Cultural reasons Russian women attraction India: ভারতে রাশিয়ান মেয়েদের প্রতি একটি বিশেষ আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায়। এই ঘটনাটি শুধুমাত্র সামাজিক মিডিয়ায় নয়, বরং বাস্তব জীবনেও প্রতিফলিত হয়। অনেক ভারতীয় পুরুষ রাশিয়ান মেয়েদের সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা এবং ব্যক্তিত্বের প্রতি আকৃষ্ট হন। এই আকর্ষণের পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যা সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।
রাশিয়ান মেয়েদের প্রতি ভারতীয় পুরুষদের এই আকর্ষণের একটি প্রধান কারণ হল তাদের গায়ের রঙ। ভারতীয় সমাজে ফর্সা রঙের প্রতি একটি অস্বাভাবিক পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। এই মানসিকতা বলিউড চলচ্চিত্র এবং মিডিয়ার মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়েছে। বলিউড সিনেমায় প্রায়শই দেখা যায় যে, নাচের দৃশ্যে পটভূমিতে গোরা রঙের মেয়েদের ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের চিত্রায়ন ভারতীয় পুরুষদের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। সামাজিক মিডিয়ার প্রভাবও এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। অনেক রাশিয়ান ইনফ্লুয়েন্সার ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, যা ভারতীয় দর্শকদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এর ফলে, অনেক ভারতীয় পুরুষ রাশিয়ান মেয়েদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই আচরণ অনেক সময় অনুপযুক্ত এবং অসম্মানজনক রূপ নেয়।
রাশিয়ান মেয়েদের প্রতি এই আকর্ষণের আরেকটি কারণ হল সাংস্কৃতিক বিনিময়। ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। অনেক প্রজন্মের রাশিয়ানরা ভারতীয় চলচ্চিত্র দেখে বড় হয়েছেন। এছাড়া, যোগব্যায়াম রাশিয়ায় ১৯৮০ সাল থেকে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই সাংস্কৃতিক বিনিময় দুই দেশের মানুষের মধ্যে একটি যোগসূত্র তৈরি করেছে।তবে এই আকর্ষণের নেতিবাচক দিকও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে, ভারতীয় পুরুষরা রাশিয়ান মেয়েদের প্রতি অনুচিত আচরণ করেন। উদাহরণস্বরূপ, দিল্লির সরোজিনী নগর মার্কেটে একটি ঘটনায় দেখা গেছে, একজন ভারতীয় পুরুষ একজন রাশিয়ান মেয়েকে অনুসরণ করছিলেন এবং তার সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য জোর করছিলেন। এই ধরনের আচরণ শুধু অসম্মানজনক নয়, এটি বিদেশী পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ভারতীয় সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত বর্ণবাদী ধারণাগুলি পরিবর্তন করা দরকার। মিডিয়া এবং চলচ্চিত্র শিল্পকে এই ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা যদি বিভিন্ন ত্বকের রঙের সৌন্দর্যকে সমানভাবে উপস্থাপন করে, তাহলে তা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সাহায্য করবে।পর্যটন ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। ভারতে প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ বিদেশী পর্যটক আসেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সম্মানজনক আচরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু পর্যটন শিল্পের জন্য নয়, দেশের ভাবমূর্তির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যদিকে, ভারত-রাশিয়া সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজন রয়েছে। জওহরলাল নেহরু কালচারাল সেন্টার, মস্কো ১৯৮৯ সাল থেকে এই কাজ করে আসছে। তারা বিভিন্ন রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এছাড়াও, ভারতীয় শিক্ষকরা সেখানে কথক নৃত্য, যোগ, তবলা এবং হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের ক্লাস পরিচালনা করেন।ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিষদ (ICCR) রাশিয়ান ফেডারেশনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাথে একটি প্রোটোকল স্বাক্ষর করেছে। এর অধীনে, উভয় দেশের সাংস্কৃতিক দলগুলি পর্যায়ক্রমে ভারত ও রাশিয়া ভ্রমণ করে। ২০২৩ সালে, ভারত থেকে পাঁচটি দল রাশিয়ান ফেডারেশনের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করেছিল।
এছাড়াও, রাশিয়ান ফেডারেশনের নাগরিকদের জন্য চারটি বৃত্তি প্রকল্প রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা ভারতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পান। এই বৃত্তিগুলি মানবিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, আয়ুর্বেদ, নৃত্য এবং সংগীতের ক্ষেত্রে প্রদান করা হয।রাশিয়ায় ভারতীয় সংস্কৃতি প্রচারের জন্য নিয়মিতভাবে ‘ভারতীয় সংস্কৃতির দিন’ আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় শিক্ষকরা নৃত্য ও সংগীতের মাস্টারক্লাস পরিচালনা করেন। অন্যদিকে, রাশিয়াতেও বেশ কয়েকটি ভারতীয় অধ্যয়ন কেন্দ্র রয়েছে যেখানে ভারতীয় ভাষা ও বিষয় পড়ানো হয।
২০২৪ সালের ২৩ জুন, মস্কোর “কলমনস্কোয়ে” মিউজিয়াম-রিজার্ভ পার্কে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের দশম বার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে মোট ২০,০০০ জন অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে প্রধান অনুষ্ঠানে ৫০০০ জন, রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ১০,০০০ জন, পার্কে আয়োজিত ১৫টি পূর্ব ও পরবর্তী অনুষ্ঠানে ৪০০০ জন এবং মস্কোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আয়োজিত যোগ সেশনে ১০০০ জন অংশগ্রহণ করেন।উল্লেখ্য যে, ভারতে বসবাসকারী রাশিয়ানদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। রাশিয়ান সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে বসবাসকারী রাশিয়ান নাগরিকের সংখ্যা মাত্র ৮৪৫ জন। তবে এই সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
বিশেষ করে গোয়াতে রাশিয়ান অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়েছে। অনেক তরুণ রাশিয়ান, যারা নিজেদের দেশে জীবনযাপনে অসন্তুষ্ট, তারা আন্তরিক শান্তির খোঁজে গোয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সস্তা দৈনিক চার্টার ফ্লাইটের মাধ্যমে হাজার হাজার রাশিয়ান পর্যটক গোয়ায় আসছেন। এমনকি অনেক রাশিয়ান গোয়ায় ব্যবসা শুরু করেছেন। বীচের পাশে অনেক রেস্তোরাঁ রাশিয়ান ভাষায় সাইনবোর্ড লাগিয়েছে রাশিয়ান গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য।
মরজিম গ্রামটি স্থানীয়দের কাছে “লিটল রাশিয়া” নামে পরিচিত, কারণ সেখানে বসবাস রাশিয়ায় ভারতীয় সংস্কৃতি প্রচারের জন্য নিয়মিতভাবে ‘ভারতীয় সংস্কৃতির দিন’ আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় শিক্ষকরা নৃত্য ও সংগীতের মাস্টারক্লাস পরিচালনা করেন। অন্যদিকে, রাশিয়াতেও বেশ কয়েকটি ভারতীয় অধ্যয়ন কেন্দ্র রয়েছে যেখানে ভারতীয় ভাষা ও বিষয় পড়ানো হয়।২০২৪ সালের ২৩ জুন, মস্কোর “কলমনস্কোয়ে” মিউজিয়াম-রিজার্ভ পার্কে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের দশম বার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে মোট ২০,০০০ জন অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে প্রধান অনুষ্ঠানে ৫০০০ জন, রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ১০,০০০ জন, পার্কে আয়োজিত ১৫টি পূর্ব ও পরবর্তী অনুষ্ঠানে ৪০০০ জন এবং মস্কোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আয়োজিত যোগ সেশনে ১০০০ জন অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য যে, ভারতে বসবাসকারী রাশিয়ানদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। রাশিয়ান সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে বসবাসকারী রাশিয়ান নাগরিকের সংখ্যা মাত্র ৮৪৫ জন। তবে এই সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।বিশেষ করে গোয়াতে রাশিয়ান অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়েছে। অনেক তরুণ রাশিয়ান, যারা নিজেদের দেশে জীবনযাপনে অসন্তুষ্ট, তারা আন্তরিক শান্তির খোঁজে গোয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সস্তা দৈনিক চার্টার ফ্লাইটের মাধ্যমে হাজার হাজার রাশিয়ান পর্যটক গোয়ায় আসছেন। এমনকি অনেক রাশিয়ান গোয়ায় ব্যবসা শুরু করেছেন। বীচের পাশে অনেক রেস্তোরাঁ রাশিয়ান ভাষায় সাইনবোর্ড লাগিয়েছে রাশিয়ান গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য।