Mutual fund returns 7531 rule: মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে অনেকেই বেশি রিটার্ন পেতে চান। কিন্তু সঠিক কৌশল না জানলে সেটা সম্ভব নয়। তাই বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করছেন ৭-৫-৩-১ নিয়ম মেনে চলার। এই নিয়ম অনুসরণ করলে দীর্ঘমেয়াদে ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।৭-৫-৩-১ নিয়মটি হল একটি বিনিয়োগ কৌশল যা মিউচুয়াল ফান্ডে Systematic Investment Plan (SIP) এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। এই নিয়মের প্রতিটি সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে নির্দেশ করে:
৭ – কমপক্ষে ৭ বছরের জন্য বিনিয়োগ করুন
৫ – পাঁচটি বিভিন্ন ধরনের ফান্ডে বিনিয়োগ করুন
৩ – তিনটি মানসিক চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকুন
১ – প্রতি বছর SIP পরিমাণ বাড়ান
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ৭টি অসাধারণ সুবিধা যা আপনার অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে
আসুন এবার বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক এই নিয়মগুলি সম্পর্কে:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইক্যুইটি বাজারে কমপক্ষে ৭ বছরের জন্য বিনিয়োগ করা উচিত। কারণ দীর্ঘমেয়াদে বাজারের উত্থান-পতন সামলে নেওয়া সম্ভব হয়। গত ২২ বছরের হিসাব দেখলে দেখা যায়, ১ বছরের মেয়াদে নিফটি ৫০ TRI মাত্র ৫৮% সময় ১০% এর বেশি রিটার্ন দিয়েছে। কিন্তু ৭ বছরের মেয়াদে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০%। অর্থাৎ যত বেশি সময় বিনিয়োগ করা যায়, ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।ITI
মিউচুয়াল ফান্ডের অ্যাক্টিং CEO হিতেশ ঠাক্কর বলেন, “৭ বছরের মেয়াদে বিনিয়োগ করলে কম্পাউন্ডিং এর সুবিধা পাওয়া যায়। এছাড়া বাজারের বিভিন্ন চক্র পার করে যাওয়ার সুযোগ থাকে, যা ইতিবাচক রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।”৫টি ক্যাটাগরিতে বিনিয়োগের নিয়ম:
বিনিয়োগের ঝুঁকি কমাতে একাধিক ধরনের ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিত। ৫-ফিঙ্গার স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী নিম্নলিখিত ৫টি ক্যাটাগরিতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে:
১. উচ্চ মানের স্টক
২. ভ্যালু স্টক
৩. উচ্চ বৃদ্ধির মার্জিন সম্পন্ন স্টক
৪. যুক্তিসঙ্গত দামের স্টক
৫. লার্জ, মিড ও স্মল ক্যাপ ফান্ডএই ৫টি ক্যাটাগরিতে বিনিয়োগ করলে পোর্টফোলিওর ঝুঁকি কমে যায়। গত ১০ বছরে এই কৌশল নিফটি ৫০ TRI-কে ৪% পরাজিত করেছে। COVID ক্র্যাশের সময়ও এই কৌশল -২৮% রিটার্ন দিয়েছিল, যখন নিফটি ৫০ TRI -৩৮% পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল।
বিনিয়োগকারীদের ৩টি সাধারণ মানসিক চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে:
১. হতাশার পর্যায়: যখন রিটার্ন ৭-১০% এর মধ্যে থাকে
২. বিরক্তির পর্যায়: যখন রিটার্ন ০-৭% এর মধ্যে থাকে
৩. আতঙ্কের পর্যায়: যখন রিটার্ন নেগেটিভ হয়ইক্যুইটি বাজারের অস্থিরতার কারণে এই পর্যায়গুলি স্বাভাবিক। গত ৪২ বছরের ভারতীয় বাজারের ইতিহাসে প্রতি বছরই ১০-২০% পতন দেখা গেছে। তবে পরবর্তী ১-৩ বছরে বাজার পুনরুদ্ধার হয়ে উন্নত রিটার্ন দিয়েছে। তাই এই পর্যায়গুলিতে ধৈর্য ধরে থাকা জরুরি।
প্রতি বছর SIP এর পরিমাণ বাড়ানো উচিত। এটি একটি শক্তিশালী কৌশল যা আপনার মূলধনকে দ্রুত বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতি বছর ১০% SIP বাড়ালে ২০ বছরে পোর্টফোলিওর মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। গিওজিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্টে গ্রস SIP ইনফ্লো ২৩,৫৪৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা গত ৩ মাসের গড় থেকে ৭.৮% বেশি। গড় SIP সাইজ ২৪৫০ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৭.৯% বেশি।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের সর্বনিম্ন পরিমাণ: ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করতে পারেন
১. দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়
২. পোর্টফোলিও ঝুঁকি কমে
৩. বাজারের উত্থান-পতন সামলানো যায়
৪. নিয়মিত বিনিয়োগের অভ্যাস গড়ে ওঠে
৫. কম্পাউন্ডিং এর সুবিধা পাওয়া যায়
তবে মনে রাখতে হবে, মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বিনিয়োগের আগে সব ডকুমেন্ট ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে আর্থিক পরামর্শদাতার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। ৭-৫-৩-১ নিয়ম মিউচুয়াল ফান্ডে SIP এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি কার্যকর কৌশল। এই নিয়ম মেনে চললে দীর্ঘমেয়াদে ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে বিনিয়োগের আগে নিজের আর্থিক লক্ষ্য ও ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। নিয়মিত বিনিয়োগ ও ধৈর্য ধরে থাকলে এই কৌশল আপনাকে আর্থিক লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।
মন্তব্য করুন