Truecaller privacy concerns: ট্রুকলার একটি জনপ্রিয় কলার আইডি এবং স্প্যাম ব্লকিং অ্যাপ্লিকেশন, যা বিশ্বব্যাপী ৪০০ মিলিয়নেরও বেশি মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী নিয়ে কাজ করছে। তবে এর নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক ট্রুকলার কতটা নিরাপদ এবং এর ব্যবহার নিয়ে কী কী বিষয় মাথায় রাখা দরকার।
ট্রুকলার মূলত তিনটি প্রধান কাজ করে:
১. কলার আইডেন্টিফিকেশন: অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসলে কলারের নাম ও অন্যান্য তথ্য দেখায়।
২. স্প্যাম ব্লকিং: অবাঞ্ছিত কল ও মেসেজ চিহ্নিত ও ব্লক করে।
৩. নম্বর সার্চ: ফোন নম্বর দিয়ে ব্যক্তির নাম ও অন্যান্য তথ্য খোঁজার সুবিধা দেয়।এই সেবাগুলো দেওয়ার জন্য ট্রুকলার একটি বিশাল ডাটাবেস ব্যবহার করে, যেখানে ৫.৭ বিলিয়নেরও বেশি ফোন নম্বর ও সংশ্লিষ্ট তথ্য রয়েছ।
ট্রুকলারের নিরাপত্তা নিয়ে যেসব প্রধান উদ্বেগ রয়েছে:
ট্রুকলার ব্যবহারকারীদের ফোনবুক অ্যাক্সেস করে সেখান থেকে সব কন্টাক্টের তথ্য নিজেদের ডাটাবেসে যোগ করে। এর ফলে আপনার পরিচিতদের তথ্য তাদের অজান্তেই ট্রুকলারের কাছে চলে যায়।
ট্রুকলার অনেক সময় ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, পেশা, ইমেইল ঠিকানা ইত্যাদি প্রকাশ করে দেয়, যা গোপনীয়তা লঙ্ঘনের শামিল।
২০২০ সালে ট্রুকলারের একটি ডেটা লীকের ঘটনায় ৪৭.৫ মিলিয়ন ভারতীয় ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ডার্ক ওয়েবে বিক্রি হয়েছিল।
ট্রুকলার বিজ্ঞাপনদাতা ও অন্যান্য ব্যবসায়িক পার্টনারদের সাথে ব্যবহারকারীদের তথ্য শেয়ার করে, যা গোপনীয়তার জন্য হুমকি।
ট্রুকলার দাবি করে যে তারা ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে:
ট্রুকলার ব্যবহার করতে চাইলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত:১. অপ্রয়োজনীয় অনুমতি না দেওয়া।
২. প্রোফাইল প্রাইভেট রাখা।
৩. নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা।
৪. অপ্রয়োজনীয় তথ্য না দেওয়া।
৫. সন্দেহজনক লিংক বা মেসেজ এড়িয়ে চলা।
ট্রুকলারের বিকল্প হিসেবে কিছু অ্যাপ রয়েছে যেগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ বলে মনে করা হয়:
অ্যাপ | মূল বৈশিষ্ট্য | নিরাপত্তা রেটিং |
---|---|---|
Should I Answer? | কমিউনিটি-ভিত্তিক স্প্যাম রেটিং | উচ্চ |
Hiya | AI-ভিত্তিক স্প্যাম ডিটেকশন | মাঝারি |
RoboKiller | অটোমেটিক স্প্যাম ব্লকিং | উচ্চ |
প্রাইভেসি এক্সপার্ট অজয় শুক্লা মনে করেন, “ট্রুকলার ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করছে, কারণ এটি অনেক মানুষের তথ্য তাদের অনুমতি ছাড়াই সংগ্রহ ও প্রকাশ করে।”অন্যদিকে, সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রাকেশ গোয়েল বলেন, “ট্রুকলার যদিও কিছু ঝুঁকি রয়েছে, তবে এটি স্প্যাম কল ও ফ্রড প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। সতর্কতার সাথে ব্যবহার করলে এর উপকারিতা পাওয়া যায়।”
হোয়াটসঅ্যাপে আসছে ইনস্টাগ্রামের মতো স্টেটাস ট্যাগিং! জানুন কীভাবে কাজ করবে এই নতুন ফিচার
ট্রুকলার একটি শক্তিশালী টুল যা স্প্যাম কল ও অবাঞ্ছিত যোগাযোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে এর ব্যবহারে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে। ব্যবহারকারীদের এই ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে সচেতন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত যে তারা এই সেবা ব্যবহার করবেন কিনা। যদি ব্যবহার করেন, তাহলে নিরাপত্তা সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।ট্রুকলার নিরাপদ কিনা তা নির্ভর করে ব্যক্তিগত অগ্রাধিকার ও ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতার উপর। তথ্য সুরক্ষা আইন কঠোর হওয়া ও ব্যবহারকারীদের সচেতনতা বাড়ার সাথে সাথে এই ধরনের অ্যাপগুলোর নিরাপত্তাও উন্নত হবে বলে আশা করা যায়।
মন্তব্য করুন