সংকট মোচন হনুমান মন্ত্র: জীবনের সব বাধা দূর করতে জপ করুন এই শক্তিশালী মন্ত্র

Hanuman mantra for strength: হিন্দু ধর্মে হনুমানজি সংকটমোচন দেবতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর আরাধনা করলে জীবনের সব বাধা-বিপত্তি দূর হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। বিশেষ করে মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করা হয়।…

Avatar

 

Hanuman mantra for strength: হিন্দু ধর্মে হনুমানজি সংকটমোচন দেবতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর আরাধনা করলে জীবনের সব বাধা-বিপত্তি দূর হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। বিশেষ করে মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করা হয়।

কিন্তু শুধু পুজো করলেই হবে না, হনুমানজির মন্ত্র জপ করলে তাঁর আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এমন কিছু বিশেষ হনুমান মন্ত্র রয়েছে যা জপ করলে জীবনের সব সমস্যা দূর হয় বলে মনে করা হয়।হনুমানজির সবচেয়ে শক্তিশালী মন্ত্র হল “ওম হং হনুমতে রুদ্রাত্মকায় হুং ফট”। এই মন্ত্রটি নিয়মিত জপ করলে হনুমানজি প্রসন্ন হন এবং ভক্তের সব মনোবাসনা পূরণ করেন বলে বিশ্বাস করা হয়। বিশেষ করে মঙ্গলবার সকালে স্নান করে এই মন্ত্রটি ১১ বার জপ করলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়।এছাড়াও আরও কিছু শক্তিশালী হনুমান মন্ত্র রয়েছে যেগুলি জপ করলে বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন:

“ওম হং হনুমন্তে নমঃ” –

এই মন্ত্রটি জপ করলে ভয় দূর হয় এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে।”

ওম নমো হনুমতে রুদ্রাবতারায় সর্বশত্রুসংহারণায় সর্বরোগ হরায় সর্ববশীকরণায় রামদূতায় স্বাহা” –

এই মন্ত্রটি জপ করলে শত্রু পরাজিত হয় এবং রোগ-ব্যাধি দূর হয়।
Surya Mantra in Bengali: রবিবারে এই শক্তিশালী মন্ত্র জপ করলে জীবনে আসবে সাফল্য ও সমৃদ্ধি

“নমো ভগবতে আঞ্জনেয়ায়ে মহাবলায়ে স্বাহা” –

এই মন্ত্রটি জপ করলে শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।”

ওম দক্ষিণমুখায় পচ্চমুখ হনুমতে করালবদনায়” –

এই মন্ত্রটি জপ করলে সব বাধা-বিঘ্ন দূর হয়।হনুমান মন্ত্র জপের সময় কিছু বিশেষ নিয়ম মেনে চলা উচিত। যেমন:

  • মন্ত্র জপের আগে স্নান করে পবিত্র হওয়া উচিত।
  • লাল রঙের পোশাক পরে মন্ত্র জপ করা ভালো।
  • হনুমানজির মূর্তি বা ছবির সামনে বসে মন্ত্র জপ করতে হবে।
  • মন্ত্র জপের সময় মনে একাগ্রতা বজায় রাখতে হবে।
  • নিয়মিত একই সময়ে মন্ত্র জপ করা উচিত।

হনুমান মন্ত্র জপের ফলে নানা উপকার পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। যেমন:

  • মানসিক শান্তি বাড়ে
  • আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়
  • কর্মক্ষেত্রে উন্নতি হয়
  • শত্রু পরাজিত হয়
  • রোগ-ব্যাধি দূর হয়
  • আর্থিক সমৃদ্ধি আসে
  • বিবাহ সংক্রান্ত সমস্যা মিটে যায়
  • সন্তান প্রাপ্তি হয়

তবে শুধু মন্ত্র জপ করলেই হবে না, সেই সঙ্গে সৎ পথে চলতে হবে এবং মানুষের সেবা করতে হবে। তাহলেই হনুমানজির আশীর্বাদ পাওয়া যাবে। হনুমানজি ছিলেন রামভক্ত, তাই তাঁর ভক্তদেরও সেই পথে চলতে হবে।হনুমান মন্ত্র জপের সময় কিছু বিষয় মনে রাখা উচিত:

  • হনুমানজি ছিলেন ব্রহ্মচারী, তাই তাঁর পুজোর সময় ব্রহ্মচর্য পালন করতে হয়।
  • হনুমানজির মূর্তি স্পর্শ করা উচিত নয়।
  • হনুমানজির পুজোয় চরণামৃত ব্যবহার করা হয় না।
  • ভাঙা বা খণ্ডিত মূর্তি ব্যবহার করা উচিত নয়।
  • ছেঁড়া ছবি সরিয়ে ফেলতে হবে।
    গণেশ মন্ত্রের অলৌকিক শক্তি: জীবনের সকল সমস্যার সমাধান এক মন্ত্রে!

হনুমানজির আরাধনা করলে জীবনের সব সমস্যা দূর হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। কিন্তু সেই সঙ্গে নিজের কর্তব্য পালন করতে হবে। শুধু মন্ত্র জপ করলেই হবে না, সেই সঙ্গে সৎ পথে চলতে হবে এবং মানুষের সেবা করতে হবে। তাহলেই হনুমানজির আশীর্বাদ পাওয়া যাবে।হনুমানজি ছিলেন অসীম শক্তির অধিকারী। তিনি ছিলেন বায়ুপুত্র, তাই তাঁর গতি ছিল বাতাসের মতো দ্রুত। তিনি একাই লঙ্কা দহন করেছিলেন। তিনি পর্বত তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন লক্ষ্মণের জন্য সঞ্জীবনী বুটি আনতে। এত শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও তিনি ছিলেন বিনয়ী এবং রামভক্ত। তাই হনুমানজির আরাধনা করলে শুধু শক্তি নয়, বিনয়ও শেখা যায়।হনুমানজির জীবন থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। যেমন:

  • ভক্তি ও সমর্পণ
  • সাহস ও বীরত্ব
  • বুদ্ধিমত্তা
  • বিনয় ও নম্রতা
  • সেবা মনোভাব
  • একাগ্রতা
  • আত্মবিশ্বাস

হনুমানজির এই গুণগুলি আয়ত্ত করতে পারলে জীবনে সফলতা আসবেই। তাই শুধু মন্ত্র জপ নয়, হনুমানজির জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের জীবনকে সুন্দর করে তোলা উচিত।হনুমানজির আরাধনা করার জন্য বিশেষ কোনো দিন বা সময়ের প্রয়োজন নেই। যে কোনো সময় তাঁর নাম জপ করা যায়। তবে মঙ্গলবার ও শনিবার হনুমানজির পুজো করা বিশেষ ফলপ্রসূ বলে মনে করা হয়।

এছাড়া হনুমান জয়ন্তী উৎসবের দিন হনুমানজির বিশেষ পুজো করা হয়।হনুমানজির পুজোর জন্য লাল চন্দন, লাল ফুল, লাল বস্ত্র ব্যবহার করা হয়। তাঁকে লাডডু নৈবেদ্য হিসেবে দেওয়া হয়। হনুমানজির মন্দিরে সিঁদুর চড়ানো হয়। অনেকে বাড়িতেও হনুমানজির মূর্তিতে সিঁদুর চড়ান।হনুমানজির আরাধনা করলে শুধু ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, সমাজের উন্নতিও হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। কারণ হনুমানজি ছিলেন সেবক। তিনি সবসময় অন্যের সেবা করতেন। তাই তাঁর ভক্তরাও যদি সেই পথে চলেন তাহলে সমাজের উন্নতি হবেই।

সারকথা, হনুমানজির মন্ত্র জপ করলে জীবনের সব সমস্যা দূর হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। কিন্তু সেই সঙ্গে সৎ পথে চলতে হবে এবং মানুষের সেবা করতে হবে। হনুমানজির জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের জীবনকে সুন্দর করে তোলা উচিত। তাহলেই হনুমানজির আশীর্বাদ পাওয়া যাবে এবং জীবনে সফলতা আসবে।

About Author
Avatar

আমাদের স্টাফ রিপোর্টারগণ সর্বদা নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে আপনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে পারেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতিশ্রুতি আমাদের ওয়েবসাইটকে একটি বিশ্বস্ত তথ্যের উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।তারা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্টিংয়ে বিশ্বাসী, দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন তৈরিতে সক্ষম