Sheikh Hasina secret stay in India: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০০ দিন ধরে ভারতে গোপনে অবস্থান করছেন। গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ছাত্র আন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রথমে উত্তর প্রদেশের হিন্ডন বিমান ঘাঁটিতে অবস্থান করার পর বর্তমানে তিনি দিল্লির লুটিয়েন্স অঞ্চলে একটি সুরক্ষিত বাংলোতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
– গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশ ছাড়ার সময় শেখ হাসিনাকে দুটি সুটকেস নিয়ে একটি গাড়িতে উঠতে দেখা গিয়েছিল। এরপর তিনি হেলিকপ্টারে করে ভারতে আসেন।
– প্রথমে তিনি উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে অবস্থিত হিন্ডন বিমান ঘাঁটিতে অবস্থান করেন। সেখানে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় বিমান বাহিনীর গরুড় কমান্ডো ইউনিট।
– দুই দিন পর তাঁকে দিল্লির লুটিয়েন্স অঞ্চলে একটি সুরক্ষিত বাংলোতে স্থানান্তরিত করা হয়। এটি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার একটি সেফ হাউস বলে জানা গেছে।
– বর্তমানে তিনি ইন্ডিয়া গেট ও খান মার্কেটের কাছাকাছি একটি অঞ্চলে অবস্থান করছেন বলে সূত্রের খবর।
– শেখ হাসিনার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (NSG) কমান্ডো বাহিনী।
– তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও মায়ের সাথে অবস্থান করছেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) একজন আঞ্চলিক পরিচালক।
– শেখ হাসিনাকে লোধি গার্ডেনে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে বলে কিছু সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
শেখ হাসিনা এখন লুটিয়েন্স দিল্লির নিরাপদ আবাসে, জানুন এই অভিজাত ঠিকানায় কারা থাকেন
– গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। প্রথমে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলন পরে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।
– আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানায়। ব্যাপক সংঘর্ষের পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
– বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে।
– শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তাই তিনি বর্তমানে বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না।
– প্রথমে তিনি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চাইতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাজ্য তাঁকে আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন।
– বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, শেখ হাসিনার ভারতে দীর্ঘদিন অবস্থান করা উচিত নয়।
– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, তাঁর মা এখনই ভারত ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা করছেন না।
– ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে তাঁর অবস্থান ভারতের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
– বাংলাদেশের নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
– শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র বা ফিনল্যান্ডে যাওয়ার বিকল্প খুঁজছেন বলে কিছু সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
– তবে তাঁর ছেলের বক্তব্য অনুযায়ী, এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
– বাংলাদেশে নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তিনি ভারতেই থাকতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।
– এটি শেখ হাসিনার দ্বিতীয়বার দিল্লিতে গোপন অবস্থান। ১৯৭৫ সালে তাঁর পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ৬ বছর দিল্লিতে ছিলেন।
– বর্তমানে তিনি যে বাংলোতে আছেন, সেটি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তিনটি সেফ হাউসের একটি।
– শেখ হাসিনার নিরাপত্তার জন্য দিল্লি পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টরকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তবে দুই-তিন দিন পর তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়।
– শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কয়েকবার দেখা করেছেন। এসব সাক্ষাৎ কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে হয়েছে।
শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় এনেছে। তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে বাংলাদেশে নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তিনি ভারতেই থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করুন