চেক জালিয়াতি রুখতে আরবিআই’র ‘পজিটিভ পে সিস্টেম’: সুরক্ষার নতুন মাত্রা

RBI PPS features and benefits: চেক জালিয়াতি রোধে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) একটি নতুন পদ্ধতি চালু করেছে যার নাম 'পজিটিভ পে সিস্টেম' (পিপিএস)। এই ব্যবস্থা গ্রাহকদের আর্থিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে…

Avatar

 

RBI PPS features and benefits: চেক জালিয়াতি রোধে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) একটি নতুন পদ্ধতি চালু করেছে যার নাম ‘পজিটিভ পে সিস্টেম’ (পিপিএস)। এই ব্যবস্থা গ্রাহকদের আর্থিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে এবং চেক সংক্রান্ত প্রতারণা কমাতে সাহায্য করবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই নতুন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

পজিটিভ পে সিস্টেম কী?

পজিটিভ পে সিস্টেম হল একটি ইলেকট্রনিক প্রমাণীকরণ ব্যবস্থা যা চেক প্রদানকারীকে চেকের বিস্তারিত তথ্য ব্যাংকের সাথে শেয়ার করার সুযোগ দেয়। এই পদ্ধতিতে, চেক ইস্যুকারী ব্যক্তি চেকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেমন তারিখ, চেক নম্বর, পরিমাণ, সুবিধাভোগীর নাম ইত্যাদি ইলেকট্রনিকভাবে ব্যাংকের কাছে জমা দেন।

মোবাইল নম্বর দিয়ে রেশন কার্ড চেক: এক ক্লিকে জেনে নিন আপনার খাদ্য সুরক্ষার অধিকার!

পজিটিভ পে সিস্টেমের মূল বৈশিষ্ট্য

  1. কার্যকর তারিখ: আরবিআই এই ব্যবস্থা ১ জানুয়ারি, ২০২১ থেকে কার্যকর করেছে।
  2. প্রযোজ্য পরিমাণ: ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি মূল্যের চেকের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা প্রযোজ্য।
  3. বাধ্যতামূলক নয়: গ্রাহকদের জন্য এই সুবিধা ব্যবহার করা ঐচ্ছিক, তবে ৫ লক্ষ টাকা বা তার বেশি মূল্যের চেকের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলি এটি বাধ্যতামূলক করতে পারে।
  4. তথ্য জমা দেওয়ার মাধ্যম: গ্রাহকরা এসএমএস, মোবাইল অ্যাপ, ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা এটিএমের মাধ্যমে চেকের তথ্য জমা দিতে পারেন।

পজিটিভ পে সিস্টেম কীভাবে কাজ করে

  1. তথ্য জমা: চেক ইস্যুকারী ব্যক্তি চেকের বিস্তারিত তথ্য ব্যাংকের কাছে জমা দেন।
  2. তথ্য সংরক্ষণ: ব্যাংক এই তথ্য ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এনপিসিআই)-এর কাছে পাঠায়।
  3. যাচাইকরণ: যখন চেকটি উপস্থাপন করা হয়, তখন চেক ট্রাঙ্কেশন সিস্টেম (সিটিএস) জমা দেওয়া তথ্যের সাথে চেকের বিবরণ মিলিয়ে দেখে।
  4. অসঙ্গতি ফ্ল্যাগ করা: কোনও অমিল পাওয়া গেলে, সিটিএস তা ফ্ল্যাগ করে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলিকে অবহিত করে।

পজিটিভ পে সিস্টেমের সুবিধা

  1. জালিয়াতি প্রতিরোধ: এই ব্যবস্থা চেক জালিয়াতি, বিশেষ করে জাল স্বাক্ষর, পরিবর্তন বা নকল চেক ব্যবহারের ঝুঁকি কমায়।
  2. দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ: চেক প্রক্রিয়াকরণের সময় কমে যায় কারণ তথ্য আগে থেকেই যাচাই করা থাকে।
  3. স্বচ্ছতা: গ্রাহকরা তাদের চেক লেনদেনের উপর আরও নিয়ন্ত্রণ পান এবং সব সময় তাদের অ্যাকাউন্টের অবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকেন।
  4. কম মানব ত্রুটি: স্বয়ংক্রিয় যাচাইকরণ প্রক্রিয়া মানব ত্রুটির সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

পজিটিভ পে সিস্টেম ব্যবহারের পদ্ধতি

  1. নেট ব্যাংকিং: অধিকাংশ ব্যাংক তাদের নেট ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মে পজিটিভ পে সিস্টেমের সুবিধা দিচ্ছে। গ্রাহকরা লগ ইন করে চেকের তথ্য জমা দিতে পারেন।
  2. মোবাইল ব্যাংকিং: অনেক ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপেও এই সুবিধা দিচ্ছে।
  3. ব্যাংক শাখা: গ্রাহকরা সরাসরি ব্যাংক শাখায় গিয়েও চেকের তথ্য জমা দিতে পারেন।
  4. এসএমএস: কিছু ব্যাংক এসএমএসের মাধ্যমেও চেকের তথ্য জমা দেওয়ার সুবিধা দিচ্ছে।

মোদী সরকার কি ঘোষণা করবে 8th Pay Commission? জানুন আপডেট

বিশেষ দ্রষ্টব্য

  1. চেক ইস্যু করার দিনই বা সুবিধাভোগীকে দেওয়ার আগে তথ্য জমা দিতে হবে।
  2. জমা দেওয়া তথ্য সঠিক হতে হবে, অন্যথায় চেক বাতিল বা ফেরত যেতে পারে।
  3. পজিটিভ পে সিস্টেমের মাধ্যমে যাচাই করা চেকগুলিই কেবল সিটিএস গ্রিডে বিবাদ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার আওতায় আসবে।

পজিটিভ পে সিস্টেম চেক জালিয়াতি রোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি গ্রাহকদের আর্থিক নিরাপত্তা বাড়াতে এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। তবে, গ্রাহকদের এই ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং নিয়মিত ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকগুলিও গ্রাহকদের মধ্যে এই ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে কাজ করছে। পজিটিভ পে সিস্টেম ভবিষ্যতে আরও উন্নত হবে এবং ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের যুগে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।

About Author
Avatar

আমাদের স্টাফ রিপোর্টারগণ সর্বদা নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে আপনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে পারেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতিশ্রুতি আমাদের ওয়েবসাইটকে একটি বিশ্বস্ত তথ্যের উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।তারা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্টিংয়ে বিশ্বাসী, দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন তৈরিতে সক্ষম