Motorcycle servicing frequency: মোটরসাইকেল চালকদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল – কত দিন পর পর বাইক সার্ভিসিং করানো উচিত? এই প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলে আপনি আপনার প্রিয় দুই চাকার যানটিকে দীর্ঘদিন ভালো অবস্থায় রাখতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত সার্ভিসিং করালে মোটরসাইকেলের কর্মক্ষমতা ও আয়ু বাড়ে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে। তবে সার্ভিসিংয়ের সময়সীমা নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের উপর।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত প্রতি ২-৩ মাস অন্তর বা প্রতি ১৫০০-২০০০ কিলোমিটার চালানোর পর মোটরসাইকেল সার্ভিসিং করানো উচিত। তবে এটা নির্ভর করে আপনি কতটা নিয়মিত বাইক চালান তার উপর। যারা প্রতিদিন বাইক চালান তাদের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা কম হতে পারে। আবার যারা খুব কম চালান তাদের ক্ষেত্রে ৪-৬ মাস পর পর সার্ভিসিং করালেও চলবে।
বৃষ্টির দিনে বাইক রক্ষা করতে ৫টি কার্যকর টিপস
মোটরসাইকেল নির্মাতা কোম্পানিগুলো সাধারণত প্রথম সার্ভিসিং ৫০০-১০০০ কিলোমিটার চালানোর পর করার পরামর্শ দেয়। এরপর থেকে নিয়মিত সার্ভিসিং করাতে হয়। বাজাজ অটো লিমিটেডের একজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, “প্রথম সার্ভিসিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে ইঞ্জিনের বিভিন্ন পার্টস ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তী সার্ভিসিংগুলো নিয়মিত করাতে হবে যাতে বাইকের কর্মক্ষমতা ঠিক থাকে।”বাইক সার্ভিসিংয়ের সময়সীমা নির্ধারণে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করা হয়:
বিষয় | সার্ভিসিংয়ের সময়সীমা |
---|---|
নিয়মিত ব্যবহার | প্রতি ২-৩ মাস বা ১৫০০-২০০০ কিমি |
কম ব্যবহার | প্রতি ৪-৬ মাস |
প্রথম সার্ভিসিং | ৫০০-১০০০ কিমি চালানোর পর |
কঠোর পরিবেশে ব্যবহার | আরও ঘন ঘন |
পুরনো মডেল | ৩-৪ মাস পর পর |
হিরো মোটোকর্প লিমিটেডের একজন কারিগরি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, “নিয়মিত সার্ভিসিং করালে বাইকের ইঞ্জিন ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ ভালো থাকে। এতে জ্বালানি সাশ্রয় হয় এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে। তাই সময়মতো সার্ভিসিং করানো উচিত।”বাইক সার্ভিসিংয়ের সময় যে কাজগুলো করা হয় তার মধ্যে রয়েছে:
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “নিয়মিত সার্ভিসিং না করালে বাইকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। তাই আমরা সব মোটরসাইকেল চালককে নিয়মিত সার্ভিসিং করানোর পরামর্শ দিই।”বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইকের মডেল ও ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী সার্ভিসিংয়ের সময়সীমা কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। যেমন:
এছাড়া যেসব এলাকায় ধুলাবালি বেশি বা রাস্তাঘাট খারাপ, সেখানে আরও ঘন ঘন সার্ভিসিং করানো প্রয়োজন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, “নিয়মিত সার্ভিসিং করালে বাইকের ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা ভালো থাকে। এতে জ্বালানি খরচ কমে এবং পরিবেশ দূষণও কম হয়। তাই প্রতিটি মোটরসাইকেল মালিকের উচিত নির্দিষ্ট সময় পর পর বাইক সার্ভিসিং করানো।”বাইক সার্ভিসিং না করালে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে:
বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএএমএ) সভাপতি বলেন, “দেশে মোটরসাইকেলের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। কিন্তু অনেক চালক নিয়মিত সার্ভিসিং করান না। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। আমরা সব চালককে নিয়মিত সার্ভিসিং করানোর আহ্বান জানাই।”পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত মোটরসাইকেল রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৩০-৪০ শতাংশ চালক নিয়মিত সার্ভিসিং করান। বাকিরা অনিয়মিতভাবে বা কোনো সমস্যা দেখা দিলে সার্ভিসিং করান।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত সার্ভিসিং করালে যেমন বাইকের আয়ু বাড়ে, তেমনি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও কমে। এছাড়া পরিবেশ দূষণও কম হয়। তাই প্রতিটি মোটরসাইকেল চালকের উচিত নির্ধারিত সময় পর পর বাইক সার্ভিসিং করানো।মোটরসাইকেল সার্ভিসিংয়ের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত:
শেষ কথা হল, নিয়মিত সার্ভিসিং করালে আপনার মোটরসাইকেল দীর্ঘদিন ভালো অবস্থায় থাকবে। এতে আপনার নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। তাই প্রতি ২-৩ মাস পর পর বা ১৫০০-২০০০ কিলোমিটার চালানোর পর অবশ্যই বাইক সার্ভিসিং করান। এতে আপনার প্রিয় দুই চাকার যানটি সব সময় ফিট থাকবে।