়েছে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪৯ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ভারত প্রথম ইনিংসে ৩৭৬ রান করেছিল। ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে ভারতের লিড দাঁড়িয়েছে ২৯৪ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন মুশফিকুর রহিম (৪৫)। তাছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজ ২৯ রান করেছেন। কিন্তু অন্য কোনো ব্যাটসম্যান টিকতে পারেননি ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে। ভারতের হয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৪ উইকেট নিয়েছেন। জসপ্রীত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ ২টি করে উইকেট পেয়েছেন।
বাংলাদেশের এই খারাপ প্রদর্শন অনেকটাই অপ্রত্যাশিত ছিল। কারণ তারা সম্প্রতি পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল টেস্ট সিরিজে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে তাদের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, “পাকিস্তান আর ভারত এক নয়। ভারতের বিপক্ষে আমাদের আরও ভালো খেলতে হবে।”
ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছেন, “আমাদের বোলাররা চমৎকার বোলিং করেছে। বাংলাদেশকে চাপে রাখতে পেরেছি। কিন্তু এখনও অনেক ক্রিকেট বাকি আছে।”
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড খুবই খারাপ। এর আগে ১৩টি টেস্টে ১১টিতে হেরেছে বাংলাদেশ, ২টি ড্র হয়েছে। কোনো জয় নেই।
এই ম্যাচের ফলাফল বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি ২০২৩-২৫ আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। হারলে তাদের পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান আরও খারাপ হবে।
বাংলাদেশের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ আতহার আলী খান বলেছেন, “আমাদের ব্যাটসম্যানদের মানসিকতা বদলাতে হবে। ভারতের বিপক্ষে খেলতে গেলে আত্মবিশ্বাস লাগে। সেটা এখনও তৈরি হয়নি।”
অন্যদিকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সদস্য সৌরভ গাঙ্গুলী বলেছেন, “বাংলাদেশ ভালো টিম। কিন্তু ভারতে টেস্ট জেতা তাদের জন্য কঠিন। আমাদের বোলাররা খুব ভালো ফর্মে আছে।”
তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ হবে ভারতকে দ্বিতীয় ইনিংসে আটকে রাখা। নাহলে ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যাবে। অন্যদিকে ভারত চাইবে আরও রান করে ম্যাচ জিতে নেওয়া।
এই ম্যাচের ফলাফল দুই দেশের ক্রিকেটের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করে তুলবে। বাংলাদেশের জন্য এটা একটা বড় পরীক্ষা। তাদের দেখাতে হবে যে পাকিস্তানকে হারানোর পর তারা সত্যিই উন্নতি করেছে। ভারতের জন্য এটা হোম সিরিজের শুরু। তারা চাইবে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে।
ম্যাচের বাকি তিন দিন আকর্ষণীয় হতে চলেছে। বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিজেদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। ভারত অবশ্য চাইবে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দ্রুত ম্যাচ জিতে নিতে। ক্রিকেট প্রেমীরা উৎসুক থাকবেন দেখার জন্য বাংলাদেশ কতটা ফাইট ব্যাক করতে পারে।