Best Photo Editing Software 2024: ডিজিটাল যুগে ফটোগ্রাফি এখন আর শুধুমাত্র ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। একটি ভালো ছবি তোলার পরেও সেটিকে আরও উন্নত করার জন্য ফটো এডিটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের ফটো এডিটিং সফটওয়্যার পাওয়া যায়, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ছবিগুলোকে নতুন মাত্রা দিতে পারেন।ফটো এডিটিং সফটওয়্যারের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী হলো Adobe Photoshop। এটি পেশাদার ফটোগ্রাফার থেকে শুরু করে শখের ফটোগ্রাফারদের কাছেও সমান জনপ্রিয়।
Photoshop এর মাধ্যমে আপনি ছবির রঙ সংশোধন, লেয়ার ব্যবহার করে জটিল এডিটিং, ছবি থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস মুছে ফেলা, নতুন এলিমেন্ট যোগ করাসহ প্রায় সব ধরনের এডিটিং করতে পারবেন। তবে এর ব্যবহার একটু জটিল এবং শিখতে সময় লাগে।যারা Photoshop এর মতো জটিল সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান না, তাদের জন্য Adobe Lightroom একটি চমৎকার বিকল্প।
গুগলের সেরা ৩টি ফটো এডিটিং অ্যাপ: আপনার ছবিগুলোকে চমৎকার করে
Lightroom মূলত RAW ফাইল প্রসেসিং এবং ফটো ম্যানেজমেন্টের জন্য ডিজাইন করা। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার ছবির এক্সপোজার, কনট্রাস্ট, সাচুরেশন ইত্যাদি অ্যাডজাস্ট করতে পারবেন। এছাড়া Lightroom এ রয়েছে শক্তিশালী ক্যাটালগিং সিস্টেম, যা দিয়ে আপনি হাজার হাজার ছবি সহজেই অর্গানাইজ করতে পারবেন।Windows ব্যবহারকারীদের জন্য Zoner Photo Studio X একটি দারুণ অপশন। এটি একটি অল-ইন-ওয়ান সফটওয়্যার যেখানে RAW প্রসেসিং, ফটো এডিটিং এবং ফটো অর্গানাইজিং – সবকিছুই একসাথে পাওয়া যায়। এর ইন্টারফেস বেশ ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং Photoshop এর মতো অনেক টুল এতে রয়েছে।স্টুডিও ফটোগ্রাফারদের জন্য Capture One Pro একটি শক্তিশালী সফটওয়্যার। এটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে হাই-এন্ড ক্যামেরার RAW ফাইল প্রসেস করার জন্য।
Capture One এর কালার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অসাধারণ এবং এটি দিয়ে আপনি খুব সূক্ষ্মভাবে আপনার ছবির রঙ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।যারা Adobe এর সাবস্ক্রিপশন মডেল পছন্দ করেন না, তাদের জন্য Affinity Photo 2 একটি চমৎকার বিকল্প। এটি একবার কিনলেই চিরকাল ব্যবহার করা যায়। Affinity Photo তে রয়েছে Photoshop এর প্রায় সব ফিচার, তবে দাম অনেক কম।RAW প্রসেসিংয়ের জন্য DxO PhotoLab 7 একটি দারুণ সফটওয়্যার। এর নয়েজ রিডাকশন এবং লেন্স করেকশন সিস্টেম অসাধারণ। DxO PhotoLab ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার RAW ফাইলগুলোকে সর্বোচ্চ মানের JPEG তে রূপান্তর করতে পারবেন।আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে ফটো এডিট করতে চাইলে Skylum Luminar NEO একটি চমৎকার অপশন। এর AI-পাওয়ার্ড টুলগুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই জটিল এডিটিং করতে পারবেন। যেমন স্কাই রিপ্লেসমেন্ট, পোর্ট্রেট রিটাচিং ইত্যাদি।
যারা বিনামূল্যে ফটো এডিট করতে চান, তাদের জন্য GIMP একটি দারুণ অপশন। এটি একটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার যা Photoshop এর অনেক ফিচার অফার করে। তবে এর ইন্টারফেস একটু জটিল এবং শিখতে সময় লাগে।RAW প্রসেসিংয়ের জন্য RawTherapee একটি বিনামূল্যের বিকল্প। এটিও একটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার যা দিয়ে আপনি উচ্চমানের RAW প্রসেসিং করতে পারবেন।স্মার্টফোনে ফটো এডিট করার জন্য Snapseed একটি দারুণ অ্যাপ। এটি Google এর তৈরি একটি বিনামূল্যের অ্যাপ যা Android এবং iOS উভয় প্ল্যাটফর্মেই পাওয়া যায়। Snapseed এর মাধ্যমে আপনি প্রায় সব ধরনের বেসিক এডিটিং করতে পারবেন।ফটো এডিটিং সফটওয়্যার নির্বাচনের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার। প্রথমত, আপনার দক্ষতার স্তর। যদি আপনি একজন শিক্ষানবিস হন, তাহলে Lightroom বা Luminar NEO এর মতো সহজ ইন্টারফেস সম্পন্ন সফটওয়্যার দিয়ে শুরু করা ভালো। আর যদি আপনি একজন অভিজ্ঞ ফটোগ্রাফার হন, তাহলে Photoshop বা Capture One Pro এর মতো অ্যাডভান্সড সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন।দ্বিতীয়ত, আপনার বাজেট।
Adobe এর সফটওয়্যারগুলো সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক, যা অনেকের কাছে খরচের দিক থেকে বেশি মনে হতে পারে। সেক্ষেত্রে Affinity Photo বা DxO PhotoLab এর মতো একবার কিনে চিরকাল ব্যবহার করা যায় এমন সফটওয়্যার বেছে নেওয়া যেতে পারে।তৃতীয়ত, আপনার কাজের ধরন। যদি আপনি মূলত RAW প্রসেসিং করেন, তাহলে Lightroom বা Capture One ভালো অপশন হতে পারে। আর যদি আপনি জটিল ফটো ম্যানিপুলেশন করেন, তাহলে Photoshop বা Affinity Photo বেছে নেওয়া যেতে পারে।চতুর্থত, আপনার কম্পিউটারের ক্ষমতা।
গুগল ফটোজে বিনামূল্যে এআই এডিটিং টুল: ছবি সম্পাদনায় নতুন যুগের সূচনা
Photoshop বা Capture One এর মতো ভারী সফটওয়্যার চালাতে শক্তিশালী কম্পিউটার প্রয়োজন। যদি আপনার কম্পিউটার তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী হয়, তাহলে Lightroom বা Luminar NEO এর মতো হালকা সফটওয়্যার ব্যবহার করা ভালো।সর্বশেষে, আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ। কোন সফটওয়্যারের ইন্টারফেস আপনার কাছে সহজ মনে হচ্ছে, কোনটা ব্যবহার করতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন – এগুলোও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়।ফটো এডিটিং সফটওয়্যার নিয়ে কিছু পরিসংখ্যান:
ফটো এডিটিং সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে এই মার্কেটের আকার ছিল ২৮.২ বিলিয়ন ডলার এবং ২০৩২ সাল নাগাদ এটি ৬৫.৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার (CAGR) ৯.৬%।
সামগ্রিকভাবে, ফটো এডিটিং সফটওয়্যার নির্বাচন একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আপনার প্রয়োজন, দক্ষতা এবং বাজেটের উপর নির্ভর করে আপনি সঠিক সফটওয়্যার বেছে নিতে পারেন। তবে যে সফটওয়্যারই বেছে নেন না কেন, মনে রাখবেন – ফটো এডিটিং একটি দক্ষতা যা অভ্যাস এবং অনুশীলনের মাধ্যমে উন্নত করতে হয়। তাই নিয়মিত অনুশীলন করুন এবং নতুন নতুন টেকনিক শিখুন।
মন্তব্য করুন