বিনায়ক চতুর্থী ফেব্রুয়ারি ২০২৫: তারিখ, সময়, রীতিনীতি এবং তাৎপর্য

Vinayaka Chaturthi date and time: বিনায়ক চতুর্থী হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা প্রতি মাসে পালিত হয়। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই উৎসবটি শনিবার, ১লা ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এই দিনটি…

Avatar

 

Vinayaka Chaturthi date and time: বিনায়ক চতুর্থী হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা প্রতি মাসে পালিত হয়। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই উৎসবটি শনিবার, ১লা ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এই দিনটি গণেশ জয়ন্তী নামেও পরিচিত, যা ভগবান গণেশের জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়। বিনায়ক চতুর্থী হিন্দুদের কাছে জ্ঞান, সমৃদ্ধি এবং বাধা অপসারণের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

বিনায়ক চতুর্থীর তারিখ ও সময়

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বিনায়ক চতুর্থীর বিস্তারিত সময়সূচি নিম্নরূপ:

ঘটনা তারিখ সময়
চতুর্থী তিথি শুরু ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩৮
চতুর্থী তিথি শেষ ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:১৪
পূজার শুভ মুহূর্ত ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১১:৩৮ থেকে ১:৪০

এই সময়কালে ভক্তরা গণেশ পূজা করতে পারেন এবং তাঁর আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে পারেন।

গণেশ মন্ত্রের অলৌকিক শক্তি: জীবনের সকল সমস্যার সমাধান এক মন্ত্রে!

বিনায়ক চতুর্থীর তাৎপর্য

বিনায়ক চতুর্থী হিন্দু ধর্মে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এর তাৎপর্য বিভিন্ন দিক থেকে বিবেচনা করা যায়:

আধ্যাত্মিক উন্নতি

ভগবান গণেশ বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর পূজা করলে অজ্ঞানতা দূর হয় এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা লাভ হয়।

বাধা অপসারণ

বিনায়ক চতুর্থী জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আদর্শ সময় বলে মনে করা হয়। ভক্তরা ব্যক্তিগত, পেশাগত এবং আধ্যাত্মিক জীবনের বাধা দূর করার জন্য প্রার্থনা করেন।

সমৃদ্ধি ও সাফল্য

ভগবান গণেশের পূজা করলে ধন-সম্পদ, সুখ-শান্তি এবং সৌভাগ্য লাভ হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।

নেতিবাচকতা দূরীকরণ

এই দিনে উপবাস পালন করা হয়, যা মন ও শরীর থেকে নেতিবাচক শক্তি দূর করে এবং আধ্যাত্মিক সংযোগ বৃদ্ধি করে।

বিনায়ক চতুর্থীর রীতিনীতি

বিনায়ক চতুর্থীতে বিভিন্ন ধরনের রীতিনীতি পালন করা হয়। এগুলি হল:

প্রস্তুতি

  • সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে পরিষ্কার পোশাক পরতে হয়।
  • বাড়িতে পূজার স্থান পরিষ্কার করে সাজাতে হয়।

পূজা

  • গণেশের মূর্তি বা ছবি স্থাপন করতে হয়।
  • সিঁদুর, হলুদ গুঁড়ো দিয়ে মূর্তি অলংকৃত করতে হয়।
  • ফুল, ধূপ, চন্দন, মিষ্টি, ফল ইত্যাদি নিবেদন করতে হয়।
  • গণেশের প্রিয় মিষ্টি মোদক নিবেদন করা হয়।

মন্ত্র জপ

  • “ওঁ সিদ্ধিবিনায়কায় নমঃ” বা “ওঁ গং গণপতয়ে নমঃ” মন্ত্র ১০৮ বার জপ করতে হয়।

আরতি

  • প্রদীপ ও ধূপ জ্বালিয়ে গণেশের আরতি করতে হয়।

উপবাস

  • অনেকে সারাদিন উপবাস পালন করেন। কেউ কেউ শুধু ফল বা হালকা খাবার গ্রহণ করেন।

প্রসাদ বিতরণ

  • পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

বিনায়ক চতুর্থীর কাহিনী

বিনায়ক চতুর্থীর পিছনে একটি পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। এই কাহিনী অনুসারে:

  • দেবী পার্বতী মাটি দিয়ে গণেশকে সৃষ্টি করেন।
  • তিনি গণেশকে তাঁর স্নানের সময় পাহারা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
  • ভগবান শিব ফিরে এসে প্রবেশ করতে চাইলে গণেশ তাঁকে বাধা দেন।
  • ক্রুদ্ধ হয়ে শিব গণেশের মাথা কেটে ফেলেন।
  • পরে বুঝতে পেরে শিব প্রথম জীবিত প্রাণীর মাথা এনে গণেশের দেহের সাথে যুক্ত করেন।
  • সেই প্রাণীটি ছিল একটি হাতি, তাই গণেশের হাতির মাথা হয়।

এই কাহিনী থেকে গণেশের জন্ম এবং তাঁর বিশেষ রূপের উৎপত্তি বোঝা যায়।

বিনায়ক চতুর্থী পালনের উপকারিতা

বিনায়ক চতুর্থী পালন করলে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়:

  • জ্ঞান ও বুদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
  • শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসে।
  • জীবনের বাধা-বিপত্তি দূর হয়।
  • আর্থিক সমৃদ্ধি আসে
  • মানসিক শান্তি লাভ হয়।
  • আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটে।
  • নতুন কাজ শুরু করার জন্য শুভ সময় হিসেবে বিবেচিত হয়।

কলকাতায় সোনার দাম আকাশছোঁয়া! ১লা নভেম্বর Gold Rate-এ নতুন রেকর্ড

বিনায়ক চতুর্থী হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা ভগবান গণেশের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রকাশের মাধ্যমে পালিত হয়। এই দিনটি শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং জীবনের বিভিন্ন দিকে উন্নতি ও সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করার একটি সুযোগ। ২০২৫ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি এই উৎসবটি পালন করে ভক্তরা গণেশের আশীর্বাদ লাভের আশা করেন। বিনায়ক চতুর্থী পালনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আনার চেষ্টা করা হয়।

About Author
Avatar

আমাদের স্টাফ রিপোর্টারগণ সর্বদা নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে আপনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে পারেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতিশ্রুতি আমাদের ওয়েবসাইটকে একটি বিশ্বস্ত তথ্যের উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।তারা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্টিংয়ে বিশ্বাসী, দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন তৈরিতে সক্ষম