Rabbit Fever symptoms and infection rates: গত এক দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘র্যাবিট ফিভার’ নামে পরিচিত একটি বিরল ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের প্রকোপ ৫৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই রোগটি মূলত খরগোশ ও অন্যান্য ক্ষুদে প্রাণীর মাধ্যমে ছড়ায় বলে এটিকে ‘র্যাবিট ফিভার’ বলা হয়। সিডিসি’র সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
রোগের বিস্তার ও প্রভাব
২০১১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে নথিভুক্ত প্রায় ২,৫০০টি কেসের অর্ধেকই চারটি রাজ্যে সংঘটিত হয়েছে – আরকানসাস, মিসৌরি, কানসাস এবং ওকলাহোমা। তবে মোট ৪৭টি রাজ্যে এই রোগের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৃদ্ধি হয়তো প্রকৃত সংক্রমণের বৃদ্ধি নয়, বরং উন্নত পরীক্ষা পদ্ধতির কারণে অধিক সনাক্তকরণের ফলাফল হতে পারে।
রোগের কারণ ও সংক্রমণের উপায়
টুলারেমিয়া নামেও পরিচিত এই রোগটি ফ্রান্সিসেলা টুলারেনসিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। এই ব্যাকটেরিয়াটি এতটাই বিপজ্জনক যে এটিকে জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে। মানুষ বিভিন্ন উপায়ে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে:
- টিক বা ডিয়ার ফ্লাইয়ের কামড়
- সংক্রামিত প্রাণীর সংস্পর্শে আসা
- দূষিত পানি পান করা
- দূষিত ধুলোকণা শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা
রোগের উপসর্গ
টুলারেমিয়ার উপসর্গগুলি সংক্রমণের ধরনের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণ উপসর্গগুলি হল:
- উচ্চ জ্বর
- ত্বকের ক্ষত
- লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া
- চোখে প্রদাহ
- গলা ব্যথা
- কাশি
- শ্বাসকষ্ট
বিশেষ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী
গবেষণায় দেখা গেছে, নির্দিষ্ট কিছু জনগোষ্ঠী এই রোগের জন্য বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে:
জনগোষ্ঠী | ঝুঁকির কারণ |
---|---|
৫-৯ বছর বয়সী শিশু | বাইরে বেশি সময় কাটানো এবং প্রাণীদের সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ |
৬৫+ বয়সী পুরুষ | দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা |
আমেরিকান ইন্ডিয়ান/আলাস্কা নেটিভ | সাদাঙ্গদের তুলনায় ৫ গুণ বেশি সংক্রমণের হার |
রোগ প্রতিরোধের উপায়
যদিও এই রোগের জন্য কোনো টিকা এখনও পাওয়া যায়নি, তবে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে সংক্রমণ এড়ানো যেতে পারে:
- কীটনাশক ব্যবহার করুন
- লম্বা পোশাক পরুন যা আপনার শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখে
- টিক পাওয়া মাত্র সরিয়ে ফেলুন
- অপরিশোধিত পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন
- ঘাস কাটার সময় মাস্ক পরুন
- খরগোশ বা অন্যান্য বন্য প্রাণী নাড়াচাড়া করার সময় গ্লাভস পরুন
- মাংস ভালোভাবে রান্না করে খান
চিকিৎসা ও প্রাণঘাতী হারের তথ্য
টুলারেমিয়া অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসাযোগ্য। সাধারণত এই রোগের মৃত্যুহার ২% এর কম, তবে চিকিৎসা না করালে এটি ২৪% পর্যন্ত বাড়তে পারে। এই কারণে রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
গবেষণা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
বর্তমানে গবেষকরা এই রোগের বিস্তার রোধে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তাঁরা রোগের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করছেন এবং সম্ভাব্য টিকা তৈরির গবেষণা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি, জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।
‘র্যাবিট ফিভার’ বা টুলারেমিয়া একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যদিও এটি এখনও তুলনামূলকভাবে বিরল, তবে এর দ্রুত বৃদ্ধি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সচেতনতা ও সতর্কতা এই রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সঠিক তথ্যের অনুসরণ করে আমরা এই রোগের বিস্তার রোধ করতে পারি।