How to shave correctly: দাড়ি কামানো প্রতিদিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুটিন। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে সঠিক পদ্ধতিতে শেভ করলে ত্বকের ক্ষতি এড়ানো যায় এবং মসৃণ ফলাফল পাওয়া যায়। আসুন জেনে নেই শেভ করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত।শেভ করার আগে ত্বক ও দাড়িকে প্রস্তুত করা খুবই জরুরি। এর জন্য প্রথমেই গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এতে দাড়ির লোম নরম হয়ে যায় এবং ছুরি সহজে চলে। সবচেয়ে ভালো হয় গোসলের পরে শেভ করা, কারণ তখন ত্বক আর্দ্র থাকে। এছাড়া একটি ফেসিয়াল স্ক্রাব ব্যবহার করে মৃত ত্বক সরিয়ে নিলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
শেভিং জেল বা ক্রিম ব্যবহার করুন
শেভিং জেল বা ক্রিম ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ত্বককে রক্ষা করে এবং ছুরিকে মসৃণভাবে চলতে সাহায্য করে। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত শেভিং জেল বা ক্রিম বেছে নিন। শুষ্ক বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য “সেনসিটিভ স্কিন” লেবেলযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। জেল বা ক্রিম লাগানোর সময় বৃত্তাকার পদ্ধতিতে ঘষে লাগান যাতে দাড়ির লোম ভালোভাবে নরম হয়ে যায়।
সঠিক দিকে শেভ করুন
দাড়ির বৃদ্ধির দিকে শেভ করা উচিত। এটি রেজর বাম্প ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। সাধারণত গালের উপরের অংশে নিচের দিকে এবং গলায় উপরের দিকে শেভ করতে হয়। তবে প্রত্যেকের দাড়ির গঠন আলাদা হওয়ায় নিজের দাড়ির বৃদ্ধির দিক বুঝে সেই অনুযায়ী শেভ করুন।
ধীরে ধীরে শেভ করুন
অতি দ্রুত শেভ করলে কেটে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ধীরে ধীরে ছোট ছোট স্ট্রোকে শেভ করুন। ছুরিকে বেশি চাপ দেবেন না, হালকা হাতে শেভ করুন। মনে রাখবেন, ভালো ধারালো ছুরি নিজেই কাজ করবে, আপনাকে বেশি জোর দিতে হবে না।
নিয়মিত ছুরি ধুয়ে নিন
শেভ করার সময় প্রতি কয়েক স্ট্রোকের পর ছুরি ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এতে ছুরিতে জমে থাকা চুল ও শেভিং ক্রিম পরিষ্কার হয়ে যায়। ফলে ছুরি আরও ভালোভাবে কাজ করে এবং ত্বকে কম ঘষা লাগে।
উপযুক্ত ছুরি ব্যবহার করুন
ভালো মানের ধারালো ছুরি ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভোঁতা ছুরি ব্যবহার করলে ত্বকে ঘষা লাগে এবং রেজর বাম্প হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। প্রতি ৫-৭ বার ব্যবহারের পর ছুরি বদলে ফেলুন। মাল্টি-ব্লেড রেজর ব্যবহার করলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
শেভ শেষ হলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায় এবং জ্বালাপোড়া কমে। তারপর একটি পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হালকা করে মুছে নিন, ঘষাঘষি করবেন না।
আফটার শেভ ব্যবহার করুন
শেভের পর আফটার শেভ লোশন বা বাম ব্যবহার করা উচিত। এতে ত্বক আর্দ্র থাকে এবং জ্বালাপোড়া কমে। এলোভেরা বা উইচ হেজেল যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে অ্যালকোহল যুক্ত আফটার শেভ এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
বিশেষ এলাকায় সতর্কতা
নাকের নিচে বা থুতনির গোল অংশে শেভ করার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন। এই অংশগুলোতে চামড়া বেশি সংবেদনশীল হয়। প্রিসিশন ট্রিমার ব্যবহার করে এই জায়গাগুলো সহজে শেভ করা যায়।
রেজরের যত্ন নিন
শেভ শেষে রেজরটি ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে রাখুন। ভেজা জায়গায় রাখবেন না, কারণ এতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। রেজরটি শুকনো জায়গায় রাখুন যাতে পরবর্তী ব্যবহারের আগে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়।শেভ করার এই সঠিক পদ্ধতিগুলো মেনে চললে আপনি নিখুঁত ও আরামদায়ক শেভ পাবেন। মনে রাখবেন, প্রত্যেকের ত্বক ও দাড়ির ধরন আলাদা। তাই নিজের ত্বকের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করে সেই অনুযায়ী পদ্ধতি অনুসরণ করুন। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত শেভিং রুটিন খুঁজে পাবেন।
শেভ করার আগে-পরে করণীয়
শেভ করার আগে:
- গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন বা গরম তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে নিন
- ফেসিয়াল স্ক্রাব ব্যবহার করুন
- উপযুক্ত শেভিং জেল বা ক্রিম লাগান
- ধারালো ছুরি ব্যবহার করুন
পোশাকের দাগ তোলার ১০টি অব্যর্থ উপায় – আপনার প্রিয় জামা বাঁচান!
শেভ করার পরে:
- ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন
- পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হালকা করে মুছে নিন
- আফটার শেভ লোশন বা বাম ব্যবহার করুন
- রেজরটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখুন
সঠিক পদ্ধতিতে শেভ করলে আপনি পাবেন মসৃণ ও স্বাস্থ্যকর ত্বক। নিয়মিত অনুশীলন ও সঠিক প্রোডাক্ট ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার জন্য সর্বোত্তম শেভিং রুটিন তৈরি করতে পারবেন। মনে রাখবেন, ধৈর্য ধরুন এবং আপনার ত্বকের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন। এভাবেই আপনি পাবেন নিখুঁত ও আরামদায়ক শেভ।