IndiGo aircraft manufacturing plans India: ভারতের সবচেয়ে বড় এয়ারলাইন ইন্ডিগো দেশেই বিমান তৈরির পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার এলবার্স। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।এলবার্স বলেছেন, “আমরা ভারতকে একটি বৈশ্বিক বিমান হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এর জন্য শুধু বিমান চালানো নয়, দেশেই বিমান তৈরির দিকেও আমাদের নজর রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ইন্ডিগো ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে বিভিন্ন সম্ভাব্যতা যাচাই করছে।বর্তমানে ইন্ডিগোর বহরে রয়েছে প্রায় ৩৭০টি বিমান, যার সবগুলোই সংকীর্ণ-দেহী এয়ারবাস এ৩২০ পরিবারের। সম্প্রতি সংস্থাটি ৩০টি এয়ারবাস এ৩৫০-৯০০ প্রশস্ত-দেহী বিমান কেনার চুক্তি করেছে। এছাড়া আরও ৭০টি এ৩৫০ পরিবারের বিমান কেনার অপশনও রেখেছে।এলবার্স মনে করেন, ভারতের বিমান বাজারে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে। তখন দেশের বিমান চাহিদাও বাড়বে। সেই চাহিদা মেটাতে আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
Taranga Shakti: বাংলাদেশ সরে দাঁড়াল, শ্রীলঙ্কা যোগ দিল ‘তরঙ্গ শক্তি’ বিমান মহড়ায়!
Taranga Shakti: বাংলাদেশ সরে দাঁড়াল, শ্রীলঙ্কা যোগ দিল ‘তরঙ্গ শক্তি’ বিমান মহড়ায়!
ইন্ডিগোর পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে তারা একটি বৈশ্বিক এয়ারলাইন হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এর জন্য তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন গন্তব্য যোগ করা, বিজনেস ক্লাস চালু করা এবং একটি নতুন লয়্যালটি প্রোগ্রাম শুরু করা।এলবার্স জানান, চলতি বছরের নভেম্বর থেকে ইন্ডিগো দিল্লি-মুম্বাই রুটে বিজনেস ক্লাস চালু করবে। পরবর্তীতে অন্যান্য ব্যস্ত রুটেও এই সেবা সম্প্রসারিত করা হবে। এছাড়া অক্টোবর থেকে তারা একটি নতুন লয়্যালটি প্রোগ্রাম চালু করছে।বর্তমানে ইন্ডিগোর আন্তর্জাতিক রুটে ক্ষমতার ২৭% নিয়োজিত রয়েছে। সংস্থাটি এই অনুপাত আগামী দিনে ৩০% এ উন্নীত করতে চায়। এজন্য তারা নতুন আন্তর্জাতিক গন্তব্য যোগ করছে এবং বিদ্যমান রুটগুলোতে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়াচ্ছে।
ইন্ডিগোর লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের বহর দ্বিগুণ করে ৬০০টি বিমানে উন্নীত করা। এজন্য তারা ইতিমধ্যেই প্রায় ১০০০টি বিমানের অর্ডার দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫০০টি এয়ারবাস এ৩২০ পরিবারের বিমান, যা একক অর্ডার হিসেবে বাণিজ্যিক বিমান ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্ডার।এলবার্স মনে করেন, ভারতে বিমান তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তা দেশের বিমান শিল্পের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে। তিনি বলেন, “এটি শুধু ইন্ডিগোর জন্য নয়, সমগ্র ভারতীয় বিমান শিল্পের জন্য একটি বড় সুযোগ। এর মাধ্যমে আমরা বিশ্ব বাজারে ভারতের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারব।”
ভারতের নতুন বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সমর-২ এর পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরে
ভারতের নতুন বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সমর-২ এর পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরে
তবে এলবার্স স্বীকার করেন, বিমান তৈরির মতো জটিল প্রযুক্তিগত কাজ শুরু করতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তিনি বলেন, “এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প। আমরা ধীরে ধীরে এগোচ্ছি। প্রথমে আমরা কিছু অংশ তৈরি করে শুরু করতে পারি। পরে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ বিমান তৈরির দিকে এগোব।”ইন্ডিগোর এই পরিকল্পনা ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সরকার চায় দেশে বিমান তৈরির শিল্প গড়ে তুলতে। এর জন্য তারা বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে এবং নীতিগত সহায়তা করছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইন্ডিগোর এই পদক্ষেপ ভারতীয় বিমান শিল্পের জন্য একটি বড় সুযোগ। এর মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়বে এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে।তবে তারা সতর্ক করে দেন যে, বিমান তৈরি একটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ও পুঁজি-নির্ভর শিল্প। এখানে সফল হতে হলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, প্রচুর বিনিয়োগ এবং সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।ইন্ডিগোর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তা শুধু সংস্থাটির জন্য নয়, সমগ্র ভারতীয় বিমান শিল্পের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। এর মাধ্যমে ভারত বিশ্ব বিমান বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিতে পারে।