Rahul Dravid Returns 2.5 Crore Rupees: ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে রাহুল দ্রাবিড়ের নামটি সর্বদাই শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হয়। তার ব্যাটিং দক্ষতা, নেতৃত্বগুণ এবং নৈতিকতার জন্য তিনি সর্বদাই প্রশংসিত। তবে ২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর তার একটি সিদ্ধান্ত তাকে আরও একবার সকলের চোখে মহান করে তুলেছে। দ্রাবিড় ২.৫ কোটি টাকার অতিরিক্ত বোনাস ফিরিয়ে দিয়ে সমান বোনাসের দাবি করেছেন, যা তার সহকর্মীদের জন্য নির্ধারিত ছিল। এই সিদ্ধান্তটি শুধু তার নৈতিকতার প্রতিফলন নয়, বরং তার নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপে ভারতের জয়ের পর, বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) দ্রাবিড়কে ৫ কোটি টাকার বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যা খেলোয়াড়দের সমান। তবে দ্রাবিড় এই অতিরিক্ত বোনাস গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন এবং তার সহকর্মীদের মতো ২.৫ কোটি টাকার বোনাস গ্রহণের দাবি করেন। দ্রাবিড়ের এই সিদ্ধান্তটি তার নৈতিকতার প্রতিফলন এবং সহকর্মীদের প্রতি তার সম্মানের প্রতীক।
এটি প্রথমবার নয় যখন দ্রাবিড় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০১৮ সালে, ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর, দ্রাবিড় তার জন্য নির্ধারিত ৫০ লক্ষ টাকার বোনাস ফিরিয়ে দিয়ে সমান বোনাসের দাবি করেছিলেন। সেই সময়ে, অন্যান্য সহকর্মীরা ২০ লক্ষ টাকা এবং খেলোয়াড়রা ৩০ লক্ষ টাকা পেতেন। দ্রাবিড়ের এই সিদ্ধান্তের ফলে, বিসিসিআই সব কোচিং স্টাফের জন্য সমান বোনাস নির্ধারণ করে।
রাহুল দ্রাবিড় ২০২১ সালের নভেম্বরে ভারতের প্রধান কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন। তার নেতৃত্বে, ভারতীয় দল বিভিন্ন ফরম্যাটে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে। ২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ জয় তার কোচিং ক্যারিয়ারের অন্যতম উজ্জ্বল মুহূর্ত। দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে দলটি ১৭ বছরের অপেক্ষার পর দ্বিতীয় টি২০ বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে।
২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপের পর, দ্রাবিড় তার কোচিং ক্যারিয়ার থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তার বিদায়ের সময়, বিসিসিআই সচিব জয় শাহ বলেন, “রাহুল দ্রাবিড় এবং তার সহকর্মীদের সেবা এবং অসাধারণ প্রচেষ্টার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তাদের নেতৃত্বে দলটি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে এবং ২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ জয় একটি স্মরণীয় মুহূর্ত।”
দ্রাবিড়ের বিদায়ের পর, বিসিসিআই গৌতম গম্ভীরকে নতুন প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ করেছে। গম্ভীর, যিনি ২০০৭ সালের টি২০ বিশ্বকাপ এবং ২০১১ সালের ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেছিলেন, তিনি ৩.৫ বছরের জন্য দলের দায়িত্বে থাকবেন। তার সাথে অভিষেক নায়ার সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেবেন।
দ্রাবিড় চেয়েছিলেন যে তার সহকর্মী কোচিং স্টাফ সদস্যরাও তার সমান বোনাস পান। তিনি নিজের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা নিতে চাননি।
তিনি দলের সাফল্যকে ব্যক্তিগত সাফল্যের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। সকলের সমান অবদানকে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছেন।
দ্রাবিড় সর্বদাই নৈতিক মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তও তার নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
২০১৮ সালেও তিনি অনুরূপ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যখন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হিসেবে অতিরিক্ত বোনাস ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অন্যদের জন্য একটি আদর্শ উদাহরণ স্থাপন করেছেন।সারকথা, দ্রাবিড়ের এই সিদ্ধান্ত তার নৈতিকতা, সমতাবোধ এবং দলগত মনোভাবের প্রতিফলন, যা তাকে একজন আদর্শ নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
রাহুল দ্রাবিড়ের ২.৫ কোটি টাকা বোনাস ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্তটি তার অতীতের একটি সিদ্ধান্তের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ২০১৮ সালে, দ্রাবিড় ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলের কোচ ছিলেন। সেই সময়ে, বিসিসিআই তাকে ৫০ লক্ষ টাকার বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যেখানে অন্যান্য কোচিং স্টাফ সদস্যদের ২০ লক্ষ টাকা এবং খেলোয়াড়দের ৩০ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছিল। দ্রাবিড় এই অতিরিক্ত বোনাস গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন এবং সমান বোনাসের দাবি করেন, যার ফলে বিসিসিআই সব কোচিং স্টাফের জন্য সমান বোনাস নির্ধারণ করে।
এই দুটি সিদ্ধান্তই দ্রাবিড়ের নৈতিকতা, সমতা ও দলগত মনোভাবের প্রতিফলন। তিনি সবসময়ই তার সহকর্মীদের সমানভাবে মূল্যায়ন করতে চেয়েছেন এবং তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন। তার এই সিদ্ধান্তগুলি তাকে একজন আদর্শ নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং তার নৈতিক মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটিয়েছে।
রাহুল দ্রাবিড়ের এই সিদ্ধান্তটি তার নৈতিকতা এবং নেতৃত্বের প্রতিফলন। তার এই মহানুভবতা শুধু ক্রিকেটপ্রেমীদের নয়, সমগ্র দেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। দ্রাবিড়ের এই সিদ্ধান্তটি আমাদের সকলের জন্য একটি উদাহরণ এবং প্রেরণা। তার নেতৃত্বে ভারতীয় দল যে সাফল্য অর্জন করেছে, তা দীর্ঘদিন ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন