Best Direction to Study as per Vastu: পড়াশোনায় সাফল্য অর্জনের জন্য শুধু পরিশ্রম করলেই হয় না, পড়ার সময় কোন দিকে মুখ করে বসা হচ্ছে তাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী, পড়াশোনার সময় সঠিক দিকে মুখ করে বসলে মনোযোগ বাড়ে এবং পড়া মনে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা সম্ভব হয়।বাস্তুশাস্ত্র মতে, পড়াশোনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত দিক হল পূর্ব এবং উত্তর দিক। এই দুটি দিকে মুখ করে পড়লে একাগ্রতা বাড়ে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
পূর্ব দিকে মুখ করে পড়লে সূর্যের শক্তি গ্রহণ করা যায়, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আর উত্তর দিকে মুখ করে পড়লে পৃথিবীর চুম্বকীয় শক্তির সাথে শরীরের চুম্বকীয় শক্তি সমন্বিত হয়, যা মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক।তবে শুধু পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে বসলেই হবে না, পড়ার টেবিলটি কোথায় রাখা হচ্ছে তাও গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী, পড়ার টেবিল উত্তর-পূর্ব কোণে রাখা সবচেয়ে ভালো। এই জায়গাটি জ্ঞান ও বুদ্ধির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। উত্তর-পূর্ব কোণে টেবিল রেখে পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে পড়লে সর্বোচ্চ সুফল পাওয়া যায়।পড়ার ঘরের জন্য রঙের ব্যাপারেও বাস্তুশাস্ত্রে কিছু নির্দেশনা রয়েছে।
অল্প বয়সে চুল পড়ার ১০টি অবাক করা কারণ যা আপনাকে চমকে দিতে পারে!
হালকা সবুজ, ক্রিম বা হালকা নীল রঙ পড়ার ঘরের জন্য উপযুক্ত। এই রঙগুলো মনকে শান্ত রাখে এবং একাগ্রতা বৃদ্ধি করে। লাল বা কালো রঙ এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলো মনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করতে পারে।পড়ার ঘরে আলো-বাতাসের ব্যবস্থাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস যাতে ঘরে প্রবেশ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জানালা পূর্ব দিকে থাকলে সকালের সূর্যের আলো পাওয়া যাবে, যা শরীর ও মনকে সতেজ রাখে। তবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে জানালা রাখা উচিত নয়, কারণ এতে অতিরিক্ত তাপ প্রবেশ করতে পারে।পড়ার ঘরে ভারী আসবাবপত্র রাখা উচিত নয়। বইয়ের আলমারি দক্ষিণ দিকে রাখা যেতে পারে। পড়ার টেবিলের উপর অতিরিক্ত জিনিসপত্র রাখা উচিত নয়, এতে মনোযোগ বিঘ্নিত হতে পারে।
টেবিলের উপর শুধু প্রয়োজনীয় বই-খাতা ও লেখার সরঞ্জাম রাখা উচিত।পড়ার ঘরে কোনো আয়না রাখা উচিত নয়। আয়নায় প্রতিফলিত আলো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। একইভাবে টিভি বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিও পড়ার ঘরে রাখা উচিত নয়। এগুলো থেকে নির্গত তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ মনোযোগ নষ্ট করতে পারে।পড়ার ঘরে প্রেরণাদায়ক উদ্ধৃতি বা ছবি লাগানো যেতে পারে। এগুলো মনকে উদ্দীপিত করে এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অনুপ্রেরণা যোগায়। তবে অতিরিক্ত সাজসজ্জা এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে।বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী, পড়ার ঘরে কোনো টয়লেট বা বাথরুম থাকা উচিত নয়। এগুলো থেকে নেতিবাচক শক্তি নির্গত হয় বলে মনে করা হয়। যদি অন্য কোনো উপায় না থাকে, তাহলে টয়লেটের দরজা সব সময় বন্ধ রাখতে হবে।পড়ার ঘরে গাছপালা রাখা যেতে পারে। ছোট টবে রাখা গাছ অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং পরিবেশ পরিশুদ্ধ রাখে। তবে বড় গাছ রাখা উচিত নয়, কারণ এগুলো জায়গা দখল করে এবং যত্ন নেওয়ার জন্য সময় লাগে।
কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে পড়াশোনা করলে সেগুলো দক্ষিণ বা পূর্ব দিকে রাখা উচিত। তবে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার সময় মুখ যেন উত্তর বা পূর্ব দিকে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।বাস্তুশাস্ত্রের এই নিয়মগুলো মেনে চললে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়বে এবং ফলাফল ভালো হবে বলে বিশ্বাস করা হয়। তবে এগুলোর পাশাপাশি নিয়মিত অধ্যয়ন ও পরিশ্রমের বিকল্প নেই। শুধু বাস্তুশাস্ত্র মেনে চললেই ভালো ফল পাওয়া যাবে না, নিজের প্রচেষ্টাও প্রয়োজন।বিভিন্ন বিষয়ের পড়াশোনার জন্য ভিন্ন ভিন্ন দিক নির্দিষ্ট করা আছে বাস্তুশাস্ত্রে। যেমন বিজ্ঞান পড়ুয়াদের জন্য পশ্চিম দিক উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। আইন পড়ুয়াদের জন্য দক্ষিণ দিক ভালো। বাণিজ্য বা কলা বিভাগের ছাত্রদের জন্য পূর্ব দিক উপযুক্ত।
রাজনীতি বা প্রশাসন বিষয়ে পড়াশোনা করলে উত্তর দিকে মুখ করে বসা ভালো। এমবিএ বা আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিলে উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে পড়া উচিত।তবে এসব নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি নিজের সুবিধা অনুযায়ী পড়ার জায়গা নির্বাচন করাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রত্যেকের পড়ার ধরন ও পছন্দ আলাদা। যেখানে বসে পড়তে সুবিধা হয় সেখানে বসে পড়াই সবচেয়ে ভালো। তবে সেক্ষেত্রেও যতটা সম্ভব বাস্তুশাস্ত্রের নিয়মগুলো মেনে চলার চেষ্টা করা উচিত।পড়াশোনার পাশাপাশি বিশ্রাম নেওয়াও খুব জরুরি। দীর্ঘক্ষণ একটানা পড়লে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
CPIM: রাজ্যের জনতা কেন মুখ ফিরিয়ে নিল বামেদের থেকে?
তাই প্রতি ঘণ্টায় ৫-১০ মিনিট বিরতি নেওয়া উচিত। এই সময়ে হাঁটাচলা করা বা হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং মস্তিষ্ক সতেজ থাকে।পড়ার আগে ও পরে ধ্যান করা খুব উপকারী। এতে মন শান্ত থাকে এবং একাগ্রতা বাড়ে। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট ধ্যান করলে মানসিক চাপ কমে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ে। ধ্যানের জন্য পূর্ব দিকে মুখ করে বসা উত্তম।সুষম খাবার খাওয়াও পড়াশোনার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। প্রচুর পরিমাণে জল পান করা উচিত। ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলা ভালো, কারণ এগুলো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।পর্যাপ্ত ঘুম পড়াশোনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। রাতে দেরি করে না ঘুমিয়ে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে সারাদিন মন প্রফুল্ল থাকে এবং পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া সহজ হয়।
মন্তব্য করুন