Saturday, 2 Aug 2025
  • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
  • কারেকশন পলিসি
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • ফ্যাক্ট চেকিং পলিসি
Think Bengal Logo Think Bengal Logo
  • হোম
  • পশ্চিমবঙ্গ
  • ভারত
  • বাংলাদেশ
  • স্বাস্থ্য
  • প্রযুক্তি
  • অটোমোবাইল
  • খেলাধুলো
  • বিবিধ
  • স্বাস্থ্য
  • প্রযুক্তি
  • জানা অজানা
  • স্বাস্থ্য টিপস
  • ভারত
  • অ্যান্ড্রয়েড
  • পশ্চিমবঙ্গ
  • অফবিট
  • বাংলাদেশ
শিরোনাম এই মুহূর্তে
Vivo V60 5G: ২০২৫ সালের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত স্মার্টফোন – দাম, স্পেসিফিকেশন ও সব বিস্তারিত আপডেট
৮০০০ টাকার নিচে কম বাজেটে দুর্দান্ত ফিচার সহ ৫টি স্মার্টফোনের তালিকা
Amazon ফ্রিডম সেলে ঝড়! ১০০০ টাকার কম দামে প্রিমিয়াম সাউন্ড ও স্টাইলিশ ডিজাইনের ৪টি অসাধারণ হেডফোন
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে বাংলার জয়জয়কার: ডিপ ফ্রিজ থেকে কাবেরী অন্তর্ধান – একনজরে বিজয়ী বাংলা ছবিগুলি
গত এক দশকে ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রিকেটার কে? নাম জানলে চমকে উঠবেন
Think BengalThink Bengal
Search
  • হোম
  • পশ্চিমবঙ্গ
  • ভারত
  • বাংলাদেশ
  • স্বাস্থ্য
  • প্রযুক্তি
  • অটোমোবাইল
  • খেলাধুলো
Follow US
© 2025 All Rights reserved | Powered by Thinkbengal
Think Bengal > Blog > বাংলাদেশ > বাংলাদেশ অফবিট > মঙ্গল শোভাযাত্রা: বাংলা নববর্ষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উজ্জ্বল প্রতীক
বাংলাদেশবাংলাদেশ অফবিট

মঙ্গল শোভাযাত্রা: বাংলা নববর্ষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উজ্জ্বল প্রতীক

বাংলাদেশ প্রতিনিধি March 25, 2025 12 Min Read
Share
SHARE

Boishakhi festival in Bangladesh: পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসবগুলির মধ্যে একটি, যেখানে মঙ্গল শোভাযাত্রা এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা হলো বাংলাদেশে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে (পহেলা বৈশাখ, ১৪ এপ্রিল) আয়োজিত একটি বর্ণাঢ্য মিছিল, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দ্বারা আয়োজিত হয়। ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ শব্দটির অর্থ “কল্যাণের মিছিল” – যা সুখ, সমৃদ্ধি এবং আশার প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ২০১৬ সালে UNESCO এই সাংস্কৃতিক উৎসবকে “অস্পৃশ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস

মঙ্গল শোভাযাত্রার উৎপত্তি ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে। এর সূচনা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। কিছু সূত্র অনুসারে, এই ঐতিহ্য প্রথম ১৯৮৫ সালে যশোরে সামরিক শাসনের সময় শুরু হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন চারুকলা শিল্পী মাহবুব জামাল শামীম, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের একজন প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন এবং যশোরে চারুপীঠ নামক একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন। তিনি লোক সংস্কৃতির উপস্থাপনার মাধ্যমে ঐক্য বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এবং মঙ্গলকর শক্তির জন্য প্রার্থনা ও অমঙ্গলকর শক্তি দূর করার প্রতীক হিসেবে এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

প্রাচীন বনভূমির সাক্ষী থাকতে ঘুরে আসুন বিশ্বের দশটি প্রাচীনতম অরণ্য

১৯৮৯ সালে এই ঐতিহ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে প্রসারিত হয়, যা প্রথমে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ (আনন্দ মিছিল) নামে পরিচিত ছিল। তখন বাংলাদেশে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারী শাসন চলছিল। দেশ তখন সামরিক স্বৈরাচারের অধীনে ছিল এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ঢাকায় গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, যেখানে নূর হোসেনসহ অনেকে প্রাণ হারিয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

১৯৯৬ সালের মধ্যে, বিভিন্ন মিডিয়া সূত্র অনুসারে, অনুষ্ঠানটি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নাম গ্রহণ করে, যা এখন পর্যন্ত বজায় রেখেছ। উল্লেখ্য যে, ২০২৫ সালের মার্চে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকনিক ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন করে ‘বৈশাখ শোভাযাত্রা’ করা হয়েছে।

যে সময়ে এই উৎসবটি শুরু হয়েছিল সে সময়ের পরিস্থিতি ছিল নিম্নরূপ:

১. ১৯৮০ এর দশকে বাংলাদেশ একটি সামরিক শাসনের অধীনে ছিল।
২. দেশ বন্যা ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভুগছিল।
৩. ঢাকায় গণবিক্ষোভ চলছিল, যেখানে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল।

You Might Also Like

কার্যসিদ্ধি হনুমান মন্ত্র: সফলতার চাবিকাঠি ও আধ্যাত্মিক শক্তির উৎস
পরীমনি কি ঢালিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত নায়িকা? জানুন তাঁর আয়ের হিসেব
বাংলাদেশ মেট্রোরেলের সময়সূচী ও ভাড়া: আপনার যা জানা দরকার
চুল স্ট্রেইট করলে কি আপনার কিডনি নষ্ট হয়ে যাবে? জেনে নিন চমকপ্রদ তথ্য!

মঙ্গল শোভাযাত্রার তাৎপর্য

মঙ্গল শোভাযাত্রা শুধু একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, এটি বাংলাদেশের জনগণের জীবনে গভীর তাৎপর্য বহন করে। এই শোভাযাত্রা বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ:

১. সাংস্কৃতিক পরিচয় ও ঐক্য

মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলাদেশের সকল ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ ও বয়সের মানুষকে একত্রিত করে। এটি ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশি পরিচয়ের প্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হয়। শোভাযাত্রা দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, লোকশিল্প এবং ইতিহাসকে উদযাপন করে এবং দেশের ঐক্য ও সংহতিকে শক্তিশালী করে।

বাংলাদেশি লোকজ ঐতিহ্যের প্রতি গর্বকে প্রতিফলিত করে মঙ্গল শোভাযাত্রা উৎসব। এটি শুধু একটি মজার অনুষ্ঠান নয়, বরং বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও পরিচয়ের প্রকাশের একটি মাধ্যম।

২. ভালো-মন্দের প্রতীকী সংগ্রাম

মঙ্গল শোভাযাত্রা ভালো ও মন্দের মধ্যে সংগ্রামের প্রতীক। এতে সাধারণত তিনটি থিম থাকে:

১. নিপীড়ন ও অমঙ্গলের প্রতিনিধিত্ব – যা সমাজের নেতিবাচক দিকগুলিকে চিত্রিত করে।
২. সাহস ও শক্তির প্রদর্শন – যা বাংলাদেশি জনগণের সাহস এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তিকে প্রকাশ করে।
৩. শান্তি ও ঐক্যের প্রতীক – যা সমাজের সহাবস্থান ও সম্প্রীতিকে উৎসাহিত করে।

এই শোভাযাত্রা বাংলাদেশের মানুষের দুর্দশা, অন্যায় ও অভাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে কাজ করে, এবং এটি আশা, সাহস ও সামাজিক পরিবর্তনের বার্তা বহন করে।

৩. UNESCO স্বীকৃতি

২০১৬ সালে ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় অনুষ্ঠিত ইন্টার-গভর্নমেন্টাল কমিটি অন সেফগার্ডিং ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজের ১১তম সেশনে UNESCO মঙ্গল শোভাযাত্রাকে “অস্পৃশ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য”-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কূটনীতির একটি সাফল্য এবং এটি বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ ও সমন্বিত সমাজ হিসেবে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে সাহায্য করে।

UNESCO-এর এই স্বীকৃতি মঙ্গল শোভাযাত্রাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উন্নীত করেছে এবং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূল্য ও গুরুত্বকে বাড়িয়ে তুলেছে।

মঙ্গল শোভাযাত্রার বৈশিষ্ট্য

মঙ্গল শোভাযাত্রা তার বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত, যা এটিকে একটি অনন্য সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে:

১. বর্ণাঢ্য শিল্পকর্ম ও প্রতীক

শোভাযাত্রায় বিশাল আকৃতির বর্ণাঢ্য মুখোশ, মাছ, পাখি, জীবজন্তু, লোককাহিনী ও অন্যান্য প্রতীকের রেপ্লিকা ব্যবহার করা হয়। এই শিল্পকর্মগুলির প্রত্যেকটির একটি বিশেষ অর্থ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ:

  • সূর্য: আলোর দিকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান, অন্ধকার দূর করার প্রতীক। সূর্যের দুটি আভা – একটি উজ্জ্বল এবং অন্যটি অন্ধকার – মানব প্রকৃতির দুটি দিককে প্রতিনিধিত্ব করে।
  • মাছ ও পাখি: দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে।
  • হাতি: সমৃদ্ধির প্রতীক।

চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা উৎসবের এক মাস আগে থেকে একসাথে কাজ করে মুখোশ ও ফ্লোট তৈরি করেন, যেগুলি অমঙ্গল শক্তি দূর করতে এবং অগ্রগতি সম্ভব করতে বলা হয়।

২. সংগীত, নৃত্য ও সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা

মিছিলটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে সংগীত, নৃত্য, নাটকীয় উপস্থাপনা এবং সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী। ঢোল, বাঁশি এবং করতাল সহ ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র প্রায়শই একটি উত্সাহব্যঞ্জক পরিবেশ সৃষ্টি করতে বাজানো হয়। অংশগ্রহণকারীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে এবং ব্যানার, মুখোশ, বিভিন্ন থিমের প্রতিনিধিত্বকারী প্রপস বহন করে।

৩. জনসম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা

মঙ্গল শোভাযাত্রা হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ হয়। বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ এই উৎসবে যোগ দেন, যা এটিকে একটি সত্যিকারের জনসম্পৃক্ত সাংস্কৃতিক অনუষ্ঠান করে তোলে। শোভাযাত্রার পরে, মুখোশগুলি প্রায়শই দান করা হয় বা দাতব্য তহবিল সংগ্রহের অংশ হিসেবে বিক্রি করা হয়।

মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন প্রক্রিয়া

মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন একটি বিস্তৃত প্রক্রিয়া, যা সাধারণত উৎসবের এক মাস আগে থেকে শুরু হয়:

১. প্রস্তুতি ও শিল্পকর্ম তৈরি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা একসাথে কাজ করে থিম নির্বাচন করেন এবং মুখোশ, ফ্লোট ও অন্যান্য শিল্পকর্ম তৈরি করেন। প্রতি বছর দেশের রাজনীতি ও সংস্কৃতির সাথে প্রাসঙ্গিক নতুন থিম বেছে নেওয়া হয়।

চারুকলা অনুষদ (FFA) বড় প্রতিষ্ঠানগুলিকে মঙ্গল শোভাযাত্রার সময় বাণিজ্যিক সাইনেজ স্থাপন করা থেকে বিরত রাখে। পরিবর্তে, প্রাক্তন ছাত্র, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা তাদের তৈরি শিল্পকর্ম, সোরা, মুখোশ এবং হস্তশিল্প বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করেন।

২. মিছিল রুট ও সুরক্ষা ব্যবস্থা

মিছিলটি সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, রমনা টেনিস কমপ্লেক্স, শিশু পার্ক হয়ে টিএসসি গোলচত্বর হয়ে আবার শুরুর স্থানে ফিরে আসে।

নিরাপত্তা বাহিনী মিছিলের পুরো রুট জুড়ে সতর্ক থাকে। র‍্যাবের মোটরসাইকেল পেট্রোল টিম, পুলিশের স্পেশাল ওয়েপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিকস (SWAT) টিম, অন্যান্য পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মীরা মিছিলে উপস্থিত থাকেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কিছু ড্রোন থাকে, এছাড়াও ওয়াচটাওয়ার থাকে।

মঙ্গল শোভাযাত্রার অনুষ্ঠান

প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল, পহেলা বৈশাখে, হাজার হাজার মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে সকালে জমায়েত হন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একটি বড় অংশ ঐতিহ্যবাহী বাংলা পোশাক পরিধান করে, যেমন পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি এবং মহিলাদের জন্য শাড়ি।

শোভাযাত্রাটি সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় এবং এতে অংশগ্রহণকারীরা ঢোলের তালে তালে নাচতে নাচতে এগিয়ে যান। কিছু অংশগ্রহণকারী ‘পহেলা বৈশাখ’ লেখা হেডব্যান্ড পরে, আবার কেউ ফুলের মালা পরে। বড় সংখ্যক অংশগ্রহণকারী ছোট ঢোল বহন করে, অন্যরা মাছ, পাখি, পেঁচা, হাতি এবং ফুলের আকৃতির বর্ণাঢ্য মুখোশ পরে। তাদের পাশে হাতি, পাখি এবং বনরুই (Pangolin) এর বিশাল প্রতীক চলে।

এই উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকেন।

বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রা

মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে:

১. UNESCO স্বীকৃতির প্রক্রিয়া

২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি একটি মনোনয়ন ফাইল প্রস্তুত করে, যা বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় দ্বারা অনুমোদিত হয় এবং UNESCO-তে জমা দেওয়া হয়। ৩০ নভেম্বর ২০১৬-এ ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় অনুষ্ঠিত ইন্টার-গভর্নমেন্টাল কমিটি অন সেফগার্ডিং ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজের ১১তম সেশনে UNESCO মঙ্গল শোভাযাত্রা উৎসবকে অস্পৃশ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে নির্বাচিত করে।

২. আন্তর্জাতিক প্রভাব

UNESCO-এর স্বীকৃতি মঙ্গল শোভাযাত্রার দৃশ্যমানতা বাড়িয়েছে এবং বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ ও সমন্বিত সমাজ হিসেবে ইমেজ শক্তিশালী করতে সাহায্য করেছে। এই স্বীকৃতি উৎসবের লোকপ্রিয়তা ও গুরুত্ব আরও বাড়িয়েছে এবং ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার সারা দেশে এই মিছিল আয়োজন করছে।

বর্তমান সময়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার গুরুত্ব

আজকের সমাজে মঙ্গল শোভাযাত্রার গুরুত্ব আরও বেড়েছে:

১. সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ

একটি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য শুধু স্মারক ও জাদুঘর নয়, বরং পূর্বপুরুষদের থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া জীবন্ত অস্পৃশ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ICH) ও সংস্কৃতির প্রকাশও। মঙ্গল শোভাযাত্রা এই ধরনের একটি জীবন্ত ঐতিহ্য, যা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিবিধতা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২. সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতি

বর্তমান সময়ে সামাজিক বিভাজন ও অসহিষ্ণুতা বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে, মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো উৎসবগুলি সকল ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ ও বয়সের মানুষকে একত্রিত করে সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি গণতন্ত্রের জন্য সংহতি এবং একটি সাধারণ মূল্যবোধকেও প্রতিনিধিত্ব করে, যা জাতি, বিশ্বাস, ধর্ম, লিঙ্গ বা বয়স নির্বিশেষে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে।

৩. অর্থনৈতিক ও সামাজিক মূল্য

অস্পৃশ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্ব শুধু সাংস্কৃতিক প্রকাশের মধ্যেই নয়, বরং যে জ্ঞান ও কৌশল হস্তান্তরিত হয় তার মধ্যেও রয়েছে, যা মানুষ ও দেশের জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক মূল্য প্রকাশ করে।

চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

মঙ্গল শোভাযাত্রা কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে, কিন্তু এর সাথে উজ্জ্বল সম্ভাবনাও রয়েছে:

১. ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ

মঙ্গল শোভাযাত্রার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সাথে সম্পর্কিত একটি ঝুঁকি হল এর অত্যধিক বাণিজ্যিকীকরণ। যদিও শোভাযাত্রাটি স্থানীয় সীমানা ছাড়িয়ে তার বার্তা ছড়িয়ে দিতে এবং অনেক মানুষকে – বিশেষ করে শিশুদের – অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে এবং শান্তির পক্ষে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতায় বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণ সংশ্লিষ্ট অস্পৃশ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

এছাড়া, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে মৌলবাদীরা উৎসবটি বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে, এই বলে যে এটি অ-ইসলামিক মূল্যবোধকে উৎসাহিত করে। এই ধরনের অবস্থান মঙ্গল শোভাযাত্রা দ্বারা হাইলাইট করা অ-ধর্মীয়, ট্রান্স-সাম্প্রদায়িক বাঙালি পরিচয়ের উদযাপনের জন্য একটি সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করে।

মুম্বাইয়ের রাজপথে বিশ্বজয়ীদের উন্মাদনা: রোহিত-কোহলির নাচে মেতে উঠলো লক্ষ লক্ষ ভক্ত!

২. সম্ভাবনা ও উন্নয়ন

মঙ্গল শোভাযাত্রার জনপ্রিয়তা ও UNESCO স্বীকৃতি এটিকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক টুরিজম প্রচারের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার করে তুলেছে। এটি দেশের সাংস্কৃতিক বিবিধতা ও ঐতিহ্যের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

এছাড়া, এই উৎসব সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজ উন্নীত করতে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বাড়াতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলাদেশের একটি অমূল্য সাংস্কৃতিক সম্পদ, যা শুধুমাত্র একটি বর্ণাঢ্য উৎসব নয়, বরং দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জনগণের সামাজিক-রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে একটি স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে শুরু হয়ে, এটি এখন UNESCO স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয়, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এটি ভালো-মন্দের সংগ্রাম, আশা-হতাশা এবং জীবনের নবায়নের বার্তা বহন করে। UNESCO কর্তৃক “অস্পৃশ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য” হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর, এটি আরও বেশি জনপ্রিয়তা ও গুরুত্ব অর্জন করেছে।সামগ্রিকভাবে, মঙ্গল শোভাযাত্রা শুধু একটি বার্ষিক উৎসব নয়, বরং বাংলাদেশের মানুষের সাহস, সৃজনশীলতা এবং সাংস্কৃতিক গর্বের একটি জীবন্ত প্রমাণ। এটি আগামী প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং বাংলাদেশকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক মানচিত্রে একটি বিশেষ স্থান দিয়েছে।

Share This Article
Facebook Whatsapp Whatsapp Email Copy Link Print
Previous Article মহাকাশে মানুষের সঙ্গী: যে প্রাণীরা আমাদের অবাক করে
Next Article নিউ দিল্লি রেলওয়ে স্টেশন: ভারতের সর্বাধিক রাজস্ব উৎপাদনকারী রেল হাব

সাম্প্রতিক খবর

best phones under 8000
অ্যান্ড্রয়েডপ্রযুক্তি

৮০০০ টাকার নিচে কম বাজেটে দুর্দান্ত ফিচার সহ ৫টি স্মার্টফোনের তালিকা

August 2, 2025
Amazon Freedom Sale under 1000 rupee headphones
গেজেটপ্রযুক্তি

Amazon ফ্রিডম সেলে ঝড়! ১০০০ টাকার কম দামে প্রিমিয়াম সাউন্ড ও স্টাইলিশ ডিজাইনের ৪টি অসাধারণ হেডফোন

August 2, 2025
Vivo V60 5G specifications
অ্যান্ড্রয়েডপ্রযুক্তি

Vivo V60 5G: ২০২৫ সালের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত স্মার্টফোন – দাম, স্পেসিফিকেশন ও সব বিস্তারিত আপডেট

August 2, 2025
National Film Awards 2025 Bengali movies
বিনোদনসিনেমা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে বাংলার জয়জয়কার: ডিপ ফ্রিজ থেকে কাবেরী অন্তর্ধান – একনজরে বিজয়ী বাংলা ছবিগুলি

August 1, 2025
Kerala first transgender doctor VS Priya
অফবিটভারত

সাহসিকতার নতুন দিগন্ত: কেরালার প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ডাক্তার ডাঃ প্রিয়ার অনুপ্রেরণামূলক সংগ্রামের কাহিনী

August 1, 2025

জনপ্রিয় সংবাদ

জানা অজানাবিজ্ঞান

৫০ বছরের রহস্য উন্মোচন: নতুন রক্তের গ্রুপ ‘MAL’ আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা!

October 2, 2024
জানা অজানাবিবিধ

ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলার উপায়: বাড়িয়ে তুলুন বোঝাপড়া

February 21, 2025
অ্যাপপ্রযুক্তি

বাংলায় প্রোগ্রামিং শেখার সেরা ১০টি ওয়েবসাইট: নতুন প্রজন্মের জন্য অসাধারণ সুযোগ!

October 31, 2024
বিনোদনবিবিধ

Bhool Bhulaiyaa 3: কার্তিক আর্যান, বিদ্যা বালান এবং মাধুরী দীক্ষিতের ত্রিমুখী ভূতের খেলা!

November 2, 2024
Show More
  • More News:
  • India
  • West Bengal
  • Narendra Modi
  • Bangladesh
  • Kolkata
  • Mamata Banerjee
  • Cricket
  • IPL
  • technology
  • Game
  • politics
  • World
  • International
  • modi
  • PM
  • education
  • AI
  • Seikh Hasina
  • Durga Puja 2024
  • RG Kar Case
Think Bengal Logo

At Think Bengal, we believe in the power of informed communities. We are a dedicated news media organization committed to delivering accurate, timely, and comprehensive news coverage that matters to the people of Bengal and beyond.

Facebook

সম্পাদকের পছন্দ

ভাগ্য পরিবর্তনের বৈজ্ঞানিক উপায়: কীভাবে নিজের ভাগ্য নিজেই গড়বেন

জানা অজানা জ্যোতিষ November 7, 2024

১২৬ প্রকারের মার্বেল দিয়ে নির্মিত এই প্রাসাদে রয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তের সাংস্কৃতিক নিদর্শন

বিবিধ শিল্প ও সাহিত্য September 26, 2024

Durga Puja 2025: মাত্র ১১ মাস বাকি, জেনে নিন কবে থেকে শুরু হচ্ছে পুজো!

জানা অজানা বিবিধ October 11, 2024

চৈত্র মাসের উৎসব: নীল পুজো, চড়ক ও বাসন্তী পুজোর মাহাত্ম্য ও তারিখ

কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ March 16, 2025

ট্রেন্ডিং নিউজ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে এমপি হতে চায় এআই!

আন্তর্জাতিক আন্তর্জাতিক রাজনীতি June 20, 2024

Xiaomi 14 Civi : ফোনে নিয়ে ব্যাপক সাড়া, কি বলছেন এক্সপার্টরা?

অ্যান্ড্রয়েড প্রযুক্তি June 20, 2024

Modi 3.0: কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভায় কেন জায়গা পেলেন না মুসলিমরা? [রাজনৈতিক পর্যালোচনা]

দেশের রাজনীতি ভারত June 20, 2024

১৯৮৭ সালের পর লজ্জাজনক ইতিহাস গড়লো নিউজিল্যান্ড

ক্রিকেট খেলাধুলো June 20, 2024

© 2025 All Rights reserved | Powered by Thinkbengal

আমাদের সম্পর্কে   যোগাযোগ  গোপনীয়তা নীতি   সংশোধন নীতি

Welcome to Foxiz

Lost your password?