C-130J Super Hercules India: লকহিড মার্টিন এবং টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমস লিমিটেড (TASL) ভারতে C-130J Super Hercules ট্যাকটিক্যাল এয়ারলিফটার নির্মাণের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি ভারতের প্রতিরক্ষা ও এরোস্পেস ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।
চুক্তির মূল বিষয়গুলি
চুক্তিটি দুটি প্রধান ক্ষেত্রে সহযোগিতার উপর ফোকাস করেছে:
- ভারতে একটি মেইনটেন্যান্স, রিপেয়ার এবং ওভারহল (MRO) সুবিধা স্থাপন
- ভারতীয় বিমান বাহিনীর মিডিয়াম ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট (MTA) প্রোগ্রামের জন্য C-130J উৎপাদন ও সংযোজন সম্প্রসারণ
ভারতের নতুন বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সমর-২ এর পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরে
MRO সুবিধা
এই সুবিধাটি ভারতীয় বিমান বাহিনীর বর্তমান 12টি C-130J বিমানের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অন্যান্য Super Hercules বহরকেও সমর্থন করবে। এটি ভারতের প্রতিরক্ষা পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করবে, যা ভারতীয় বিমান বাহিনীকে তার অপারেশনাল সক্ষমতা আরও দক্ষতার সাথে বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
উৎপাদন ও সংযোজন সম্প্রসারণ
চুক্তিটি ভারতীয় বিমান বাহিনীর MTA প্রোগ্রামের জন্য C-130J উৎপাদন ও সংযোজন ভারতে সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই উদ্যোগটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে হবে। লকহিড মার্টিন যদি MTA চুক্তি জিতে নেয়, তাহলে ভারতে অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা স্থাপন করা হবে।
প্রতিক্রিয়া ও প্রত্যাশা
টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমসের সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুকরণ সিং বলেছেন:”ভারতীয় বিমান বাহিনীর MTA প্রকল্পের জন্য C-130J প্ল্যাটফর্মে লকহিড মার্টিনের সাথে সহযোগিতা করা টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমসের জন্য একটি মাইলফলক। এই চুক্তি টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমসকে ভারতের প্রতিরক্ষা MRO স্পেসে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে স্থাপন করে, যা দুই কোম্পানির মধ্যে অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করে।”লকহিড মার্টিনের এয়ার মোবিলিটি অ্যান্ড মেরিটাইম মিশনস বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জেনারেল ম্যানেজার রড ম্যাকলিন বলেছেন:”লকহিড মার্টিন ও টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমসের মধ্যে এই টিমিং চুক্তি আরও প্রমাণ করে যে লকহিড মার্টিন একটি স্বনির্ভর ভারতের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
C-130J Super Hercules সম্পর্কে
C-130J-30 Super Hercules হল একটি অত্যাধুনিক ট্যাকটিক্যাল এয়ারলিফটার যা বিশ্বব্যাপী বিমান বাহিনীর সাথে অতুলনীয় ইন্টারঅপারেবিলিটি প্রদান করে। এর বৈশিষ্ট্যগুলি:
- শক্তিশালী শিল্প অংশীদারিত্ব
- যাচাইকৃত কম জীবনচক্র ব্যয়
- উল্লেখযোগ্য জ্বালানি সাশ্রয়
- অন্যান্য মাঝারি আকারের জেট এয়ারলিফটারের তুলনায় কম কার্বন পদচিহ্ন
2011 সালে ভারতের প্রথম C-130J-30 আগমনের পর থেকে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর ক্রুরা Super Hercules-এর অনন্য ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, যেমন:
- বিশ্বের সর্বোচ্চ বিমানবন্দরে অবতরণ
- প্রতিকূল আবহাওয়ায় সাহসী রাতের অপারেশন পরিচালনা
পরিসংখ্যান
বিষয় | সংখ্যা |
---|---|
বিশ্বব্যাপী C-130J অপারেটর | 27টি দেশের 23টি |
মোট C-130J বিমান | 545+ |
মোট উড়ান ঘণ্টা | 3 মিলিয়ন+ |
বিভিন্ন মিশন প্রয়োজনীয়তা | 19টি |
Indian Historical Event: ভারতের ইতিহাসে ২৮ জুন: একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন
সম্ভাব্য প্রভাব
এই চুক্তির ফলে নিম্নলিখিত প্রভাবগুলি দেখা যেতে পারে:
- ভারতের এরোস্পেস ও প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নয়ন
- ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সম্পর্কের উন্নতি
- ভারতীয় বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি
- ভারতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি
- প্রযুক্তি হস্তান্তর ও দক্ষতা উন্নয়ন
ঐতিহাসিক পটভূমি
লকহিড মার্টিন ও টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমসের মধ্যে এই নতুন চুক্তি দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। 2010 সালে টাটা লকহিড মার্টিন এয়ারোস্ট্রাকচারস লিমিটেড (TLMAL) প্রতিষ্ঠার পর থেকে, এই যৌথ উদ্যোগটি ভারতের “মেক ইন ইন্ডিয়া” উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। TLMAL ইতিমধ্যে 220টিরও বেশি C-130J empennage তৈরি করেছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত প্রতিটি নতুন Super Hercules বিমানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
লকহিড মার্টিন ও টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমসের মধ্যে এই নতুন চুক্তি ভারতের এরোস্পেস ও প্রতিরক্ষা খাতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি শুধুমাত্র দেশের প্রযুক্তিগত ক্ষমতা বাড়াবে না, বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও অবদান রাখবে। এই ধরনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ভারতকে বিশ্বব্যাপী এরোস্পেস ও প্রতিরক্ষা উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করবে, যা দেশের “আত্মনির্ভর ভারত” লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।