Shakib Al Hasan Retirement Announcement: বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান আজ (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪) টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ভারতের কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
সাকিব জানিয়েছেন, আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজটি হবে তাঁর শেষ টেস্ট সিরিজ। তবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে যদি সেই সিরিজ না হয়, তাহলে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টটিই হতে পারে তাঁর শেষ টেস্ট ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তিনি অবিলম্বে অবসর নিচ্ছেন।
সাকিব আরও জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে তাঁর শেষ একদিনের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। এর মাধ্যমে তিনি ধাপে ধাপে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
২০০৭ সালে টেস্ট অভিষেক থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত সাকিব ৬৯টি টেস্টে খেলেছেন। এতে ৪৪৫৩ রান করেছেন এবং ২৪২টি উইকেট নিয়েছেন। টেস্টে তাঁর গড় ৩৮.৮৮। টি-টোয়েন্টিতে তিনি ২০০৬ সাল থেকে খেলছেন। এ ফরম্যাটে তিনি ১১৪টি ম্যাচে ২৩৪৭ রান করেছেন এবং ১৪৯টি উইকেট নিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হিসেবে তিনি অবসর নিচ্ছেন।
সাকিব বলেছেন, “বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আমি চাই আমার শেষ টেস্ট ম্যাচটি দেশের মাঠে খেলতে। কিন্তু যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টটিই হবে আমার শেষ টেস্ট।”
সাকিবের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দলের অন্যতম মূল স্তম্ভ ছিলেন। তাঁর অবসরে বাংলাদেশকে নতুন করে দল সাজাতে হবে। বিশেষ করে টেস্টে একজন শক্তিশালী অলরাউন্ডারের ঘাটতি পূরণ করা চ্যালেঞ্জিং হবে।
সাকিবের অবসরের সিদ্ধান্তের পিছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তিনি হয়তো মনে করছেন এখন সময় হয়েছে নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দেওয়ার। পাশাপাশি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিও তাঁর সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ তিনি আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত একজন রাজনীতিবিদ।
ICC T20 World Cup Final: ১৭ বছরের খরা কাটিয়ে দুই রাজাই ছাড়লেন রাজত্ব
সাকিবের অবসরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, “সাকিব বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন কিংবদন্তি। তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। আমরা তাঁর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই এবং তাঁর ভবিষ্যৎ সাফল্য কামনা করি।”
সাকিবের সতীর্থ তামিম ইকবাল বলেছেন, “সাকিব আমাদের দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। তাঁর অবসরে আমরা একজন দক্ষ অলরাউন্ডারকে হারাচ্ছি। তবে আমি বিশ্বাস করি, তিনি যেভাবে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, সেই ধারা অব্যাহত থাকবে।”
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাকিবের অবসরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি যুগের অবসান ঘটল। তাঁর মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটার খুব কম দেশই পায়। তবে এটাও সত্য যে, কোনো একজন ক্রিকেটারের ওপর নির্ভর না করে বাংলাদেশকে এখন নতুন করে দল গড়তে হবে।
রোহিত-বিরাটের বিদায়ে ভারতীয় ক্রিকেটে কে হবে নতুন কর্ণধার? জানুন টি২০ দলের
সাকিবের অবসরের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে:
১. টেস্টে একজন শক্তিশালী অলরাউন্ডার খুঁজে বের করা
২. দলের নেতৃত্বের জন্য নতুন ক্যাপ্টেন নির্বাচন করা
৩. যুব ক্রিকেটারদের দ্রুত আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ করে দেওয়া
৪. দলের মনোবল ধরে রাখা
সামগ্রিকভাবে, সাকিব আল হাসানের অবসর বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা। তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ কতটা দ্রুত এই শূন্যতা পূরণ করতে পারে এবং আগামী দিনগুলোতে কীভাবে নিজেদের পুনর্গঠিত করে।