How to choose good oranges buying guide: কমলালেবু কেনার সময় আপনি কি প্রায়ই হতাশ হন? চিন্তা করবেন না, আজ আপনাকে জানিয়ে দেব কীভাবে সবচেয়ে ভালো ও রসালো কমলালেবু বেছে নিতে হয়। এই সহজ টিপসগুলি মেনে চললে আর কখনও খারাপ কমলালেবু কিনে ঠকবেন না।কমলালেবু একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর ফল যা ভিটামিন সি, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। তাই প্রতিদিনের খাবারে কমলালেবু অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। কিন্তু সেজন্য প্রয়োজন সঠিক ও রসালো কমলালেবু বেছে নেওয়া।
কমলালেবু কেনার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এর ওজন। ভারী কমলালেবু বেছে নিন, কারণ এতে রসের পরিমাণ বেশি থাকে। হাতে নিয়ে তুলনা করে দেখুন কোনটি বেশি ভারী মনে হচ্ছে। যে কমলালেবুটি আকারের তুলনায় বেশি ভারী, সেটিই বেশি রসালো হবে।
Most Expensive Mango in the World: হিমসাগর নয়, আমের রাজত্বের শাহেন্ শা অন্য কেউ
কমলালেবুর রঙ উজ্জ্বল ও একসমান হওয়া উচিত। সবুজ রঙের দাগ থাকলে বুঝতে হবে ফলটি পরিপক্ক হয়নি। তবে কিছু প্রজাতির কমলালেবুতে সামান্য সবুজাভ থাকতে পারে, যা স্বাভাবিক। ত্বকে কোনো কালো দাগ বা নরম অংশ থাকা উচিত নয়। ফলের গায়ে ছোটখাটো আঁচড় থাকলে সমস্যা নেই, এগুলো বাতাসের কারণে গাছে লেগে যায়।
হাতে নিয়ে কমলালেবুটি টিপে দেখুন। ভালো কমলালেবু শক্ত ও দৃঢ় অনুভূত হবে। যদি নরম বা স্পঞ্জের মতো অনুভূত হয়, তাহলে বুঝতে হবে ফলটি পচনের দিকে যাচ্ছে। অতিরিক্ত নরম বা কুঁচকে যাওয়া কমলালেবু এড়িয়ে চলুন।
ভালো কমলালেবুর একটি মিষ্টি ও সুগন্ধি আমেজ থাকে। ফলটি নাকের কাছে নিয়ে শুঁকে দেখুন। যদি কোনো গন্ধ না পান বা অস্বাভাবিক গন্ধ পান, তাহলে সেটি এড়িয়ে যান। তাজা ও মিষ্টি কমলালেবুর সুবাস আপনার নাকে লাগবেই।
কমলালেবুর ত্বক মসৃণ ও চকচকে হওয়া উচিত। খসখসে বা অসমান ত্বক মানে ফলটি শুকিয়ে গেছে। তবে কিছু প্রজাতির কমলালেবুর ত্বক স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা খসখসে হতে পারে। মোটামুটি একটি মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বক খুঁজে নিন।
এই প্রজাতির কমলালেবু সহজেই চেনা যায় কারণ এর একপাশে একটি ছোট গর্ত থাকে যা নাভির মতো দেখতে। নাভেল কমলালেবু খাওয়ার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এতে বীজ থাকে না। এর স্বাদ মিষ্টি ও টকটকে।
এই প্রজাতির কমলালেবু রস বের করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এতে বীজ থাকে এবং স্বাদ একটু কম মিষ্টি। গ্রীষ্মকালে এই কমলালেবু পাওয়া যায়।
এগুলো ছোট আকারের এবং খুব মিষ্টি স্বাদের হয়। এর খোসা সহজেই ছাড়ানো যায়। ট্যাঞ্জেরিন ও ক্লেমেন্টাইন এই প্রজাতির অন্তর্গত।
এর ভিতরের অংশ লাল রঙের হয় এবং স্বাদ একটু টক। এতে অ্যান্থোসায়ানিন নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
কমলালেবু কেনার পর সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা জরুরি। এতে করে আপনি দীর্ঘদিন ধরে তাজা ও স্বাদযুক্ত কমলালেবু উপভোগ করতে পারবেন।
কমলালেবু ১-২ দিনের জন্য রুম টেম্পারেচারে রাখা যায়। এতে করে ফলের স্বাদ ও সুগন্ধ বজায় থাকে। তবে বেশিদিন রাখলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য কমলালেবু ফ্রিজে রাখুন। এতে করে ২ সপ্তাহ পর্যন্ত তাজা থাকবে। তবে খেয়াল রাখবেন যেন অন্য খাবারের সাথে না মেশে।
কমলালেবু অন্য ফলের থেকে আলাদা করে রাখুন। কারণ কিছু ফল থেকে নির্গত গ্যাস কমলালেবুকে দ্রুত পাকিয়ে দিতে পারে।
কমলালেবু সংরক্ষণের জন্য একটি ঠাণ্ডা ও শুষ্ক জায়গা বেছে নিন। অতিরিক্ত আর্দ্রতা ফলকে নষ্ট করে দিতে পারে।
কমলালেবু অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। এতে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজ যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
একটি মাঝারি আকারের কমলালেবুতে প্রায় ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে, যা দৈনিক প্রয়োজনীয়তার ১০০% এরও বেশি। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে।
কমলালেবুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। একটি কমলালেবুতে প্রায় ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে। এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
কমলালেবুতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ফ্লাভোনয়েড ও ক্যারোটিনয়েড থাকে। এগুলো ফ্রি র্যাডিকেল থেকে শরীরকে রক্ষা করে এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়।
একটি কমলালেবুতে প্রায় ২৩৭ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
কমলালেবুতে ক্যালসিয়ামও রয়েছে। একটি কমলালেবুতে প্রায় ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। এটি হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।
কমলালেবু কেনার সময় এই সহজ টিপসগুলি মনে রাখলে আপনি সবসময় সেরা ও রসালো ফল পাবেন। মনে রাখবেন, ভারী, দৃঢ় ও সুগন্ধযুক্ত কমলালেবুই হল সবচেয়ে ভালো। এছাড়া রঙ, ত্বকের বুনট ও তাপমাত্রাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে আপনি দীর্ঘদিন ধরে তাজা কমলালেবু উপভোগ করতে পারবেন। নিয়মিত কমলালেবু খেলে আপনার শরীর পাবে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই আজই থেকে এই পুষ্টিকর ফলটি আপনার দৈনন্দিন খাবারে অন্তর্ভুক্ত করুন।