ইরানে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সরকার সব সরকারি ও বেসরকারি অফিস বন্ধ ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তটি জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার জন্য নেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছানোর কারণে ইরানজুড়ে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ইরানের রাজধানী তেহরানে তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছাড়িয়ে গেছে। এই তাপপ্রবাহের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বাসিন্দারা। হাসপাতালগুলোতে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ২০০ জনেরও বেশি চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
এসির বিল দেখে চক্ষু চড়ক গাছ! এই ১০টি ট্রিক জানলে বিদ্যুৎ বিল হবে অর্ধেক
রাষ্ট্র-চালিত ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি (আইআরএনএ) জানিয়েছে, জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে সারা দেশে ব্যাংক, অফিস ও সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকবে।
ন্যাশনাল মেটরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের একজন কর্মকর্তা সাদেগ জিয়ান বলেন, শনিবার ইরানের ১০টি প্রদেশে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে। দক্ষিণ-পূর্ব শহর ডেলগানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলোতেও উচ্চতাপমাত্রা বিরাজ করছে।বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য কঠিন পরিস্থিতির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এ কারণে শনিবার (২৭ জুলাই) থেকে কর্মঘণ্টা কমিয়ে সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
High-Paying Career: এই চাকরিগুলো পেলে আপনিও হতে পারেন দেশের
ইরানের তাপমাত্রা বৈশ্বিক গড় বৃদ্ধির চেয়ে দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। গত ৫০ বছরে ইরানের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বেড়েছে। ইরানের আবহাওয়ার বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, সোমবার তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে, তবে বাতাস শীতল অনুভূত হবে না।
প্রদেশ | সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (ডিগ্রি সেলসিয়াস) |
---|---|
তেহরান | ৪২ |
ডেলগান | ৪৯.৭ |
ইসফাহান | ৪১ |
ইরানের কেন্দ্রীয় শহর ইসফাহানের এক বাসিন্দা বলেন, “এটা এতটাই গরম যে আমরা বেশিরভাগ সময় ঘরেই থাকছি। প্রতি বছর এই সময়ে গরম থাকে, কিন্তু এই বছরটা একটু বেশি গরম।”
ইরানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বেশিরভাগ অংশ প্রাকৃতিক গ্যাসের মাধ্যমে হয়। বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে সস্তা ফি, অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার এবং গ্রিডের ক্ষতি। ইরান যথেষ্ট বিনিয়োগ করতে পারেনি বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে, যার ফলে বেসরকারি খাতের জন্য আকর্ষণীয় হয়ে উঠেনি।
ইরানের বর্তমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সরকারী পদক্ষেপগুলো জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।এই তাপপ্রবাহের কারণে ইরানের জনগণকে আরও সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। তাপপ্রবাহের প্রভাব কমাতে এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।