Rising trend of sleep divorce: আচ্ছা, ধরুন আপনি আর আপনার জীবনসঙ্গী একই ছাদের নিচে আছেন, কিন্তু রাতে ঘুমান আলাদা ঘরে। শুনতে একটু অদ্ভুত লাগলেও, এটাই হলো “স্লিপিং ডিভোর্স”। ভাবছেন, ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও কি ডিভোর্স হয় নাকি? ভারতে এই ট্রেন্ডটা বাড়ছে কেন? চলুন, এই বিষয়গুলো নিয়ে একটু খোলামেলা আলোচনা করি।
“স্লিপিং ডিভোর্স” মানে হলো স্বামী ও স্ত্রী একসঙ্গে সংসার করছেন, কিন্তু তারা আলাদা ঘরে ঘুমান। এটা কিন্তু মোটেও legal ডিভোর্স নয়। এখানে তারা হয়তো সন্তান মানুষ করছেন, সংসারের কাজ করছেন, কিন্তু রাতে ঘুমানোর সময় তাদের পথ আলাদা হয়ে যায়।
দম্পতিরা কেন এমন সিদ্ধান্ত নেয়? এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। হয়তো একজনের ঘুমের সমস্যা আছে, যেমন নাক ডাকা বা অন্য কিছু। আবার হয়তো দুজনের schedule একদম আলাদা, একজনের রাতে কাজ থাকে, আরেকজনের সকালে। তাই ঘুমের ব্যাঘাত এড়াতে তারা আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
আসলে, এটা শুধু ঘুমের সমস্যা নয়। অনেক সময় দেখা যায়, emotional বা শারীরিক ঘনিষ্ঠতার অভাবেও এমনটা হয়। দিনের পর দিন ঝগড়া, মনোমালিন্য, অথবা একে অপরের প্রতি আকর্ষণ কমে গেলে অনেক দম্পতি এই পথ বেছে নেয়।
সব সময় স্লিপিং ডিভোর্স খারাপ না। কিছু ক্ষেত্রে এটা সম্পর্কের জন্য ভালোও হতে পারে।
ধরুন, একজন মানুষ খুব নাক ডাকেন, আর তার কারণে অন্যজনের রাতে ঘুম হয় না। দিনের পর দিন ঘুম না হলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, যা সম্পর্কের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে, আলাদা ঘুমানোটা একটা সমাধান হতে পারে। এতে দুজনেরই ঘুম ভালো হবে, আর দিনের বেলা তারা শান্তিতে থাকতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা কী বলেন? মনোবিদরা মনে করেন, যদি আলাদা ঘুমানোর কারণে দুজনের জীবনযাত্রার মান (Quality of Life) উন্নত হয়, তাহলে এটা খারাপ কিছু না। তবে, তারা এটাও বলেন যে, এই পরিস্থিতিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগ (Communication) বজায় রাখাটা খুব জরুরি। নিয়মিত কথা বলা, একসঙ্গে সময় কাটানো, এবং একে অপরের প্রতি খেয়াল রাখাটা দরকার।
আগেকার দিনে joint family-র চল ছিল। সেখানে ব্যক্তিগত space পাওয়াটা কঠিন ছিল। কিন্তু এখন বেশিরভাগ মানুষ nuclear family-তে থাকে, যেখানে নিজের মতো করে থাকার সুযোগ বেশি।
আর্থিক স্বাধীনতাও একটা বড় কারণ। এখন স্বামী-স্ত্রী দুজনেই হয়তো চাকরি করেন, তাই আলাদা থাকার খরচ চালানোর সামর্থ্য তাদের থাকে। এছাড়া, শহরের জীবন আর কাজের tension ঘুমের ওপর খুব খারাপ প্রভাব ফেলে। Late night shift, stress, আর irregular lifestyle-এর কারণে অনেকেরই ঘুমের সমস্যা হয়। তাই, স্লিপিং ডিভোর্স তাদের কাছে একটা সমাধান মনে হতে পারে।
আগে মানুষজন নিজেদের ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো লুকিয়ে রাখত। কিন্তু এখন social media-র যুগে মানুষ অনেক বেশি খোলামেলা। তারা নিজেদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে দ্বিধা করে না।
এখন অনেকেই মনে করেন, “আমার ঘুম আমার কাছে খুব important”। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি, এটা এখন সবাই বোঝে। তাই, ঘুমের ব্যাঘাত এড়াতে মানুষ আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
তবে, স্লিপিং ডিভোর্সকে সমাজ কিভাবে দেখে? কেউ এটাকে ব্যর্থতা মনে করেন, আবার কেউ আধুনিক সমাধান হিসেবে দেখেন। দৃষ্টিভঙ্গিটা ব্যক্তি আর পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।
ঘুমের অভাবে আমাদের শরীরে অনেক সমস্যা হতে পারে। যেমন:
নাক ডাকা, অনিদ্রা (insomnia), restless legs syndrome-এর মতো ঘুমের সমস্যাগুলো স্লিপিং ডিভোর্স-এর দিকে ঠেলে দেয়। মানুষ এখন আগের থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তারা বুঝতে পারছে যে, ভালো থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম কতটা জরুরি। তাই, ঘুমের সমস্যা হলে তারা doctor-এর পরামর্শ নিচ্ছে, lifestyle change করছে, এবং প্রয়োজনে আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
সুবিধা (Pros) | অসুবিধা (Cons) |
---|---|
ভালো ঘুম (Better Sleep) | শারীরিক ঘনিষ্ঠতা কমে যাওয়া (Reduced Intimacy) |
মানসিক চাপ কম (Reduced Stress) | যোগাযোগের অভাব (Lack of Communication) |
সম্পর্কের উন্নতি (Improved Relationship) | সামাজিক stigmas (Social stigmas) |
অনেক celebrity-ও স্লিপিং ডিভোর্স নিয়েছেন। যেমন, Kim Kardashian ও Kanye West একসময় আলাদা ঘরে ঘুমাতেন। তাদের কারণ ছিল Kanye-র ঘুমের সমস্যা। সাধারণ মানুষের জীবনেও এমন উদাহরণ দেখা যায়।
ধরুন, একটি দম্পতি, যাদের একটি ছোট বাচ্চা আছে। স্ত্রী রাতে বাচ্চার দেখাশোনা করেন, আর স্বামী সকালে অফিসের জন্য তাড়াতাড়ি ওঠেন। দুজনের ঘুমের schedule আলাদা হওয়ার কারণে তারা আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নেন। এতে দুজনেরই সুবিধা হয়, এবং তাদের সম্পর্কও ভালো থাকে।
তবে, সব স্লিপিং ডিভোর্স সফল হয় না। অনেক সময় দেখা যায়, আলাদা ঘুমানোর কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব আরও বেড়ে যায়, এবং শেষ পর্যন্ত তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়।
মনোবিদরা বলেন, স্লিপিং ডিভোর্স নেওয়ার আগে খুব ভালোভাবে চিন্তা করা উচিত। নিজেদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা করা দরকার। যদি দেখেন যে আলাদা ঘুমানোর কারণে আপনাদের সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে, তাহলে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা উচিত।
সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলেন, শারীরিক ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখাটা খুব জরুরি। আলাদা ঘুমালেও চেষ্টা করুন দিনের বেলা একসঙ্গে সময় কাটাতে, কথা বলতে, এবং একে অপরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে।
ঘুম বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘুমের সমস্যা থাকলে doctor-এর পরামর্শ নিন। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন, এবং ঘুমের hygiene মেনে চলুন।
স্লিপিং ডিভোর্স নেওয়ার আগে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করুন:
খারাপ সময় নিয়ে স্ট্যাটাস: যখন জীবন কঠিন, তখনও হাসিমুখে থাকুন!
স্লিপিং ডিভোর্স (Sleeping Divorce) কোনো সহজ সমাধান নয়, তবে সঠিক কারণে এবং সঠিক উপায়ে নিলে এটা সম্পর্কের জন্য ভালো হতে পারে। মূল কথা হলো, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখা এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।
যদি আপনার মনে হয় যে স্লিপিং ডিভোর্স আপনার সম্পর্কের জন্য একটা option হতে পারে, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। আপনার দাম্পত্য জীবন সুখের হোক!
মন্তব্য করুন