পুজোর আগে কলকাতা মেট্রোর সব রুটে QR টিকিট সুবিধা, মিলবে বিশেষ ছাড়

Kolkata Metro QR ticket discount: কলকাতা মেট্রো যাত্রীদের জন্য পুজো উৎসবের আগে এক বিশেষ উপহার নিয়ে এসেছে। মঙ্গলবার থেকে কলকাতা মেট্রোর সমস্ত রুটেই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে QR টিকিট কেনার সুবিধা…

Avatar

 

Kolkata Metro QR ticket discount: কলকাতা মেট্রো যাত্রীদের জন্য পুজো উৎসবের আগে এক বিশেষ উপহার নিয়ে এসেছে। মঙ্গলবার থেকে কলকাতা মেট্রোর সমস্ত রুটেই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে QR টিকিট কেনার সুবিধা চালু হয়েছে। ‘আমার কলকাতা মেট্রো’ অ্যাপ ব্যবহার করে যাত্রীরা এখন সব লাইনে টিকিট কাটতে পারবেন এবং প্রতিটি টিকিটে ৫% ছাড় পাবেন। এর পাশাপাশি কাগজের QR টিকিট কাউন্টারেও পাওয়া যাবে।

মেট্রো কর্তৃপক্ষের মতে, আগে শুধুমাত্র গ্রিন লাইন (হাওড়া ময়দান-সল্ট লেক সেক্টর ৫), ব্লু লাইন (দক্ষিণেশ্বর-কবি সুভাষ) এবং অরেঞ্জ লাইনে এই সুবিধা ছিল। এখন পার্পেল লাইন (যোকা-মজেরহাট) এবং ইয়েলো লাইন (নোয়াপাড়া-জয়হিন্দ বিমানবন্দর) সহ সমস্ত লাইনেই এই ডিজিটাল টিকিটিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

নতুন এই ব্যবস্থায় যাত্রীরা উল্লেখযোগ্য সাশ্রয় করতে পারবেন। কাউন্টার থেকে টিকিট কাটলে হাওড়া স্টেশন থেকে জয়হিন্দ বিমানবন্দরের ভাড়া ৫০ টাকা হলেও অ্যাপের মাধ্যমে কাটলে তা হবে ৪৭.৫০ টাকা। সর্বোচ্চ ৭০ টাকার টিকিট অ্যাপে ৬৬.৫০ টাকায় এবং সবচেয়ে কম ৫ টাকার টিকিটও অ্যাপে ৪.৭৫ টাকায় পাওয়া যাবে।

Whatsapp মেট্রো টিকিট: যাত্রীদের জন্য নতুন যুগের শুরু, জেনে নিন

প্রথম দিনেই এই নতুন পরিষেবা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সোমবার ২৩,৪৮২ জন যাত্রী মোবাইল QR টিকিট কিনেছেন, যা আগের সোমবারের ১১,৭৮৭ জনের প্রায় দ্বিগুণ। মেট্রো কর্তৃপক্ষের মতে, যাত্রীরা বুঝতে পেরেছেন যে অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কিনলে তারা সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় করতে পারেন এবং ভিড় এড়াতে পারেন।

মেট্রো রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয় কুমার রেড্ডি জানিয়েছেন যে স্টেশন থেকে টিকিট কাটলে কাগজ ও প্রিন্টের খরচ থাকে, কিন্তু অনলাইনে সেই খরচ নেই বলেই ৫% ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন যে টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় কমানোর উদ্দেশ্যেই এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

QR টিকিটিং ব্যবস্থায় কলকাতা মেট্রো দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। ২০২২ সাল থেকে পূর্ব-পশ্চিম মেট্রোয় QR টিকিট ১২ ঘণ্টা আগে বুক করার সুবিধা চালু হয়েছিল। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে মোবাইল ভিত্তিক একীভূত QR কোড টিকিটিং সিস্টেম ব্লু লাইনে চালু হয়েছিল। এই টিকিটের ১২ ঘণ্টার বৈধতা থাকে, যা যাত্রীদের আগে থেকেই যাত্রার পরিকল্পনা করতে সাহায্য করে।

সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতা মেট্রো নতুন তিনটি লাইনের উদ্বোধন করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২২ আগস্ট শিয়ালদহ-এসপ্ল্যানেড (গ্রিন লাইন), নোয়াপাড়া-জয়হিন্দ বিমানবন্দর (ইয়েলো লাইন) এবং রুবি-বেলেঘাটা (অরেঞ্জ লাইন) সেকশনের উদ্বোধন করেছেন। এর ফলে কলকাতা প্রথমবারের মতো বিমানবন্দরের সাথে সরাসরি মেট্রো সংযোগ পেয়েছে এবং গঙ্গার নিচ দিয়ে যাওয়া পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো সম্পূর্ণ চালু হয়েছে।

পুজোর সময় মেট্রোতে যাত্রীসংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। এ বছর ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে দুর্গাপুজো শুরু হবে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ স্টেশনগুলিতে ঘন ঘন ঘোষণা করছে যাত্রীদের অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য। পাশাপাশি বিভিন্ন স্টেশনে অতিরিক্ত অটোমেটিক ফেয়ার কালেকশন গেট, স্মার্ট কার্ড রিচার্জ মেশিন এবং ব্যাগেজ স্ক্যানার স্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

QR কোডে পেমেন্ট: সুবিধা ও সতর্কতা – নিরাপদ লেনদেনের ৭টি টিপস

ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের প্রতি যাত্রীদের আগ্রহ ক্রমাগত বাড়ছে। গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত মেট্রোর মোট আয়ের ২৫.৫১% এসেছে ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে। UPI ভিত্তিক টিকিটিং সিস্টেম এখন ব্লু, গ্রিন, অরেঞ্জ এবং পার্পেল লাইনের সব স্টেশনে চালু হয়েছে।

সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেমস (CRIS) এর সহযোগিতায় উন্নত করা ‘আমার কলকাতা মেট্রো’ অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপ স্টোর উভয় প্ল্যাটফর্মেই পাওয়া যায়। অ্যাপে QR টিকিট বুকিং ছাড়াও স্মার্ট কার্ড রিচার্জ এবং রিয়েল-টাইম মেট্রো রুট ও সময়সূচীর তথ্য পাওয়া যায়।

কাগজের QR টিকিট নিয়ে যাত্রীদের মাঝে মাঝে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। পকেটে ভাঁজ হয়ে গেলে কিউআর কোড পড়তে সমস্যা হয় এবং গেট খুলতে দেরি হয়। এই সমস্যার সমাধানে মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের টিকিট ভাঁজ না করার জন্য প্রচার চালানোর পরিকল্পনা করছে।মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ভবিষ্যতে মেট্রো রেল ও ইস্টার্ন রেলে যাতায়াতের জন্য নতুন স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা আসতে পারে। এর মাধ্যমে যাত্রীরা আরও সুবিধাজনকভাবে বিভিন্ন পরিবহন মাধ্যম ব্যবহার করতে পারবেন।

About Author
Avatar

আমাদের স্টাফ রিপোর্টারগণ সর্বদা নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে আপনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে পারেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতিশ্রুতি আমাদের ওয়েবসাইটকে একটি বিশ্বস্ত তথ্যের উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।তারা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্টিংয়ে বিশ্বাসী, দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন তৈরিতে সক্ষম