কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা যে আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন, তার স্ট্যাটাস এখন খুব সহজেই অনলাইনে চেক করা যায়। এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন করা যায়।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পটি ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন। এর মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। প্রথমে প্রতি কৃষককে বছরে ৫,০০০ টাকা দেওয়া হত, যা ২০২১ সালে বাড়িয়ে ১০,০০০ টাকা করা হয়েছে। এই অর্থ সরাসরি কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দুটি কিস্তিতে পাঠানো হয়।
স্ট্যাটাস চেক করার জন্য কৃষকদের প্রথমে https://krishakbandhu.net ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর “নথিভুক্ত কৃষকের তথ্য” অপশনে ক্লিক করতে হবে। এখানে কৃষকরা তাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, মোবাইল নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, স্বীকৃতি নম্বর বা কৃষক বন্ধু আইডি দিয়ে স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।
রাশিচক্রের বন্ধু-শত্রু: কোন রাশি কার সঙ্গে মানায়, কার সঙ্গে মানায় না?
যেকোনো একটি আইডি বেছে নিয়ে সংশ্লিষ্ট নম্বরটি দিতে হবে। তারপর ক্যাপচা কোড পূরণ করে সার্চ বাটনে ক্লিক করলেই স্ট্যাটাস দেখা যাবে। এতে কৃষকরা জানতে পারবেন তাদের আবেদন গৃহীত হয়েছে কিনা, টাকা পাঠানো হয়েছে কিনা ইত্যাদি।
যদি কোনো কৃষক এখনও এই প্রকল্পে নথিভুক্ত না হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। এর জন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফর্মে ভোটার আইডি নম্বর দিয়ে খুঁজতে হবে। তারপর মোবাইল নম্বর দিয়ে OTP ভেরিফিকেশন করতে হবে।
এরপর একটি আবেদন পাতা খুলবে যেখানে কৃষকের বিস্তারিত তথ্য, ব্যাংকের তথ্য, ঠিকানা, চাষযোগ্য জমির বিবরণ ইত্যাদি দিতে হবে। সব তথ্য পূরণ করে “Create Farmer” অপশনে ক্লিক করলেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
এই প্রকল্পে ১ একর বা তার বেশি চাষযোগ্য জমি থাকলে বছরে ১০,০০০ টাকা পাওয়া যায়। ১ একরের কম জমি থাকলে ৪,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকার মধ্যে অনুপাতিক হারে অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়। এছাড়া ১৮-৬০ বছর বয়সী কোনো কৃষকের মৃত্যু হলে তার পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এককালীন অনুদান দেওয়া হয়।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কৃষকদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। কৃষি উপকরণের বর্ধিত মূল্যের কারণে কৃষকরা যাতে অসুবিধায় না পড়েন, সেজন্য এই সহায়তা দেওয়া হয়। এর ফলে কৃষকরা চাষের সময় প্রয়োজনীয় সার, বীজ ইত্যাদি কিনতে পারেন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার ৩,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। গত বছর প্রায় ৭০ লক্ষ কৃষক এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। চলতি বছর আরও বেশি কৃষক যাতে এর আওতায় আসেন, সেজন্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সাথে যুক্ত কৃষকরা সরকারের অন্যান্য প্রকল্পেও অগ্রাধিকার পান। যেমন, খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের ধান সংগ্রহ প্রকল্পে এই কৃষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে আরও বেশি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা এই কৃষকদের দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
যদি কোনো কৃষক অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করতে অসুবিধা বোধ করেন, তাহলে তিনি তার এলাকার কৃষি দপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন। সেখানে কর্মীরা তাকে স্ট্যাটাস চেক করতে সাহায্য করবেন। এছাড়া কৃষক বন্ধু হেল্পলাইন নম্বরেও ফোন করে জানতে পারেন।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক করা এখন খুবই সহজ হয়ে গেছে। অনলাইনে মাত্র কয়েক মিনিটে কৃষকরা তাদের আবেদনের অবস্থা জানতে পারছেন। এটি কৃষকদের সময় ও অর্থ বাঁচাতে সাহায্য করছে। পাশাপাশি সরকারও দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারছে।