Top neurologists in Kolkata: কলকাতা ভারতের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে দেশের সেরা নিউরোলজিস্টরা রয়েছেন যারা স্নায়ুবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশেষজ্ঞ। আজ আমরা কলকাতার সেরা ১০ জন নিউরোলজিস্টের একটি তালিকা নিয়ে এসেছি, যারা তাদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং রোগীদের প্রতি যত্নশীল মনোভাবের জন্য সুপরিচিত।এই তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন মেডিকেল জার্নাল, হাসপাতালের রেকর্ড এবং রোগীদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে। তবে মনে রাখবেন, এটি কোনও র্যাঙ্কিং নয়, বরং কলকাতার কিছু বিশিষ্ট নিউরোলজিস্টদের একটি সংকলন মাত্র।
ডাঃ ঘোষ কলকাতার অন্যতম বরেণ্য নিউরোলজিস্ট। তিনি বিশেষ করে স্ট্রোক এবং এপিলেপসির চিকিৎসায় দক্ষ। তার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক। গত বছর তিনি প্রায় ৫০০০ রোগীর চিকিৎসা করেছেন।
ডাঃ বিশ্বাস পার্কিনসন্স ডিজিজ এবং অন্যান্য মুভমেন্ট ডিসঅর্ডারের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। তিনি নিয়মিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং তার গবেষণা প্রবন্ধগুলি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
কিডনি ড্যামেজের ১০টি প্রারম্ভিক লক্ষণ যা আপনাকে সতর্ক করবে – জানুন
মস্তিষ্কের টিউমার এবং নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের চিকিৎসায় ডাঃ রায়চৌধুরী একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে এই ক্ষেত্রে কাজ করছেন এবং তার অধীনে অনেক যুবা নিউরোলজিস্ট প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
ডাঃ দাশগুপ্ত মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস এবং অন্যান্য অটোইমিউন নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। তিনি নিয়মিত আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেন এবং তার কাজের জন্য বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন।
ডাঃ সেন শিশুদের নিউরোলজিক্যাল সমস্যার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। তিনি সিরিব্রাল পালসি, অটিজম এবং ADHD সহ বিভিন্ন নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা করেন। গত বছর তিনি প্রায় ৩০০০ শিশু রোগীর চিকিৎসা করেছেন।
ডাঃ ভট্টাচার্য হেডেক এবং মাইগ্রেনের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। তিনি নতুন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন এবং তার কাজ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তার ক্লিনিকে প্রতি মাসে গড়ে ৬০০ রোগী আসেন।
ডাঃ রায় নিউরোমাস্কুলার ডিসঅর্ডার এবং পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। তিনি মায়াস্থেনিয়া গ্রাভিস এবং গিলেন-বারে সিনড্রোমের মতো দুর্লভ রোগের চিকিৎসায়ও দক্ষ। তার ২০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
কলকাতার সেরা ৫ জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ: যাদের কাছে যাওয়া উচিত
ডাঃ মুখোপাধ্যায় স্লিপ ডিসঅর্ডার এবং কগনিটিভ নিউরোলজির বিশেষজ্ঞ। তিনি আলজাইমার্স ডিজিজ এবং অন্যান্য ডিমেনশিয়ার প্রারম্ভিক নির্ণয় এবং চিকিৎসায় বিশেষ দক্ষ। তিনি প্রতি বছর প্রায় ৪০০০ রোগীর চিকিৎসা করেন।
ডাঃ গাঙ্গুলী নিউরো-অনকোলজি এবং নিউরো-ইমিউনোলজির বিশেষজ্ঞ। তিনি মস্তিষ্কের ক্যান্সার এবং স্পাইনাল কর্ড টিউমারের চিকিৎসায় বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছেন। তিনি নিয়মিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তৃতা দেন।
ডাঃ চট্টোপাধ্যায় স্ট্রোক এবং সিরিব্রোভাস্কুলার ডিজিজের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। তিনি স্ট্রোক প্রিভেনশন এবং রিহ্যাবিলিটেশন নিয়ে কাজ করেন।
গত বছর তিনি প্রায় ৩৫০০ রোগীর চিকিৎসা করেছেন।এই চিকিৎসকরা শুধু তাদের ক্ষেত্রে দক্ষ নন, তারা রোগীদের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং যত্নবান হিসেবেও পরিচিত। তারা প্রত্যেকেই নিয়মিত গবেষণা করেন এবং নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করেন।কলকাতায় মোট প্রায় ৫০০ নিউরোলজিস্ট রয়েছেন, যার মধ্যে এই ১০ জন অন্যতম।
তবে এর অর্থ এই নয় যে অন্য চিকিৎসকরা কম দক্ষ। প্রত্যেক রোগীর সমস্যা আলাদা, তাই যে কোনও চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে নেওয়া উচিত।নিউরোলজিক্যাল সমস্যাগুলি জটিল হতে পারে এবং সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য একজন দক্ষ চিকিৎসকের প্রয়োজন। কলকাতায় গড়ে প্রতি বছর প্রায় ১ লক্ষ লোক নিউরোলজিক্যাল সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। এর মধ্যে প্রায় ৩০% রোগী স্ট্রোক-এর শিকার হন, ২০% এপিলেপসি থেকে ভুগছেন, ১৫% মাইগ্রেন বা অন্যান্য মাথাব্যথার সমস্যা নিয়ে আসেন, এবং বাকিরা বিভিন্ন ধরনের নিউরোলজিক্যাল সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নেন।যদি আপনি বা আপনার কোনও প্রিয়জন কোনও নিউরোলজিক্যাল সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে দেরি না করে একজন দক্ষ নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রারম্ভিক নির্ণয় ও চিকিৎসা অনেক ক্ষেত্রেই রোগের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।
মনে রাখবেন, এই তালিকাটি শুধুমাত্র তথ্যমূলক উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। আপনার নির্দিষ্ট সমস্যার জন্য কোন চিকিৎসক সবচেয়ে উপযুক্ত হবেন তা নির্ধারণ করার জন্য আপনার জেনারেল ফিজিশিয়ান বা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করা উচিত।সর্বশেষে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে অনেক নিউরোলজিক্যাল সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এবং কোনও উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আপনার স্বাস্থ্যই আপনার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, তাই এটি নিয়ে কোনও ঝুঁকি নেওয়া উচিত নয়।
মন্তব্য করুন