How to tell if you’re having a boy: গর্ভবতী মায়েরা প্রায়শই জানতে চান তাদের গর্ভে ছেলে সন্তান রয়েছে কিনা। যদিও গর্ভাবস্থায় শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য চিকিৎসা পরীক্ষাই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি, কিছু সাধারণ লক্ষণ থেকে অনেকে অনুমান করতে চেষ্টা করেন। তবে এসব লক্ষণ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয় এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। আসুন জেনে নেই ছেলে সন্তান হওয়ার কিছু সাধারণ লক্ষণ সম্পর্কে।
অনেকে মনে করেন, গর্ভবতী মায়ের পেটের আকৃতি ও অবস্থান থেকে শিশুর লিঙ্গ অনুমান করা যায়। যদি পেট গোলাকার হয় এবং উপরের দিকে উঠে থাকে, তাহলে তা ছেলে সন্তানের ইঙ্গিত বলে ধরা হয়। অবশ্য এটি কোনও বৈজ্ঞানিক তথ্য নয়, বরং লোকজ বিশ্বাসের অংশ।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ছেলে শিশুর হৃদস্পন্দনের হার মেয়ে শিশুর তুলনায় কম হতে পারে। সাধারণত প্রতি মিনিটে ১৪০ বারের কম হৃদস্পন্দন হলে তা ছেলে সন্তানের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে এই তথ্যটিও সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য নয়।
গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়। কিছু জনপ্রিয় ধারণা অনুযায়ী, ছেলে সন্তান হলে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি হতে পারে:
এসব লক্ষণ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত এবং বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়।
গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যাভ্যাস ও খাবারের প্রতি আকর্ষণ থেকেও অনেকে শিশুর লিঙ্গ অনুমান করার চেষ্টা করেন। ছেলে সন্তান হলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা হয়:
তবে এসব লক্ষণ ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের উপর নির্ভর করে এবং শিশুর লিঙ্গের সাথে এর কোনও প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই।
যদিও বিভিন্ন কুসংস্কার ও জনপ্রিয় ধারণা রয়েছে, শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। এর মধ্যে রয়েছে:
গর্ভাবস্থার ১৮-২০ সপ্তাহের মধ্যে আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানের মাধ্যমে শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে প্রায় ৯৫% সঠিকতা পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থার ১০-১৩ সপ্তাহের মধ্যে সিভিএস পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়। এই পদ্ধতিতে প্লাসেন্টা থেকে কোষ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়।
গর্ভাবস্থার ১৫-২০ সপ্তাহের মধ্যে অ্যামনিওসেন্টেসিস পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়। এই পদ্ধতিতে অ্যামনিওটিক তরল পরীক্ষা করে শিশুর জেনেটিক তথ্য জানা যায়।
শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণে পিতার শুক্রাণুর ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের X ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণু মেয়ে সন্তান এবং Y ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণু ছেলে সন্তান জন্ম দেয়। সাধারণত X ও Y ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণুর অনুপাত সমান থাকে, তাই ছেলে বা মেয়ে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৫০-৫০।নিম্নলিখিত টেবিলে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা প্রভাবিত করতে পারে এমন কিছু কারণ দেখানো হলো:
কারণ | প্রভাব |
---|---|
পিতার বয়স | বয়স বাড়ার সাথে সাথে Y ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণুর সংখ্যা কমতে পারে |
মায়ের খাদ্যাভ্যাস | কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে ছেলে সন্তানের সম্ভাবনা বাড়তে পারে |
যৌন সম্পর্কের সময় | ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার কাছাকাছি সময়ে যৌন সম্পর্ক করলে ছেলে সন্তানের সম্ভাবনা বাড়তে পারে |
হরমোনের ভারসাম্য | পিতা-মাতার হরমোনের ভারসাম্য শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে |
অনেক সময় বিভিন্ন ভুল ধারণা ও কুসংস্কার ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ হিসেবে প্রচলিত থাকে। এগুলো মূলত বৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীন এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। নিচে কয়েকটি ভুল ধারণা তুলে ধরা হলো:
কিছু লোক বিশ্বাস করে যে, গর্ভধারণের সময় চাঁদের অবস্থান শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করতে পারে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা এবং কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
কেউ কেউ মনে করে যে, মায়ের বয়স শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণে প্রভাব ফেলে। বাস্তবে, মায়ের বয়সের সাথে শিশুর লিঙ্গের কোনও সরাসরি সম্পর্ক নেই।
কিছু লোক মনে করে যে, গর্ভাবস্থার সময়কাল শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করতে পারে। এটিও একটি ভুল ধারণা, কারণ শিশুর লিঙ্গ গর্ভধারণের সময়েই নির্ধারিত হয়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন? কারন এবং ১০০% উপশমের কৌশল
যদিও বিভিন্ন লক্ষণ ও ধারণা প্রচলিত আছে, মনে রাখা প্রয়োজন যে এগুলো কেবল অনুমান মাত্র। শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য চিকিৎসা পরীক্ষাই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো উচিত।