Tips for fast hair growth: চুল লম্বা করা অনেকের কাছেই একটি স্বপ্নের মতো। কিন্তু মাত্র ৭ দিনে চুল লম্বা করা কি সম্ভব? হ্যাঁ, অবশ্যই সম্ভব! যদিও চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার মাসে প্রায় ১-১.২৫ সেন্টিমিটার, তবুও কিছু প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করে আপনি অল্প সময়ে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারেন।চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল স্কাল্পের যত্ন নেওয়া।
স্কাল্প মাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, যা চুলের ফলিকল পুষ্টি পায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৫-১০ মিনিট ধরে আঙ্গুলের ডগা দিয়ে আলতোভাবে স্কাল্প মাসাজ করুন। এর সাথে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়।পুষ্টিকর খাবার খাওয়াও চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি। প্রোটিন, বিটামিন এ, সি, ই, বায়োটিন, জিঙ্ক এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খান। ডিম, মাছ, বাদাম, পালং শাক, গাজর, কমলা ইত্যাদি খাবার চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
Save Hair from Humidity: আর্দ্রতার কবল থেকে চুল বাঁচানোর ১০টি অব্যর্থ উপায়
প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত, যা শরীর এবং চুলকে হাইড্রেটেড রাখে।অনেকেই জানেন না যে, রাতে ঘুমানোর আগে চুলে তেল মাখা খুবই উপকারী। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা আমন্ড অয়েল ব্যবহার করুন। তেল মাখার পর একটি গরম তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন ৩০ মিনিট। এতে তেল ভালোভাবে চুলে শোষিত হয়। সকালে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।চুলের মাস্ক ব্যবহার করাও খুব কার্যকরী। ডিমের সাদা অংশ, দই এবং মধু মিশিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করুন। এটি চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন, তারপর ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্ক চুলকে পুষ্টি দেয় এবং বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।আলোয়েরা জেল চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি চুলের ফলিকল মজবুত করে এবং বৃদ্ধি বাড়ায়। আলোয়েরা জেল স্কাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন, তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ২-৩ বার করতে পারেন।
মেথি বীজও চুলের বৃদ্ধির জন্য খুব কার্যকরী। রাতে ২ চামচ মেথি বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই পানি খেয়ে ফেলুন এবং বীজগুলো চিবিয়ে খান। এটি নিয়মিত করলে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হয়।অনিয়ন জুস চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। পেঁয়াজের রস বের করে স্কাল্পে লাগান এবং ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ২-৩ বার করতে পারেন। পেঁয়াজের সালফার চুলের বৃদ্ধি বাড়ায় এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।রোজমেরি অয়েলও চুলের বৃদ্ধির জন্য খুব উপকারী। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলের ফলিকল উদ্দীপিত করে। রোজমেরি অয়েল স্কাল্পে ম্যাসাজ করুন এবং ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।চুলের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি কিছু বিষয় এড়িয়ে চলাও জরুরি। গরম পানি দিয়ে চুল ধোয়া, অতিরিক্ত হিট স্টাইলিং, টাইট হেয়ার স্টাইল করা এড়িয়ে চলুন। এগুলো চুলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে।মনে রাখবেন, চুলের বৃদ্ধি একটি ধীর প্রক্রিয়া।
কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজায়? জেনে নিন চাঞ্চল্যকর তথ্য
৭ দিনে আপনি হয়তো খুব বেশি পরিবর্তন দেখতে পাবেন না, কিন্তু এই উপায়গুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে অবশ্যই ফল পাবেন। ধৈর্য ধরুন এবং নিয়মিত যত্ন নিন।একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত স্কাল্প মাসাজ করলে ৪ মাসে চুলের ঘনত্ব ৩২% পর্যন্ত বাড়তে পারে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট নেওয়া মহিলাদের মধ্যে ৯০ দিনে চুলের পরিমাণ ৩৮% বেড়েছে।চুলের স্বাস্থ্য শুধু বাইরের থেকে নয়, ভিতর থেকেও উন্নত করতে হয়। স্ট্রেস কমানো, পর্যাপ্ত ঘুম, ধূমপান ত্যাগ করা – এসব অভ্যাসও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুব জরুরি। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।চুলের ট্রিমিং নিয়মিত করা উচিত। এতে স্প্লিট এন্ডস দূর হয় এবং চুল স্বাস্থ্যকর থাকে।
তবে খুব ঘন ঘন ট্রিমিং করবেন না, ৮-১০ সপ্তাহ পর পর করলেই চলবে।সিল্ক বা স্যাটিন পিলোকেস ব্যবহার করুন। এতে ঘুমের সময় চুলের ঘর্ষণ কম হয় এবং চুল ভাঙ্গা কম হয়।শেষ কথা হল, চুলের যত্ন নেওয়া একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। হঠাৎ করে কোনো চমৎকার ফল আশা করবেন না। ধৈর্য ধরুন, নিয়মিত যত্ন নিন, সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। ধীরে ধীরে আপনি নিশ্চয়ই ফল পাবেন। আপনার চুল হবে লম্বা, ঘন এবং সুস্থ। মনে রাখবেন, সুন্দর চুল আপনার সৌন্দর্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই এর যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি।