Gaslighting in Relationships: ভালোবাসা! এই শব্দটা শুনলেই যেন মনে একরাশ প্রজাপতি ডানা মেলে দেয়, তাই না? প্রথম দেখা, মিষ্টি হাসি, আর তারপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলা… আহা! প্রেমের অনুভূতিটাই আলাদা। কিন্তু যখন এই প্রেম বিয়ের দিকে মোড় নেয়, তখন একটু থমকে যাওয়া উচিত। কারণ, বিয়ে মানে শুধু দুটো মনের মিলন নয়, এটা দুটি পরিবারেরও বন্ধন। তাই আবেগের বশে হুট করে ‘হ্যাঁ’ বলার আগে, নিজেকে কিছু প্রশ্ন করা জরুরি। এতে করে ভবিষ্যতের পথটা আরও মসৃণ হবে।
ভাবছেন, ভালোবাসার মধ্যে আবার প্রশ্ন কীসের? আসলে, বিয়ে জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। একটা ভুল সিদ্ধান্ত পুরো জীবনটাকে বিষিয়ে তুলতে পারে। তাই, সময় নিয়ে ভাবুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন। উত্তরগুলো বিশ্লেষণ করুন। এতে আপনার ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর হবে।
প্রেমের শুরুটা বন্ধুত্ব দিয়ে হলে, সেই সম্পর্ক অনেক বেশি মজবুত হয়। আপনারা কি একে অপরের সাথে সবকিছু শেয়ার করতে পারেন? মন খুলে কথা বলতে পারেন? একে অপরের দুর্বলতাগুলো জানেন? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে বুঝবেন আপনাদের ভিত বেশ শক্ত।
ধরুন, আপনি চান একটা বড় পরিবার, আর আপনার ভালোবাসার মানুষটি সন্তান নিতেই চান না। অথবা, আপনি চান নিজের শহরে থাকতে, আর সে চায় বিদেশে গিয়ে জীবন কাটাতে। এরকম পরিস্থিতিতে, আগে থেকে কথা বলে নেওয়াই ভালো। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো যদি মেলে, তাহলে দাম্পত্য জীবন সুখের হবে।
টাকা-পয়সা জীবনের সবকিছু না হলেও, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিয়ের পর সংসার চালাতে অর্থের প্রয়োজন। আপনারা দুজনেই কি যথেষ্ট উপার্জন করেন? নাকি, একজনের উপর পুরো দায়িত্ব? এই বিষয়গুলো নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করা দরকার।
বিয়ে মানে শুধু দুজন মানুষের মিলন নয়, দুটি পরিবারেরও মিলন। আপনি কি আপনার সঙ্গীর পরিবারকে সম্মান করেন? তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেন? একইভাবে, আপনার সঙ্গীও কি আপনার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল? যদি দুই পরিবার একে অপরের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখে, তাহলে দাম্পত্য জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়।
সম্পর্কে ঝগড়া হবেই। কিন্তু সেই ঝগড়াগুলো কিভাবে সামলানো হচ্ছে, সেটাই আসল কথা। আপনারা কি একে অপরের কথা শোনেন? নিজেদের ভুল স্বীকার করেন? নাকি, ঝগড়াগুলো তিক্ততায় পৌঁছে যায়? যদি আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে ঝগড়া মেটাতে পারেন, তাহলে বুঝবেন আপনাদের সম্পর্ক অনেক পরিণত।
আপনার হয়তো শখের ফটোগ্রাফি নিয়ে কিছু করার ইচ্ছে আছে, অথবা আপনার সঙ্গীর হয়তো একটা NGO খুলতে চান। আপনারা কি একে অপরের স্বপ্নকে সমর্থন করেন? নাকি, নিজের ক্যারিয়ারের চাপে সঙ্গীর স্বপ্নকে অবহেলা করেন? যদি আপনারা একে অপরের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করেন, তাহলে আপনাদের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।
বিশ্বাস ভালোবাসার ভিত্তি। আপনারা কি একে অপরের প্রতি সৎ? কোনো কিছু লুকোচ্ছেন না তো? যদি সম্পর্কে বিশ্বাস না থাকে, তাহলে সেই সম্পর্ক বেশিদিন টেকে না।
সারাক্ষণ একসাথে থাকতে ভালো লাগলেও, মাঝে মাঝে একটু একা থাকার প্রয়োজন হয়। আপনারা কি একে অপরের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করেন? নাকি, সবসময় খবরদারি করেন? যদি আপনারা একে অপরের স্পেসকে সম্মান করেন, তাহলে আপনাদের সম্পর্ক আরও সুন্দর হবে।
শারীরিক আকর্ষণ একটা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে, শুধু শারীরিক আকর্ষণই যথেষ্ট নয়। আপনারা কি মানসিকভাবেও একে অপরের সাথে কানেক্টেড? একে অপরের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতিগুলো কি বোঝেন? যদি আপনারা শারীরিক ও মানসিকভাবে একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হন, তাহলে আপনাদের সম্পর্ক অনেক গভীর হবে।
মহিলাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ: মহিলা সম্মান সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে পান 7.5% সুদ!
সব প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ পেলেও, শেষ প্রশ্নটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা কি সত্যিই সুখী? এই সম্পর্ক কি আপনাকে আনন্দ দেয়? নাকি, সবসময় একটা চাপা tension কাজ করে? যদি আপনি সত্যিই সুখী হন, তাহলে বুঝবেন আপনি সঠিক মানুষের সাথেই আছেন।
বিয়ে জীবনের একটা সুন্দর অধ্যায়। কিন্তু এই অধ্যায় শুরু করার আগে একটু সাবধান হওয়া ভালো। নিজেকে প্রশ্ন করুন। নিজের সঙ্গীকে জানুন। তাহলে আপনার ভবিষ্যৎ জীবন সুখের হবে। আর যদি কোনো কারণে মনে হয়, এই সম্পর্ক আপনার জন্য নয়, তাহলে ‘না’ বলতে দ্বিধা করবেন না। কারণ, নিজের সুখের চেয়ে বড় আর কিছুই নয়।মনে রাখবেন, “প্রেম হোক বিয়ে”, তবে সেই বিয়ে যেন হয় সুখের আর ভালোবাসার। শুভ কামনা!
মন্তব্য করুন