ট্রাম্প প্রশাসনে ভারতীয়দের ভূমিকা
Indian immigrants in the USA: ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসনের সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী বিশেষত ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনায় ট্রাম্প প্রশাসন আরও বেশি করে দক্ষ ও মেধাবী ভারতীয়দের যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি, অর্থনীতি, এবং প্রযুক্তি খাতে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা ইতিমধ্যেই নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন।ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা মার্কিন প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যেমন, প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনে নিকি হ্যালি জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া সেজাল শাহ এবং রাজ শাহ-এর মতো ব্যক্তিত্বরা হোয়াইট হাউজে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এলে ট্রাম্প প্রশাসনে আরও ভারতীয় মুখ দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ভূমিকা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ অভিবাসীদের দ্বারা গঠিত। এর মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন। ২০২1 সালের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৫ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাস করেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১.৪%।ভারতীয়রা মূলত প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, এবং ব্যবসা খাতে নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সিলিকন ভ্যালির মতো জায়গায় ভারতীয়দের প্রভাব অত্যন্ত দৃশ্যমান। গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যাডোবি’র মতো বড় বড় কোম্পানির সিইও-রা ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
দ্বিতীয় ট্রাম্প সরকারে সম্ভাব্য ভারতীয় মুখ
ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে যেসব ভারতীয় বংশোদ্ভূতের নাম আলোচনায় রয়েছে তাদের মধ্যে কয়েকজন উল্লেখযোগ্য:
নাম | বর্তমান দায়িত্ব/অবস্থান | সম্ভাব্য ভূমিকা |
---|---|---|
নিকি হ্যালি | জাতিসংঘের প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত | পররাষ্ট্র বা প্রতিরক্ষা বিভাগে শীর্ষ পদ |
সেজাল শাহ | হোয়াইট হাউজের প্রাক্তন উপদেষ্টা | প্রশাসনিক পরিকল্পনা ও নীতি নির্ধারণ |
রাজ শাহ | প্রাক্তন ডেপুটি প্রেস সচিব | যোগাযোগ বা মিডিয়া ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্ব |
অজিত পাই | ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশনের (FCC) চেয়ারম্যান | প্রযুক্তি ও যোগাযোগ খাতে নীতি নির্ধারণ |
ভারতীয়দের এই সাফল্যের কারণ
ভারতীয় অভিবাসীদের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাদের উচ্চশিক্ষা, কঠোর পরিশ্রম, এবং নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা। যুক্তরাষ্ট্রে আসা বেশিরভাগ ভারতীয় উচ্চশিক্ষিত এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতায় সমৃদ্ধ।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: ৭৫% এর বেশি ভারতীয় অভিবাসী অন্তত ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
- উচ্চ আয়ের পেশা: ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের গড় আয় মার্কিন গড় আয়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
এছাড়া, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ ক্রমশ বাড়ছে। কংগ্রেস সদস্য রো খান্না এবং প্রমীলা জয়পালের মতো নেতারা মার্কিন রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প কখন আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন? জানুন বিস্তারিত
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি ও চ্যালেঞ্জ
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির কারণে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল, যা মূলত প্রযুক্তি খাতে কাজ করা ভারতীয়দের ওপর প্রভাব ফেলেছিল। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষ অভিবাসীদের জন্য আরও সুযোগ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।অন্যদিকে, অভিবাসন নীতির কড়াকড়ি সত্ত্বেও দক্ষ ও মেধাবী অভিবাসীদের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের আস্থা বরাবরই ছিল দৃঢ়। এটি ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন ও নেতৃত্বে অভিবাসীদের বিশেষ করে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের অবদান অস্বীকার করা যায় না। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারে ভারতীয় মুখ আরও বেশি দেখা যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি শুধু মার্কিন রাজনীতিতে নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে।