Laxmi Bhandar Yojana Update : পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনপ্রিয় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে এবার বড় পরিবর্তন আসছে। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের মহিলাদের বার্ষিক ১৪,৪০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এর ফলে উপকৃত হবেন প্রায় ২ কোটি মহিলা।
২০২১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে প্রথমে সাধারণ শ্রেণির মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা এবং তপশিলি জাতি ও উপজাতির মহিলাদের ১০০০ টাকা করে দেওয়া হত। কিন্তু ২০২৪-২৫ সালের রাজ্য বাজেটে এই অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে যথাক্রমে ১০০০ টাকা ও ১২০০ টাকা করা হয়েছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের নতুন সুবিধা
২০২৪-২৫ সালের রাজ্য বাজেটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তা নিম্নরূপ:
– সাধারণ শ্রেণির মহিলারা এখন থেকে মাসে ১০০০ টাকা করে পাবেন, যা আগে ছিল ৫০০ টাকা
– তপশিলি জাতি ও উপজাতির মহিলারা পাবেন মাসে ১২০০ টাকা, যা আগে ছিল ১০০০ টাকা
– এর ফলে বছরে সাধারণ শ্রেণির মহিলারা পাবেন ১২,০০০ টাকা
– তপশিলি জাতি ও উপজাতির মহিলারা পাবেন বছরে ১৪,৪০০ টাকা
এই বর্ধিত অর্থ সহায়তা রাজ্যের প্রায় ২ কোটি মহিলাকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার: নতুন নিয়মে টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে আবার!
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের উদ্দেশ্য
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল:
– মহিলাদের আর্থিক স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়ন
– পরিবারের মাসিক খরচের একটি অংশ মেটানো
– মহিলাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করা
– গ্রামীণ ও শহুরে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা
এই প্রকল্পের মাধ্যমে একটি পরিবারের গড় মাসিক ব্যয়ের ১০-২০% পর্যন্ত কভার করা সম্ভব হবে বলে সরকার আশা করছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদনের যোগ্যতা
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত যোগ্যতা থাকতে হবে:
– আবেদনকারী অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে
– শুধুমাত্র মহিলারাই এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন
– আবেদনকারীর বয়স ২৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে
– আবেদনকারীর পরিবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে নথিভুক্ত হতে হবে
– পরিবারের কোনও সদস্য আয়কর দাতা বা সরকারি কর্মচারী হতে পারবেন না
– সাধারণ শ্রেণির ক্ষেত্রে পরিবারের ২ হেক্টরের বেশি জমি থাকা যাবে না
লক্ষীর ভান্ডার মোবাইল নাম্বার দিয়ে চেক করবেন কিভাবে?[ জরুরি তথ্য ও টিপস]
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত কাগজপত্র প্রয়োজন:
– আধার কার্ড
– বাসস্থান প্রমাণপত্র
– রেশন কার্ড
– জাতি প্রমাণপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
– ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ
– পাসপোর্ট সাইজের ছবি
– মোবাইল নম্বর
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে অনলাইনে আবেদনের পদ্ধতি
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে অনলাইনে আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করুন:
১. প্রথমে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান
২. হোমপেজে আপনার নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর এবং ক্যাপচা কোড লিখুন
৩. “Generate OTP” বাটনে ক্লিক করুন
৪. আপনার মোবাইলে প্রাপ্ত OTP টি প্রবেশ করান
৫. “Login” বাটনে ক্লিক করুন
৬. “Apply Online” লিঙ্কে ক্লিক করুন
৭. আবেদন ফর্মে সমস্ত তথ্য যেমন নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্মতারিখ ইত্যাদি পূরণ করুন
৮. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করুন
৯. সবশেষে “Submit” বাটনে ক্লিক করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আবেদন স্ট্যাটাস চেক করার পদ্ধতি
আপনার আবেদনের স্ট্যাটাস জানতে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করুন:
১. লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান
২. হোমপেজে “Track Application Status” অপশনে ক্লিক করুন
৩. আপনার Application ID/মোবাইল নম্বর/স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নম্বর/আধার নম্বর দিন
৪. ক্যাপচা কোড লিখুন এবং “Search” বাটনে ক্লিক করুন
৫. আপনার আবেদনের বর্তমান অবস্থা স্ক্রিনে দেখা যাবে
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প থেকে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি পাওয়া যাবে:
– রাজ্যের প্রায় ২ কোটি মহিলা এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন
– মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি পাবে
– পরিবারের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে সহায়ক হবে
– সুবিধাভোগীরা প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অর্থ পাবেন
– সকল জাতির মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গের মহিলাদের আর্থিক স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ২০২৪-২৫ সালের বাজেটে এই প্রকল্পের আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করে সরকার মহিলাদের প্রতি তার অঙ্গীকার আরও জোরদার করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রায় ২ কোটি মহিলা উপকৃত হবেন, যা তাদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন