মেসির স্বপ্নের বাড়ি: মিয়ামির ৬০০ কোটি টাকার পেন্টহাউসে রয়েছে যা কিছু

Ani Roy 5 Min Read

 Lionel Messi Miami penthouse: বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি তার নতুন আবাসস্থল হিসেবে বেছে নিয়েছেন আমেরিকার মিয়ামি শহরকে। ২০২০ সালে তিনি মিয়ামির রেগালিয়া টাওয়ারের নবম তলায় একটি বিলাসবহুল পেন্টহাউস কিনেছেন ৭.৩ মিলিয়ন ডলারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০ কোটি টাকার সমান। এই অভূতপূর্ব সম্পত্তিটি মিয়ামি বিচ থেকে মাত্র ১০ মাইল দূরে অবস্থিত এবং এতে রয়েছে চারটি শোবার ঘর, চারটি বাথরুম এবং ২,১০০ বর্গফুটের একটি বিশাল টেরেস যেখান থেকে মিয়ামির স্কাইলাইন ও সমুদ্র সৈকতের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

আর্জেন্টাইন এই ফুটবল কিংবদন্তির এই পেন্টহাউসটি কেবল একটি বাড়ি নয়, বরং এটি একটি সম্পূর্ণ জীবনযাত্রার প্রতিফলন। মোট ৫,৫০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে বিস্তৃত এই বাসভবনে রয়েছে পাঁচটি বিলাসবহুল শোবার ঘর এবং পাঁচটি আধুনিক বাথরুম। প্রতিটি বাথরুম থেকে অবিশ্বাস্য দৃশ্যাবলী উপভোগ করার সুবিধা রয়েছে। বাড়িটির প্রতিটি কোণে বিশাল জানালা রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ করে এবং মিয়ামির সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়।

খাদ্যরসিকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছেন মেসি। তার পেন্টহাউসে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন রান্নাঘর এবং একটি রেফ্রিজারেটেড ওয়াইন সেলার যেখানে ১,০০০ এরও বেশি বোতল মদ সংরক্ষণ করা যায়। এই ওয়াইন কালেকশনটি তার জীবনযাত্রার মানের একটি পরিচায়ক। বিশাল বালকনিটি পুরো সম্পত্তি জুড়ে বিস্তৃত, যা তাকে এবং তার পরিবারকে মিয়ামির প্যানোরামিক দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ দেয়।

মেসি যুগের অবসানের পর কতটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে আর্জেন্টিনা?

রেগালিয়া টাওয়ারের এই পেন্টহাউসে মেসি এবং তার পরিবারের জন্য রয়েছে বিশ্বমানের সুবিধাদি। বিল্ডিংয়ে রয়েছে একটি যোগব্যায়াম স্টুডিও, ফিটনেস সেন্টার, স্পা, শিশুদের খেলার ঘর এবং একটি শ্যাম্পেইন বার। সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল এই টাওয়ারে রয়েছে মোট ছয়টি সুইমিং পুল, যা মেসির বিলাসবহুল জীবনযাত্রায় বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।

মেসির এই মিয়ামি বিনিয়োগ কেবল একটি সম্পত্তি ক্রয় নয়, বরং এটি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনারও অংশ। ২০২৩ সালে ইন্টার মিয়ামিতে যোগদানের পর তিনি ফ্লোরিডাকে তার নতুন কর্মক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এই পেন্টহাউস ক্রয়ের পাশাপাশি তিনি ফোর্ট লডারডেলে আরও একটি ১০.৮ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৯০ কোটি টাকা) ম্যানশনও কিনেছেন। সেই বাড়িটিতে রয়েছে ১০টি শোবার ঘর, ৮টি বাথরুম, একটি স্পা রুম এবং তিনটি গাড়ির জন্য গ্যারেজ।

আর্জেন্টিনার রোজারিও থেকে শুরু করে বার্সেলোনা, প্যারিস এবং এখন মিয়ামি – মেসির প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য। তার বার্সেলোনার বাড়িতে ছিল ব্যক্তিগত ফুটবল মাঠ, সুইমিং পুল এবং ভূমধ্যসাগরের অপরূপ দৃশ্য। ২০০৯ সালে ১.৮ মিলিয়ন ডলারে কেনা সেই বাড়িটি সংস্কারে তিনি আরও ৬ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন।

মেসির জীবনযাত্রার মান তার আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১৩৫ মিলিয়ন ডলার। এই বিপুল সম্পদের কারণেই তিনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে পারেন। তার প্রতিটি সম্পত্তিতেই রয়েছে পরিবারের নিরাপত্তা এবং প্রাইভেসির বিশেষ ব্যবস্থা।

মেসি-রোনাল্ডো: দুই মহাতারকার অবদানে বদলে গেছে বিশ্ব ফুটবলের চেহারা

শুধু আবাসিক সম্পত্তিতেই নয়, মেসি তার বিনোদনের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছেন। তিনি নিয়মিত বিলাসবহুল ইয়টে ভ্রমণ করেন এবং ছুটির দিনগুলো পরিবারের সাথে সমুদ্রে কাটান। এই জীবনযাত্রা তার কঠোর পরিশ্রম এবং ফুটবলে অসামান্য অবদানের ফসল।

মিয়ামির এই পেন্টহাউসে মেসি শুধু বিশ্রাম নেন না, বরং এটি তার পারিবারিক জীবনের কেন্দ্রস্থলও। তার স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জো এবং তিন সন্তান থিয়াগো, ম্যাতেও ও সিরোর সাথে তিনি এখানে মানসম্পন্ন সময় কাটান। বাড়িটির ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যেন পারিবারিক প্রাইভেসি বজায় থাকে এবং একই সাথে আধুনিক সুবিধাও পাওয়া যায়।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মেসি ২০২৫ সালে সিপ্রিয়ানি রেসিডেন্সেস মিয়ামিতে আরও চারটি বিলাসবহুল কন্ডোমিনিয়াম কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এই ৮০ তলা টাওয়ারটি ২০২৮ সালে সম্পূর্ণ হবে এবং এতে থাকবে দ্বিতল পুল, ব্যক্তিগত রেস্তোরাঁ এবং সম্পূর্ণ ক্যাটারিং সেবা। এর মধ্যে একটি ইউনিট ৩,৫০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে চারটি শোবার ঘর সহ তৈরি হবে, যার দাম প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন ডলার।

বর্তমানে মেসির মিয়ামি পেন্টহাউসটি তার জীবনযাত্রার একটি নিখুঁত প্রতিচ্ছবি। এখানে তিনি তার ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন এবং পরিবারের সাথে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করছেন। সম্পত্তিটির অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং গেটেড কমিউনিটির সুবিধা তাকে জনসাধারণের নজর থেকে দূরে থাকার সুযোগ দেয়।এই পেন্টহাউসের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যই মেসির ব্যক্তিত্ব এবং পছন্দের প্রতিফলন। বিশাল জানালা থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক রান্নাঘর, সবকিছুই তার জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী পরিকল্পিত। মিয়ামির এই বাড়িটি শুধু একটি আবাসস্থল নয়, বরং এটি তার সফল ক্যারিয়ার এবং পারিবারিক সুখের প্রতীক

Share This Article