বাংলার মাটি থেকে উঠে আসা এক প্রতিভাবান বিচারপতি, জয়মাল্য বাগচী, এবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের শীর্ষে পৌঁছতে চলেছেন। কলকাতা হাইকোর্টের এই বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে উন্নীত করার সুপারিশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম। শুধু তাই নয়, আগামী ২০৩১ সালে তিনি ভারতের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন বলে জানা গেছে। এই খবরে বাঙালি সমাজে আনন্দের জোয়ার বইছে।
গত ৬ মার্চ, ২০২৫-এ সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। জয়মাল্য বাগচী বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি হিসেবে কর্মরত। তাঁকে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যা একটি বিরল ঘটনা। সাধারণত অন্য কোনো হাইকোর্টে দায়িত্ব পালন না করে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে উন্নীত হওয়ার নজির খুব কমই দেখা যায়। কলেজিয়াম জানিয়েছে, ২০৩১ সালের ১৩ জুলাই তিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হতে পারেন। এই ঘোষণার পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে।
কে এই বিচারপতি সঞ্জীব খান্না? যিনি ভারতের ৫১তম প্রধান বিচারপতি হতে চলেছেন
জয়মাল্য বাগচীর আইনি জীবনের যাত্রা শুরু হয়েছিল একজন তরুণ আইনজীবী হিসেবে। তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। ২০০৫ সালে তিনি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বই “দ্বিখণ্ডিত” নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলায় সওয়াল করেছিলেন, যা তাঁর কেরিয়ারে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। তসলিমা নিজেও সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে সেই দিনের কথা স্মরণ করে জয়মাল্যর প্রশংসা করেছেন। ২০১৫ সালে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন এবং তাঁর ন্যায়বিচারের প্রতি নিষ্ঠা ও দক্ষতার জন্য পরিচিতি লাভ করেন।
বিষয়টির গভীরতা আরও বাড়ে যখন দেখা যায়, জয়মাল্য বাগচী ভারতের প্রধান বিচারপতি হলে তিনি হবেন বাংলা থেকে উঠে আসা দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হবেন। এর আগে বিচারপতি বিজন কুমার মুখোপাধ্যায় ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জয়মাল্যর এই অর্জন বাঙালি সমাজের জন্য একটি গর্বের বিষয়। তাঁর জন্ম ১৯৬৬ সালে, এবং তিনি ২০৩৩ সালে অবসর নেবেন। তার আগে তাঁর কাছে থাকবে প্রায় দুই বছর প্রধান বিচারপতি হিসেবে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ।
সহজ কথায় বলতে গেলে, জয়মাল্য বাগচীর এই সাফল্য বাঙালির প্রতিভা ও পরিশ্রমের এক জ্বলন্ত প্রমাণ। তাঁর হাতে দেশের বিচার ব্যবস্থার দায়িত্ব আসলে তা ন্যায় ও সততার পথে আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ঘটনা শুধু বাংলার জন্য নয়, গোটা ভারতের জন্যও একটি গৌরবময় মুহূর্ত।
মন্তব্য করুন