Pradhan Mantri Jan Dhan Yojana: আর্থিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি, মাত্র 5 মিনিটে খুলে নিন নিজের অ্যাকাউন্ট

Pradhan Mantri Jan Dhan Yojana Scheme: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী 2014 সালের 15ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে প্রথম জন ধন যোজনার ঘোষণা করেন। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের প্রতিটি পরিবারকে…

Srijita Chattopadhay

 

Pradhan Mantri Jan Dhan Yojana Scheme: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী 2014 সালের 15ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে প্রথম জন ধন যোজনার ঘোষণা করেন। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের প্রতিটি পরিবারকে ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় আনা। আজ, এই প্রকল্প ভারতের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে পরিগণিত হয়।

জন ধন যোজনা কি?

প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা (PMJDY) হল ভারত সরকারের একটি জাতীয় মিশন যা সাশ্রয়ী মূল্যে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে চায়। এর লক্ষ্য হল প্রতিটি পরিবারের জন্য অন্তত একটি মৌলিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নিশ্চিত করা, আর্থিক সাক্ষরতা বৃদ্ধি, ঋণের সুযোগ প্রদান, বীমা ও পেনশন সুবিধা দেওয়া।

সুবিধাসমূহ:

  1. জিরো ব্যালেন্স অ্যাকাউন্ট: PMJDY অ্যাকাউন্টগুলি শূন্য ব্যালেন্সে খোলা যায়, যা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।
  2. সুদের হার: এই অ্যাকাউন্টে জমাকৃত অর্থের উপর সাধারণ সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতোই সুদ প্রদান করা হয়। 2024 সালের এপ্রিল পর্যন্ত, এই হার সাধারণত 2.5% থেকে 3.5% এর মধ্যে।
  3. রুপে ডেবিট কার্ড: প্রতিটি অ্যাকাউন্টধারী বিনামূল্যে একটি রুপে ডেবিট কার্ড পান, যা ATM থেকে টাকা তোলা এবং ডিজিটাল লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা যায়।
  4. দুর্ঘটনা বীমা: PMJDY অ্যাকাউন্টধারীরা ₹2 লাখ পর্যন্ত দুর্ঘটনা বীমা কভারেজ পান।
  5. ওভারড্রাফট সুবিধা: নিয়মিত লেনদেন করা অ্যাকাউন্টগুলিতে ₹10,000 পর্যন্ত ওভারড্রাফট সুবিধা দেওয়া হয়।
  6. জীবন বীমা: ₹30,000 এর জীবন বীমা কভারেজ প্রদান করা হয় যোগ্য অ্যাকাউন্টধারীদের।
  7. পেনশন স্কিম: PMJDY অ্যাকাউন্টধারীরা অটল পেনশন যোজনার মতো সরকারি পেনশন স্কিমের সুবিধা পেতে পারেন।

যোগ্যতা:

  • ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
  • বয়স: 10 বছর বা তার বেশি।
  • প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কোনও আয়ের সীমা নেই।
  • নাবালকদের ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতি প্রয়োজন।

অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া:

  1. অনলাইনে আবেদন:
    • PMJDY-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
    • ‘অনলাইন অ্যাকাউন্ট খোলুন’ অপশনে ক্লিক করুন।
    • প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করুন।
    • স্ক্যান করা ডকুমেন্টস আপলোড করুন।
    • আবেদন জমা দিন এবং রেফারেন্স নম্বর সংরক্ষণ করুন।
  2. ব্যাংক শাখায় সরাসরি যোগাযোগ:
    • নিকটস্থ ব্যাংক শাখায় যান।
    • PMJDY অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম সংগ্রহ করুন।
    • ফর্ম পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিন।
    • ব্যাংক কর্মীর সাথে যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:

  1. আধার কার্ড: প্রাথমিক পরিচয় প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  2. পান কার্ড: ট্যাক্স পরিচয় নম্বর যা আর্থিক লেনদেনের জন্য প্রয়োজন।
  3. ঠিকানার প্রমাণপত্র: ভোটার আইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বা পাসপোর্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
  4. সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

বিশেষ টিপস:

  1. অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রাখা:
    • নিয়মিত লেনদেন করুন।
    • প্রতি বছর অন্তত একবার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা বা তুলুন।
    • ব্যালেন্স শূন্য হলেও অ্যাকাউন্ট বন্ধ হবে না।
  2. মোবাইল ব্যাংকিং:
    • ব্যাংকের মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করুন।
    • অনলাইনে ব্যালেন্স চেক, ফান্ড ট্রান্সফার, বিল পেমেন্ট করুন।
    • SMS অ্যালার্ট সক্রিয় করুন লেনদেনের নিরাপত্তার জন্য।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান: ভারত সরকারের অর্থ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, 2024 সালের 4 এপ্রিল পর্যন্ত:

  • মোট PMJDY অ্যাকাউন্টের সংখ্যা: 51.42 কোটি
  • মোট জমাকৃত অর্থের পরিমাণ: ₹2,11,968.44 কোটি
  • রুপে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে: 33.19 কোটি

এই পরিসংখ্যান দেখায় যে PMJDY ভারতের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

যোগাযোগের তথ্য:

  • টোল-ফ্রি হেল্পলাইন: 1800-11-0001
  • ওয়েবসাইট: www.pmjdy.gov.in

সমাপ্তি: জন ধন যোজনা ভারতের আর্থিক ল্যান্ডস্কেপকে পরিবর্তন করেছে, মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষকে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় এনেছে। এটি শুধু একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নয়, বরং আর্থিক স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার দিকে একটি পথ।

তথ্যসূত্র:

  1. প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: https://pmjdy.gov.in/
  2. ভারত সরকারের অর্থ মন্ত্রক: https://financialservices.gov.in/
  3. ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI): https://www.rbi.org.in/
About Author
Srijita Chattopadhay

সৃজিতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক। তিনি একজন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক এবং সাংবাদিক, যিনি তার লেখা দ্বারা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধি তুলে ধরতে সদা উদ্যমী। সৃজিতার লেখার ধারা মূলত সাহিত্য, সমাজ এবং সংস্কৃতির বিভিন্ন দিককে ঘিরে আবর্তিত হয়, যেখানে তিনি তার গভীর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ও বিশ্লেষণী দক্ষতার পরিচয় দেন। তাঁর নিবন্ধ ও প্রতিবেদনগুলি পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, যা তার বস্তুনিষ্ঠতা ও সংবেদনশীলতার পরিচয় বহন করে। সৃজিতা তার কর্মজীবনে ক্রমাগত নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে বদ্ধপরিকর, যা তাকে বাংলা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।