১. নিজস্ব কর্তৃপক্ষ দ্বারা স্বশাসিত হওয়া
২. অন্তত কিছু অন্য স্বাধীন দেশের কাছ থেকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি পাওয়া
ভারত G-7 এর সদস্য নয়, তা সত্ত্বেও কেন বারবার আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে?
অর্থাৎ নিজের সমস্ত বিষয় নিজে পরিচালনা করার পাশাপাশি অন্য দেশগুলোর কাছে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া জরুরি। এটি না হলে যে কেউ নিজের বাসাকে “দেশ” ঘোষণা করে ফেলতে পারে।জাতিসংঘের তালিকা অনুযায়ী পৃথিবীর দেশগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিচে দেওয়া হল:
ক্রমিক | দেশের নাম | রাজধানী |
---|---|---|
১ | চীন | বেইজিং |
২ | ভারত | নয়াদিল্লি |
৩ | যুক্তরাষ্ট্র | ওয়াশিংটন ডিসি |
৪ | ইন্দোনেশিয়া | জাকার্তা |
৫ | পাকিস্তান | ইসলামাবাদ |
৬ | ব্রাজিল | ব্রাসিলিয়া |
৭ | নাইজেরিয়া | আবুজা |
৮ | বাংলাদেশ | ঢাকা |
৯ | রাশিয়া | মস্কো |
১০ | মেক্সিকো | মেক্সিকো সিটি |
বিশ্বের দেশগুলোকে মহাদেশ অনুযায়ী ভাগ করলে দেখা যায়:
- আফ্রিকা: ৫৪টি দেশ
- এশিয়া: ৪৯টি দেশ
- ইউরোপ: ৪৪টি দেশ
- উত্তর আমেরিকা: ২৩টি দেশ
- দক্ষিণ আমেরিকা: ১২টি দেশ
- ওশেনিয়া: ১৪টি দেশ
- অ্যান্টার্কটিকা: কোনো স্বাধীন দেশ নেই
দেশের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কের একটি বড় কারণ হল বিতর্কিত অঞ্চলগুলো। এমন কিছু অঞ্চল রয়েছে যেগুলো নিজেদেরকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- তাইওয়ান
- কসোভো
- দক্ষিণ ওসেটিয়া
- আবখাজিয়া
- সোমালিল্যান্ড
- ট্রান্সনিস্ট্রিয়া
এছাড়া যুক্তরাজ্যের অন্তর্গত ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডকে অনেকে আলাদা দেশ হিসেবে গণনা করেন। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে এগুলো যুক্তরাজ্যেরই অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।অনেকে ভুলবশত কিছু অঞ্চলকে দেশ মনে করেন যেগুলো আসলে স্বাধীন দেশ নয়। এর মধ্যে রয়েছে:
- প্যুর্তো রিকো (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীনস্থ)
- গ্রীনল্যান্ড (ডেনমার্কের অধীনস্থ)
- বারমুডা (যুক্তরাজ্যের অধীনস্থ)
- গুয়াম (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীনস্থ)
- ফরাসি পলিনেশিয়া (ফ্রান্সের অধীনস্থ)
২০২৪ সালের GDP অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ ১৫টি দেশের তালিকা:
ক্রমিক | দেশ | GDP (ট্রিলিয়ন ডলার) |
---|---|---|
১ | যুক্তরাষ্ট্র | ২৫.৪৩ |
২ | চীন | ১৪.৭২ |
৩ | জাপান | ৪.২৫ |
৪ | জার্মানি | ৩.৮৫ |
৫ | ভারত | ৩.৪১ |
৬ | যুক্তরাজ্য | ২.৬৭ |
৭ | ফ্রান্স | ২.৬৩ |
৮ | রাশিয়া | ২.২৪ |
৯ | কানাডা | ২.১৬ |
১০ | ইতালি | ২.০৪ |
১১ | ব্রাজিল | ১.৯২ |
১২ | অস্ট্রেলিয়া | ১.৬৯ |
১৩ | দক্ষিণ কোরিয়া | ১.৬৭ |
১৪ | মেক্সিকো | ১.৪৬ |
১৫ | স্পেন | ১.৪১ |
দেশের সংখ্যা নির্ধারণে আরেকটি জটিলতা হল নতুন দেশের উদ্ভব। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে নতুন দেশের জন্ম হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে নতুন দেশ হিসেবে যোগ হয়েছে:
- দক্ষিণ সুদান (২০১১)
- মন্টেনিগ্রো (২০০৬)
- সার্বিয়া (২০০৬)
- তিমোর-লেস্তে (২০০২)
অন্যদিকে কিছু দেশ একীভূত হয়ে নতুন দেশ গঠন করেছে। যেমন:
- জার্মান ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক ও জার্মান ফেডারেল রিপাবলিক একীভূত হয়ে জার্মানি গঠিত হয়েছে (১৯৯০)
- উত্তর ইয়েমেন ও দক্ষিণ ইয়েমেন একীভূত হয়ে ইয়েমেন গঠিত হয়েছে (১৯৯০)
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, একটি অঞ্চলকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নিম্নলিখিত শর্তগুলো পূরণ করতে হয়:
১. স্থায়ী জনগোষ্ঠী
২. নির্দিষ্ট ভূখণ্ড
৩. সরকার
৪. অন্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষমতা
২. কানাডা (৯,৯৮৪,৬৭০ বর্গ কিমি)
৩. চীন (৯,৫৯৬,৯৬১ বর্গ কিমি)
৫. ব্রাজিল (৮,৫১৫,৭৭০ বর্গ কিমি)
অন্যদিকে, জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ৫টি দেশ হল:১. চীন (১,৪৩৯,৩২৩,৭৭৬)
২. ভারত (১,৩৮০,০০৪,৩৮৫)
৩. যুক্তরাষ্ট্র (৩৩১,০০২,৬৫১)
৪. ইন্দোনেশিয়া (২৭৩,৫২৩,৬১৫)
৫. পাকিস্তান (২২০,৮৯২,৩৪০)
দেশের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কের আরেকটি কারণ হল কিছু দেশের মধ্যে চলমান সীমান্ত বিবাদ। এই বিবাদগুলো কখনও কখনও সশস্ত্র সংঘর্ষের রূপ নেয়। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সীমান্ত বিবাদ হল:
- ভারত-পাকিস্তান (কাশ্মীর নিয়ে বিবাদ)
- ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন
- চীন-ভারত (অরুণাচল প্রদেশ ও আকসাই চিন নিয়ে বিবাদ)
- জাপান-রাশিয়া (কুরিল দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে বিবাদ)
- আর্জেন্টিনা-যুক্তরাজ্য (ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে বিবাদ)
বিমান বিহীন বিশ্ব: এই ৫টি দেশে নেই কোনো এয়ারপোর্ট, জানুন কীভাবে চলে
এই সীমান্ত বিবাদগুলো অনেক সময় দেশের সংখ্যা নির্ধারণে জটিলতা সৃষ্টি করে। কারণ বিবাদমান অঞ্চলগুলোকে কোন দেশের অন্তর্ভুক্ত করা হবে তা নিয়ে মতভেদ থাকে।বিশ্বের দেশগুলোকে শাসন ব্যবস্থার ভিত্তিতে ভাগ করা যায়:
- গণতান্ত্রিক: ১২৩টি দেশ
- অর্ধ-গণতান্ত্রিক: ৫২টি দেশ
- স্বৈরাচারী: ৫৭টি দেশ
তবে এই বিভাজন নিয়েও মতভেদ রয়েছে। কারণ অনেক দেশ নিজেদেরকে গণতান্ত্রিক দাবি করলেও বাস্তবে সেখানে গণতন্ত্রের চর্চা সীমিত।বিশ্বের দেশগুলোকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তিতে ভাগ করলে দেখা যায়:
- উন্নত দেশ: ৩৯টি
- উন্নয়নশীল দেশ: ১০৩টি
- স্বল্পোন্নত দেশ: ৪৬টি
এই বিভাজন বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী করা হয়েছে। তবে এই বিভাজনও সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়।বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে কিছু দেশ রয়েছে যেগুলো
ভূ-অবস্থানগত কারণে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী:
- দ্বীপরাষ্ট্র: ৪৬টি (যেমন: জাপান, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা)
- স্থলবেষ্টিত দেশ: ৪৪টি (যেমন: নেপাল, ভুটান, উগান্ডা)
- দুই মহাদেশে অবস্থিত দেশ: ২টি (রাশিয়া ও মিশর)
এছাড়া কিছু দেশ রয়েছে যেগুলোর জনসংখ্যা অত্যন্ত কম:
- ভ্যাটিকান সিটি: ৮২৫
- তুভালু: ১১,৬৪৬
- নাউরু: ১০,৮২৪
- পালাউ: ১৮,০৯৪
- সান মারিনো: ৩৩,৯৩১
এই ক্ষুদ্র দেশগুলো নিজেদের স্বাধীন পরিচয় বজায় রাখতে প্রায়শই নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে কিছু দেশ রয়েছে যেগুলো তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত:
- সুইজারল্যান্ড: নিরপেক্ষতার জন্য
- কোস্টারিকা: সেনাবাহিনী না থাকার জন্য
- ভুটান: সকল নাগরিকের সুখ নির্ধারণের জন্য Gross National Happiness Index ব্যবহার করার জন্য
- আইসল্যান্ড: নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারের জন্য
- সিঙ্গাপুর: দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য
দেশের সংখ্যা নির্ধারণে আরেকটি জটিলতা হল কিছু দেশের মধ্যে চলমান বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। এই আন্দোলনগুলো কখনও কখনও নতুন দেশের জন্মের দিকে নিয়ে যায়। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন হল:
- স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা আন্দোলন (যুক্তরাজ্য)
- ক্যাটালোনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন (স্পেন)
- কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন (ইরাক, তুরস্ক, সিরিয়া, ইরান)
- বাস্ক দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন (স্পেন, ফ্রান্স)
এই আন্দোলনগুলো ভবিষ্যতে নতুন দেশের জন্ম দিতে পারে, যা বিশ্বের দেশের সংখ্যা পরিবর্তন করবে।বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে কিছু দেশ রয়েছে যেগুলো তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য বিখ্যাত:
- সৌদি আরব: তেল
- দক্ষিণ আফ্রিকা: হীরা
- অস্ট্রেলিয়া: কয়লা
- চিলি: তামা
- ব্রাজিল: লৌহ আকরিক
এই প্রাকৃতিক সম্পদগুলো এই দেশগুলোর অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে কিছু দেশ রয়েছে যেগুলো তাদের ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য বিখ্যাত:
- মিশর: প্রাচীন সভ্যতার জন্য
- গ্রীস: গণতন্ত্র ও দর্শনের জন্মস্থান হিসেবে
- ইতালি: রোমান সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থল হিসেবে
- ইরাক: মেসোপটেমীয় সভ্যতার জন্য
- চীন: প্রাচীন আবিষ্কার ও সভ্যতার জন্য
এই দেশগুলো মানব সভ্যতার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।সর্বশেষে, দেশের সংখ্যা নির্ধারণের ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। একটি অঞ্চল নিজেকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করলেও তা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে তাকে স্বাধীন দেশ হিসেবে গণ্য করা হয় না। তাই জাতিসংঘের স্বীকৃত ১৯৫টি দেশকেই সাধারণত বিশ্বের মোট দেশ সংখ্যা হিসেবে ধরা হয়।