Vijaya Sammilani celebration: বিজয়া সম্মিলনীর ইতিহাস বেশ পুরনো। পুরাণে উল্লেখ আছে, মহিষাসুর বধের পর দেবতারা মিলিত হয়ে আনন্দ উৎসব করেছিলেন। সেই থেকেই এই রীতির প্রচলন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, রামচন্দ্র রাবণ বধের পর যে বিজয় উৎসব করেছিলেন তা থেকেই বিজয়া সম্মিলনীর সূত্রপাত।বর্তমানে বিজয়া সম্মিলনী শুধু বাংলাতেই সীমাবদ্ধ নেই। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এবং বিদেশেও বাঙালিরা এই উৎসব পালন করে থাকেন। এমনকি নিউইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারেও এখন বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।
বিজয়া সম্মিলনীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি বক্তব্য হল:
- “শুভ বিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই”
- “আগামী বছর আবার হবে”
- “মা আসবেন, আবার আসবেন”
- “বিজয়ার আনন্দ সারা বছর ধরে থাকুক”
এছাড়া অনেকে কবিতা আবৃত্তি করেন বা গান গান। মাইকেল মধুসূদন দত্তের “বিজয়া দশমী” কবিতাটি এই সময় বিশেষ জনপ্রিয়। বিজয়া সম্মিলনীর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এর সামাজিক তাৎপর্য। এই উৎসবের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধন আরও দৃঢ় হয়। বয়স্কদের আশীর্বাদ নেওয়া, ছোটদের স্নেহ করা – এসব মানবিক মূল্যবোধ চর্চার সুযোগ করে দেয় বিজয়া সম্মিলনী। বর্তমানে অনেক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানও তাদের কর্মীদের জন্য বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করে থাকে। এতে কর্মীদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ে এবং কাজের পরিবেশ আরও উন্নত হয়। অনেক স্কুল-কলেজেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়।
বিজয়া সম্মিলনীর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এর অর্থনৈতিক প্রভাব। এই সময় মিষ্টির দোকান, রেস্তোরাঁ, ক্যাটারিং সার্ভিস ইত্যাদি ব্যবসায় বেশ চাঙ্গা থাকে। অনেক ছোট ব্যবসায়ীর কাছে এটা বছরের গুরুত্বপূর্ণ সময়। তবে বর্তমানে বিজয়া সম্মিলনীর ধরনে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। আগে যেখানে শুধু বাড়িতে বা পাড়ায় হত, এখন অনেকে রেস্তোরাঁয় বা রিসর্টে গিয়েও বিজয়া সম্মিলনী করছেন। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভার্চুয়াল বিজয়া সম্মিলনীর প্রচলনও বেড়েছে।
শুভ বিজয়া দশমী 2024: WhatsApp-এ প্রিয়জনদের পাঠান এই মর্মস্পর্শী শুভেচ্ছাবার্তাগুলি
বিজয়া সম্মিলনীর সময় কিছু বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন:
- সবার সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করা
- খাবারের অপচয় না করা
- পরিবেশ দূষণ না করা
- মাদক সেবন না করা
- কোভিড-১৯ এর সতর্কতা মেনে চলা
সামগ্রিকভাবে বলা যায়, বিজয়া সম্মিলনী শুধু একটি উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি, ভালোবাসা ও সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়। তাই বলা যায়, বিজয়া সম্মিলনী শুধু আনন্দ উৎসব নয়, এটি মানবিক মূল্যবোধ চর্চারও একটি সুযোগ।