Operation Devil Hunt: গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দেশজুড়ে “অপারেশন ডেভিল হান্ট” নামে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু করেছে। গাজীপুরসহ সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, সহিংসতার ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ব্রিফিংয়ে অভিযানের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।
ঘটনার পূর্ণ বিবরণ
গাজীপুর হামলা: যা ঘটেছে
- ঘটনার সূত্রপাত: শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে গাজীপুরের ধীরাস্রামে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হকের বাসভবনে ভাঙচাল চালানোর চেষ্টা করে একদল লোক। স্থানীয় মসজিদের লাউডস্পিকারে “ডাকাতি” হওয়ার ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
- ছাত্র-জনতার ওপর হামলা: অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্টের কর্মীরা দাবি করেছে, তারা মোজাম্মেল হকের বাড়ি লুটপাট রোধ করতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক ও গুন্ডাদের হামলার শিকার হন। পুলিশের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছে তারা।
- হতাহত: এই ঘটনায় কমপক্ষে ১৫-২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অরুণাচলের অনারোহিত শিখরে ঐতিহাসিক অভিযান: ২০,৯০০ ফুট উচ্চতার পর্বতশৃঙ্গে জয়
সারাদেশে সহিংসতার ছোবল
- ঐতিহাসিক ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের হামলা: বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচাল ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
- আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে আক্রমণ: গত তিন দিনে দেশের ৩৫টি জেলায় প্রায় ৭০টি বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে। এসব লক্ষ্যস্থলের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের।
সরকার ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার পদক্ষেপ
অপারেশন ডেভিল হান্টের কৌশল
- যৌথ বাহিনীর তৎপরতা: সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। গাজীপুর থেকে শুরু করে সারাদেশে সন্দেহভাজন ষড়যন্ত্রকারীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
- গ্রেপ্তার ও তদন্ত: গাজীপুর সদর থানার ওসি আরিফুর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্বহীনতার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা দায়েরের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিক্রিয়া ও প্রতিশ্রুতি
- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী: “গাজীপুর হামলায় জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে”।
- মুহাম্মদ ইউনুসের বিবৃতি: “আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কারও সম্পত্তি নষ্ট করা যাবে না।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও চ্যালেঞ্জ
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার ভূমিকা
- নির্বাসিত নেত্রী: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। তার অনুপস্থিতিতেই দেশে সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ।
- দলীয় নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগ: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি, আওয়ামী লীগ নেতারা গাজীপুর হামলাসহ বিভিন্ন ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত।
প্রতিপক্ষের অবস্থান
- বিএনপির সমালোচনা: খালেদা জিয়ার দল বিএনপি সরকারের প্রতি “মব কালচার” বন্ধ এবং আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, এই অরাজকতা “বৃহত্তর ষড়যন্ত্র” এর অংশ।
- ছাত্র সংগঠনের দাবি: অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন মুভমেন্টের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম:
১. আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল
২. শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার
৩. দুর্নীতিবাজ নেতাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ
অভিযানের সম্ভাব্য প্রভাব
- স্থিতিশীলতা ফিরবে?: বিশ্লেষকদের মতে, অপারেশন ডেভিল হান্টের সফলতা নির্ভর করছে সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিনির্ধারণ ও রাজনৈতিক ইচ্ছার উপর
- আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ: প্রতিবেশী ভারতসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের হামলা আন্তর্জাতিক মনোযোগ কেড়েছে।
Indian Historical Event: ২ রা জুলাই ভারতের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন
পরিসংখ্যান ও ডেটা
| বিষয় | তথ্য | |
|---|---|---|
| আহতের সংখ্যা | ১৫-২০ (গাজীপুর) | |
| জেলা受影响 | ৩৫টি | |
| হামলার ঘটনা | ৭০+ | |
| অভিযানের সময়সীমা | অনির্দিষ্ট |
Operation Devil Hunt বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তবে এই অভিযান কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে সরকারের সুষ্ঠু তদন্ত, স্বচ্ছতা এবং সকল রাজনৈতিক শক্তির সমন্বিত প্রচেষ্টার উপর। গাজীপুর থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান শুধু আইন-শৃঙ্খলা ফেরানোই নয়, বরং একটি সুশাসিত বাংলাদেশের প্রত্যাশাকেই প্রতিফলিত করে।
