Gmail delayed email sending: ইমেইল! বর্তমান যুগে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। অফিসের বসকে জরুরি কোনো মেইল হোক, কিংবা প্রিয় বন্ধুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, ইমেইল ছাড়া যেন আজকাল জীবন অচল। কিন্তু অনেক সময় এমন হয়, মেইলটা এক্ষুনি লেখার দরকার, কিন্তু পাঠানোর সময়টা একটু পরে হলেই ভালো হয়। হয়তো আপনি চাচ্ছেন, আপনার বন্ধু যখন ঘুম থেকে উঠবে, ঠিক তখনই তার কাছে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তাটি পৌঁছাক। কিন্তু সেই সময় পর্যন্ত জেগে থাকা আপনার পক্ষে সম্ভব নয়।
তাহলে উপায়?
চিন্তা নেই! জিমেইল আপনাকে দিচ্ছে ই-মেইল শিডিউল করার সুবিধা। এই ফিচারের মাধ্যমে আপনি আপনার ইমেইলগুলো সময়মতো পাঠানোর জন্য আগে থেকেই সেট করে রাখতে পারবেন। ধরুন, আপনি ছুটির দিনে অফিসের কিছু কাজ গুছিয়ে রাখতে চান, কিন্তু চান না সেগুলো তখনই কলিগদের কাছে যাক। সেক্ষেত্রে শিডিউল করে রাখলে নির্দিষ্ট সময়েই সেই ইমেইলগুলো পৌঁছে যাবে, আর আপনার ছুটির মেজাজও বজায় থাকবে। কিভাবে জিমেইলে ইমেইল শিডিউল করবেন, সেই নিয়েই আজকের আলোচনা।
জিমেইলে ইমেইল শিডিউল করা খুবই সহজ। কয়েকটা ধাপ অনুসরণ করলেই আপনি আপনার ইমেইল শিডিউল করতে পারবেন:
১. প্রথমে আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলে জিমেইল খুলুন।
২. “Compose” (“কম্পোজ”)-এ ক্লিক করে নতুন একটি ইমেইল তৈরি করুন।
৩. যাকে মেইল পাঠাতে চান তার ইমেইল ঠিকানা, বিষয় এবং আপনার বার্তা লিখুন।
৪. Send (“সেন্ড”) বাটনের পাশে একটি ছোট ত্রিকোণাকার চিহ্ন দেখতে পাবেন। এই চিহ্নটিতে ক্লিক করুন।
৫. একটি ড্রপ-ডাউন মেনু আসবে, যেখানে “Schedule send” (“শিডিউল সেন্ড”) অপশনটি নির্বাচন করুন।
৬. এখানে আপনি কয়েকটি ডিফল্ট সময় দেখতে পাবেন, যেমন: “Tomorrow morning”, “Tomorrow afternoon” ইত্যাদি। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী একটি সময় নির্বাচন করতে পারেন, অথবা “Pick date & time” (“পিক ডেট অ্যান্ড টাইম”) অপশনটি ব্যবহার করে নিজের পছন্দসই তারিখ এবং সময় সেট করতে পারেন।
৭. তারিখ এবং সময় নির্বাচন করার পরে, “Schedule send” (“শিডিউল সেন্ড”) বাটনে ক্লিক করুন।
ব্যাস! আপনার ইমেইলটি শিডিউল করা হয়ে গেল। নির্দিষ্ট সময়ে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপকের কাছে পৌঁছে যাবে।
যদি আপনার শিডিউল করা ইমেইলে কোনো পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়, অথবা আপনি যদি সেটি বাতিল করতে চান, তবে সেটিও করতে পারবেন খুব সহজে।
১. জিমেইলের বাম দিকে “Scheduled” (“শিডিউলড”) অপশনটিতে ক্লিক করুন। এখানে আপনি আপনার শিডিউল করা ইমেইলগুলো দেখতে পাবেন।
২. যে ইমেইলটি এডিট বা বাতিল করতে চান, সেটির উপর ক্লিক করুন।
৩. ইমেইলটি খোলার পরে, উপরে “Cancel send” (“ক্যানসেল সেন্ড”) অপশন দেখতে পাবেন। এখানে ক্লিক করলে ইমেইলটি বাতিল হয়ে যাবে এবং সেটি আবার ড্রাফট হিসেবে সেভ হবে।
৪. এখন আপনি ইমেইলটি এডিট করে আবার শিডিউল করতে পারবেন, অথবা চাইলে ডিলিটও করে দিতে পারেন।
জিমেইলে ইমেইল শিডিউল করার অনেক সুবিধা রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো:
ইমেইল শিডিউলিংয়ের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করতে কিছু টিপস জেনে রাখা ভালো:
জিমেইল ব্যবহার করার সময় আপনি আরো কিছু টিপস অনুসরণ করতে পারেন, যা আপনার ইমেইল অভিজ্ঞতা আরও সহজ করে তুলবে:
জিমেইলের কিছু কাস্টমাইজেশন অপশন রয়েছে, যা আপনার অভিজ্ঞতা আরও ভালো করতে পারে:
জিমেইল ব্যবহারের সময় কিছু নিরাপত্তা টিপস অনুসরণ করা উচিত:
জিমেইল ব্যবহার নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন এবং তার উত্তর নিচে দেওয়া হলো:
উত্তর: জিমেইলে একটি ইমেইল শিডিউল করতে, “Compose”-এ ক্লিক করে নতুন ইমেইল তৈরি করুন, প্রাপকের ঠিকানা এবং বার্তা লিখুন, তারপর “Send”-এর পাশের ত্রিকোণাকার চিহ্নটিতে ক্লিক করে “Schedule send” অপশনটি নির্বাচন করুন এবং আপনার পছন্দসই তারিখ ও সময় সেট করুন।
উত্তর: শিডিউল করা ইমেইল বাতিল করতে, জিমেইলের বাম দিকে “Scheduled” অপশনে ক্লিক করুন, ইমেইলটি খুলুন এবং “Cancel send” অপশনটিতে ক্লিক করুন।
উত্তর: হ্যাঁ, আপনি যত খুশি ইমেইল একসাথে শিডিউল করতে পারেন। প্রতিটি ইমেইলের জন্য আলাদা সময় সেট করতে হবে।
উত্তর: হ্যাঁ, শিডিউল করা ইমেইল আপনার সেট করা নির্দিষ্ট সময়েই পাঠানো হবে, যতক্ষণ না আপনার ইন্টারনেট সংযোগ স্থিতিশীল থাকে।
উত্তর: জিমেইলে ফিল্টার তৈরি করতে, সেটিংস-এ যান, “Filters and Blocked Addresses” অপশনটি নির্বাচন করুন, তারপর “Create a new filter”-এ ক্লিক করে আপনার ফিল্টার তৈরি করুন।
উত্তর: জিমেইলে লেবেল ব্যবহার করে আপনি আপনার ইমেইলগুলো বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সাজিয়ে রাখতে পারেন, যা আপনার ইনবক্সকে পরিপাটি রাখতে সাহায্য করে।
উত্তর: জিমেইলের স্মার্ট কম্পোজ একটি সহায়ক ফিচার, যা আপনার লেখার ধরন অনুযায়ী শব্দ এবং বাক্য সাজেস্ট করে, जिससे আপনি দ্রুত এবং সহজে ইমেইল লিখতে পারেন।
উত্তর: জিমেইলের অফলাইন মোড ব্যবহার করতে, সেটিংস-এ যান, “Offline” অপশনটি নির্বাচন করুন এবং “Enable offline mail” অপশনটি চালু করুন।
উত্তর: জিমেইল অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন, টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন এবং সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
উত্তর: জিমেইলে কাস্টম সিগনেচার তৈরি করতে, সেটিংস-এ যান, “General” অপশনটি নির্বাচন করুন, তারপর “Signature” সেকশনে আপনার সিগনেচার লিখুন এবং সেভ করুন।
জিমেইলে ইমেইল শিডিউল করার এই কৌশলগুলো আপনার দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ করে তুলবে। সময় সাশ্রয় থেকে শুরু করে সঠিক সময়ে যোগাযোগ স্থাপন, সবকিছুই এখন আপনার হাতের মুঠোয়। তাই, আর দেরি না করে আজই জিমেইলের এই অসাধারণ ফিচার ব্যবহার করা শুরু করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার মূল্যবান মতামত এবং জিজ্ঞাসা আমাদের জানাতে ভুলবেন না। হ্যাপি ইমেইলিং!