How saffron helps skin beauty: গ্রীষ্মের তাপদাহে ত্বকের লাবণ্য হারিয়ে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যার সমাধান রয়েছে আপনার রান্নাঘরেই – কেশর বা saffron। এই মূল্যবান মসলাটি শুধু খাবারের স্বাদ ও গন্ধ বাড়ায় না, এর রয়েছে অসাধারণ ত্বক উপকারী গুণাবলী। আসুন জেনে নেই কীভাবে কেশর ব্যবহার করে আপনি আপনার ত্বকের হারানো লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে পারেন।
কেশরের গুণাগুণ
কেশর একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে:
- শক্তিশালী antioxidant গুণ
- UV রশ্মি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে
- ত্বকের প্রদাহ কমায়
- ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে
- অতিরিক্ত মেলানিন উৎপাদন রোধ করে
ডাঃ রিশি চোপড়া, একজন বোর্ড সার্টিফাইড ডার্মাটোলজিস্ট জানান, “কেশর ত্বকের hyperpigmentation উন্নত করতে পারে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।” তিনি আরও বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে এটি কিছুটা UV সুরক্ষাও প্রদান করে, তবে এটি কখনোই sunscreen এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।”
“বর্ষায় পুরুষদের ত্বক হারাচ্ছে জৌলুস? জেনে নিন চমকপ্রদ সমাধান!”
কেশর ব্যবহারের উপায়
আপনার ত্বকের যত্নে কেশর ব্যবহার করার কয়েকটি সহজ উপায় রয়েছে:
কেশর ফেস মাস্ক
একটি শান্তিদায়ক ত্বক চিকিৎসার জন্য, কেশরের ফেস মাস্ক তৈরি করুন। ৩-৪টি কেশরের সুতা নিয়ে গুঁড়ো করুন। এটি ১ চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে আপনার ত্বকে লাগান। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
কেশর জেল
প্রদাহের জন্য কেশর জেলের cooling effect আদর্শ। ৪-৫টি কেশরের সুতা গুঁড়ো করে ২ চামচ এলোভেরা জেল এবং ২ চামচ গোলাপ জলের সাথে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ আপনার ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন।
কেশর টোনার
উইচ হেজেল বা গোলাপ জল একটি চমৎকার টোনার। কিন্তু আপনি এতে কেশর যোগ করে আরও বেশি উপকার পেতে পারেন।১/২ কাপ উইচ হেজেল বা গোলাপ জলে ৩-৪টি কেশরের সুতা ভিজিয়ে রাখুন ১-২ দিন। এরপর এটি আপনার ত্বকে স্প্রে করুন বা তুলার সাহায্যে লাগান।
কেশর তেল ময়েশ্চারাইজার
কেশর তেল বেস তেলের সাথে মিশিয়ে একটি দারুণ ময়েশ্চারাইজার তৈরি করা যায়। ১ আউন্স বোতলে ২/৩ অংশ বাদাম তেল বা আঙ্গুরের বীজের তেল নিন। এতে ৩-৫ ফোঁটা কেশর তেল যোগ করুন।
কেশরের প্রমাণিত উপকারিতা
গবেষণায় কেশরের বেশ কিছু প্রমাণিত উপকারিতা পাওয়া গেছে:
UV রশ্মি থেকে সুরক্ষা
UV রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। UV রশ্মি free radical উৎপাদন বাড়ায় যা oxidative stress সৃষ্টি করে। এটি ত্বকের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ত্বকের বয়স বাড়ায়।কেশরের সক্রিয় যৌগ crocin এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে crocin UVB রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এছাড়া crocin UVA রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দেয়, যা অকাল বার্ধক্যের জন্য দায়ী।
প্রদাহ কমায়
কেশরের anti-inflammatory গুণ রয়েছে যা ত্বকের জ্বালা-পোড়া ও লালচে ভাব কমাতে সাহায্য করে। এটি সংবেদনশীল ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী।
ক্ষত নিরাময়
গবেষণায় দেখা গেছে কেশর ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে। এটি ত্বকের কোষের পুনর্গঠন ত্বরান্বিত করে যা ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে।
hyperpigmentation কমায়
কেশর tyrosinase enzyme এর কাজ বাধাগ্রস্ত করে যা মেলানিন উৎপাদনে জড়িত। এর ফলে ত্বকের অতিরিক্ত রঙ কমে এবং ত্বকের টোন একসমান হয়।
কেশর ব্যবহারের টিপস
কেশর ব্যবহার করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার:
- সবসময় বিশুদ্ধ ও উচ্চ মানের কেশর ব্যবহার করুন
- কেশর ব্যবহার করার আগে অল্প পরিমাণে patch test করে নিন
- প্রতিদিন সকালে ও রাতে কেশর যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন
- কেশরের সাথে অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান যেমন মধু, দুধ ইত্যাদি মিশিয়ে ব্যবহার করুন
- কেশর যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহারের পর sunscreen লাগানো ভুলবেন না
শুষ্ক ত্বকের জন্য দায়ী ৫টি ভিটামিনের অভাব – আপনার ত্বক কি শুকনো ও নিষ্প্রভ?
বিশেষজ্ঞদের মতামত
আয়ুষ অগ্রওয়াল, রসায়নম এর প্রতিষ্ঠাতা বলেন, “কেশরের মধ্যে crocin ও crocetin নামক যৌগ রয়েছে যা antioxidant হিসেবে কাজ করে ত্বককে ক্ষতিকর UV রশ্মি থেকে রক্ষা করে। আপনার sunscreen এর সাথে কেশর extract মিশিয়ে নিলে এর কার্যকারিতা আরও বাড়বে।”মানসী শর্মা, The Honest Tree by Boddess এর প্রতিষ্ঠাতা জানান, “গ্রীষ্মের তাপে ত্বকের moisture কমে যায়, কেশর সেই moisture পুনরুদ্ধার করে এবং ত্বককে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ দিয়ে পুষ্ট করে। এর anti-inflammatory গুণ প্রদাহিত ত্বককে শান্ত করে, লালচে ভাব ও অস্বস্তি কমায়।”মেকআপ আর্টিস্ট সালোনি গুপ্তা পরামর্শ দেন, “গ্রীষ্মে দৈনিক ত্বকের যত্নে কেশর যোগ করা উচিত। এর সুগন্ধ ও ত্বকের জন্য বহুবিধ উপকারিতা এটিকে একটি চমৎকার পছন্দ করে তোলে। সবচেয়ে সহজ উপায় হল কয়েকটি কেশরের সুতা পানিতে মিশিয়ে মধুর সাথে একটি ব্রাইটেনিং ফেস মাস্ক তৈরি করা।”
গ্রীষ্মের তাপদাহে ত্বকের লাবণ্য হারিয়ে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু কেশর ব্যবহার করে আপনি সহজেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এর antioxidant, anti-inflammatory ও ত্বক উজ্জ্বলকারী গুণ আপনার ত্বককে সতেজ ও স্বাস্থ্যকর রাখবে। নিয়মিত কেশর ব্যবহার করে আপনিও পেতে পারেন একটি উজ্জ্বল, মসৃণ ও যৌবনোজ্জ্বল ত্বক। তবে মনে রাখবেন, কেশর ব্যবহারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান, সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম করাও জরুরি সুস্থ ত্বকের জন্য।