Ration card age requirements Bangladesh: রেশন কার্ড একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দলিল যা দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বাংলাদেশে রেশন কার্ড পাওয়ার জন্য সাধারণত ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। তবে এর আগেও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে একই কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত করা যায়।রেশন কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি দরিদ্র মানুষদের জন্য সরকারি সহায়তা পাওয়ার একটি মূল মাধ্যম। রেশন কার্ডের মাধ্যমে সরকার নিম্ন মূল্যে চাল, গম, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ করে থাকে।
এই শর্তগুলি পূরণ করলে ১৮ বছর বয়স থেকেই রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়। তবে ১৮ বছরের কম বয়সীদের নামও পরিবারের অন্য সদস্যদের কার্ডে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
১. সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে
২. প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র জমা দিতে হবে
৩. আবেদন ফি প্রদান করতে হবে
৪. কর্তৃপক্ষ আবেদন যাচাই-বাছাই করবে
৫. যোগ্য প্রার্থীদের রেশন কার্ড ইস্যু করা হবে
রেশন কার্ডের মাধ্যমে মাসে ২০ কেজি চাল ১০ টাকা কেজি দরে কেনা যায়। এছাড়া অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যও কম দামে পাওয়া যায়।বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫০ লক্ষ পরিবার রেশন কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা পাচ্ছে। সরকার আরও ৫০ লক্ষ নতুন রেশন কার্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে মোট ১ কোটি পরিবার এই সুবিধা পাবে।
এই কাগজপত্রগুলি জমা দিয়ে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীদের রেশন কার্ড প্রদান করবে।রেশন কার্ড পাওয়ার পর নিয়মিত নবায়ন করা জরুরি। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে রেশন কার্ড নবায়ন করতে হয়। এতে করে অযোগ্য ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া এবং নতুন যোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়।রেশন কার্ড ব্যবস্থা দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রেশন কার্ড ব্যবস্থা পুনরায় চালু করার দাবি উঠেছে।ভারতের মতো বাংলাদেশেও একটি সুসংহত রেশন কার্ড ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। এর জন্য একটি জাতীয় ডাটাবেস তৈরি করা জরুরি। এতে করে প্রকৃত উপকারভোগীরা যাতে সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করা যাবে।
সাবধান! ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ই-কেওয়াইসি না করালে রেশন কার্ড বাতিল হতে পারে
ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের পর থেকেই উপমহাদেশে রেশন ব্যবস্থা চালু হয়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশেও এই ব্যবস্থা চালু ছিল। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় রেশন ব্যবস্থা খাদ্য সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।কিন্তু ১৯৯০-এর দশকে বিশ্বব্যাংক ও ইউএসএইডের পরামর্শে রেশন ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়। এরপর থেকে ভিজিএফ ও ওএমএস-এর মতো কর্মসূচি চালু করা হয়। কিন্তু এগুলো রেশন ব্যবস্থার মতো কার্যকর হয়নি।বর্তমানে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঘটায় রেশন ব্যবস্থা পুনরায় চালু করার দাবি জোরালো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটি সুষ্ঠু রেশন ব্যবস্থা দারিদ্র্য বিমোচন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তবে এর জন্য একটি সুসংহত ডাটাবেস তৈরি করা জরুরি। ভারতের আধার কার্ডের মতো একটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবস্থার সাথে রেশন কার্ড সংযুক্ত করা যেতে পারে। এতে করে দুর্নীতি রোধ ও সঠিক উপকারভোগী নির্বাচন সহজ হবে।সামগ্রিকভাবে দেখা যায়, ১৮ বছর বয়স থেকেই রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়। তবে এর আগেও পরিবারের অন্য সদস্যদের কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত করা যায়। একটি সুষ্ঠু রেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে তা দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মন্তব্য করুন