মৌনী অমাবস্যা ২০২৫: কালো তিলের মাধ্যমে দূর হবে অভাব, আসবে সমৃদ্ধি! জেনে নিন দিনক্ষণ ও বিশেষ রীতিনীতি

Special traditions of Mauni Amavasya: আগামী ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ বুধবার মৌনী অমাবস্যা পালিত হবে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, মাঘ মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই পবিত্র দিনটি উদযাপিত হয়। মৌনী অমাবস্যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের…

Avatar

 

Special traditions of Mauni Amavasya: আগামী ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ বুধবার মৌনী অমাবস্যা পালিত হবে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, মাঘ মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই পবিত্র দিনটি উদযাপিত হয়। মৌনী অমাবস্যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এদিন নীরবতা পালন, পূর্বপুরুষদের স্মরণ এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ করার সুযোগ পাওয়া যায়

মৌনী অমাবস্যার তাৎপর্য

মৌনী অমাবস্যার “মৌনী” শব্দটি এসেছে সংস্কৃত “মৌন” শব্দ থেকে, যার অর্থ নীরবতা। এদিন মৌন ব্রত পালন করে আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এদিন গঙ্গা নদীর জল অমৃতে পরিণত হয়, তাই পবিত্র নদীতে স্নান করে পাপমুক্ত হওয়া যায়।

মৌনী অমাবস্যার গুরুত্ব:

  • আধ্যাত্মিক উন্নতি ও আত্মশুদ্ধির সুযোগ
  • পূর্বপুরুষদের স্মরণ ও তাঁদের আশীর্বাদ লাভ
  • পাপমোচন ও মোক্ষ প্রাপ্তির পথ সুগম করা
  • মনের শান্তি ও একাগ্রতা বৃদ্ধি

মৌনী অমাবস্যা ২০২৫: দিনক্ষণ

বিষয় সময়
তারিখ ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ (বুধবার)
অমাবস্যা তিথি আরম্ভ ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৫
অমাবস্যা তিথি শেষ ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৫
ব্রহ্ম মুহূর্ত ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:২৫ থেকে ৬:১৮

মৌনী অমাবস্যার রীতিনীতি

১. পবিত্র স্নান:

গঙ্গা, যমুনা বা অন্য পবিত্র নদীতে স্নান করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রীতি। বিশেষ করে প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করা অত্যন্ত পুণ্যজনক বলে মনে করা হয়।

২. মৌন ব্রত:

সারাদিন নীরবতা পালন করা হয়। এটি মনকে শান্ত ও একাগ্র করতে সাহায্য করে।

৩. পিতৃ তর্পণ:

পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল, খাদ্য ও মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

৪. দান-ধ্যান:

দরিদ্র ও প্রয়োজনীয়দের দান করা এবং ধ্যান করা পুণ্যের কাজ বলে বিবেচিত হয়।

৫. হোম ও যজ্ঞ:

অগ্নিতে পবিত্র দ্রব্য অর্পণ করে হোম বা যজ্ঞ করা হয়, যা পরিবারে সমৃদ্ধি ও সুখ আনে বলে বিশ্বাস করা হয়।

কালো তিলের ব্যবহার

মৌনী অমাবস্যায় কালো তিল ব্যবহার করে বিশেষ অনুষ্ঠান করলে অভাব দূর হয় এবং সমৃদ্ধি আসে বলে বিশ্বাস করা হয়। এর জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে:

  • স্নানের পর এক মুঠো কালো তিল নিয়ে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য দিন
  • কালো তিলের তৈল দিয়ে প্রদীপ জ্বালান
  • কালো তিল মিশ্রিত জল দিয়ে তুলসী গাছে জল দিন
  • কালো তিল দান করুন

এই রীতিগুলি পালন করলে আর্থিক সমৃদ্ধি আসবে বলে মনে করা হয়।

শনির প্রভাব থেকে মুক্তি

মৌনী অমাবস্যায় বিশেষ পূজা ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শনি গ্রহের কুপ্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। এজন্য:

  • কালো বস্ত্র পরিধান করুন
  • শনি মন্ত্র জপ করুন
  • কালো তিল, তেল বা সরিষা দান করুন
  • শনিবারে উপবাস করুন

এই উপায়গুলি অবলম্বন করলে শনির মহাদশার প্রভাব কমে যাবে বলে মনে করা হয়।

আর্থিক সমৃদ্ধির উপায়

মৌনী অমাবস্যায় কিছু বিশেষ অনুষ্ঠান পালন করলে আর্থিক সমৃদ্ধি আসে বলে বিশ্বাস করা হয়:

  • লক্ষ্মী-নারায়ণ পূজা করুন
  • কুবের যন্ত্র স্থাপন করুন
  • গোমাতাকে খাদ্য দান করুন
  • তুলসী গাছে জল দিন
  • দরিদ্রদের অন্নদান করুন

এই রীতিগুলি পালন করলে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হয়।

মৌনী অমাবস্যার তাৎপর্য

মৌনী অমাবস্যা শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি আত্মোন্নতি ও আধ্যাত্মিক জাগরণের একটি সুযোগ। এদিন পালিত নীরবতা মানুষকে নিজের অন্তরের গভীরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। পবিত্র স্নান, ধ্যান ও দানের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে শুদ্ধ করে তোলে।মৌনী অমাবস্যার গুরুত্ব:

  • আত্মচিন্তন ও আত্মবিশ্লেষণের সুযোগ
  • মানসিক শান্তি ও স্থিরতা অর্জন
  • নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ জাগরণ
  • সামাজিক সম্প্রীতি ও ঐক্য বৃদ্ধি

মৌনী অমাবস্যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিন পালিত বিভিন্ন রীতিনীতি মানুষকে আধ্যাত্মিক উন্নতি ও মানসিক শান্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। নীরবতা, ধ্যান ও দানের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে শুদ্ধ করে তোলে এবং জীবনের গভীর অর্থ অনুধাবন করতে শেখে। তাই আসুন, আগামী ২৯ জানুয়ারি ২০২৫-এর মৌনী অমাবস্যায় আমরা সবাই মিলে এই পবিত্র দিনটি যথাযথভাবে পালন করি এবং জীবনে নতুন আলোর সন্ধান পাই।

About Author
Avatar

আমাদের স্টাফ রিপোর্টারগণ সর্বদা নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে আপনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে পারেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতিশ্রুতি আমাদের ওয়েবসাইটকে একটি বিশ্বস্ত তথ্যের উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।তারা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্টিংয়ে বিশ্বাসী, দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন তৈরিতে সক্ষম