Solutions to delay in girls marriage: বিয়ে হচ্ছে না – এমন সমস্যায় অনেক মেয়েই আজকাল ভুগছেন। বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও পাত্র মিলছে না, অথবা পাত্র পাওয়া গেলেও নানা কারণে বিয়ে আটকে যাচ্ছে। এর ফলে মানসিক চাপে থাকতে হচ্ছে অনেক মেয়েকেই। কিন্তু হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করলেই বিয়ের বাধা কাটানো সম্ভব।জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, কুন্ডলীতে কোনো দোষ থাকলে তা বিয়ের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও নানা সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণেও মেয়েদের বিয়েতে দেরি হতে পারে। তবে এসব বাধা অতিক্রম করার জন্য কিছু সহজ উপায় রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই উপায়গুলো:
১. হলুদের ব্যবহার বাড়ান:
খাবারে হলুদের ব্যবহার বাড়ালে তা বিয়ের বাধা কাটাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুধে হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া হলুদ মাখা পরোটা বা ডাল রান্না করে খেতে পারেন। গোসল করার আগে পানিতে একটু হলুদ মিশিয়ে নিতে পারেন। গোসলের পর কপালে হলুদ ও কেশর মিশ্রিত টিপ পরতে পারেন।
২. সুগন্ধি ব্যবহার করুন:
গোসলের পর অবশ্যই কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করুন। প্রাকৃতিক সুগন্ধি যেমন আতর বা ইত্র ব্যবহার করা ভালো। কখনোই গোসল করা বাদ দেবেন না।
৩. কন্যাদানে সহায়তা করুন:
যদি কোনো গরিব পরিবারের মেয়ের বিয়েতে আর্থিক সাহায্য করতে পারেন তাহলে তা করুন। এতে আপনার নিজের বিয়ের বাধা কাটতে পারে। কাপড়, গয়না বা অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে পারেন।
৪. তালা-চাবি রাখুন:
একটি নতুন তালা ও চাবি কিনে বালিশের নিচে রেখে ঘুমান। পরের দিন সকালে সেই তালা ও চাবি কোনো চৌমাথায় রেখে আসুন। রাখার পর পেছন না তাকিয়ে সোজা এগিয়ে যান।
৫. নবগ্রহ পূজা করুন:
মন্দিরে গিয়ে নবগ্রহের পূজা করলে বিয়ের বাধা কাটতে পারে। নবগ্রহের মূর্তি সাধারণত শনি দেবতার মূর্তির কাছেই থাকে। এমন মন্দিরে পূজা করুন যেখানে নবগ্রহের সঙ্গে তাদের পত্নীদের মূর্তিও আছে।
৬. বৃহস্পতিবারে গোরুকে খাওয়ান:
প্রতি বৃহস্পতিবারে একটি গোরুকে ছোলা, গুড়, আটার ময়দা ও হলুদ মিশিয়ে খাওয়ান। এটি ৭ সপ্তাহ ধরে করুন।
৭. মা দুর্গার পূজা করুন:
যদি কুন্ডলীতে রাহুর দোষ থাকে তাহলে নিয়মিত মা দুর্গার পূজা করলে তা কাটতে পারে। এতে শীঘ্রই জীবনসঙ্গী পাওয়া যেতে পারে।
বিয়ের আগের দিন: কী করবেন, কী করবেন না
এছাড়াও কিছু ব্যবহারিক পদক্ষেপ নিলে বিয়ের সম্ভাবনা বাড়তে পারে:
- নিজের শিক্ষা ও দক্ষতা বাড়ান। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করুন বা কোনো পেশাগত প্রশিক্ষণ নিন। এতে ভালো পাত্র পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
- আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করুন। চাকরি বা ব্যবসা করে নিজের পায়ে দাঁড়ান।
- সামাজিক যোগাযোগ বাড়ান। বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের সাথে মেলামেশা করুন। এতে পাত্র পাওয়ার সুযোগ বাড়বে।
- ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট বা বিয়ের এজেন্সিতে নাম নথিভুক্ত করুন।
- নিজের স্বাস্থ্য ও রূপচর্চার দিকে নজর দিন। সুস্থ থাকুন ও সুন্দর সাজুন।
- ইতিবাচক মনোভাব রাখুন। হতাশ না হয়ে আশাবাদী থাকুন।
মনে রাখবেন, বিয়ে একটি সামাজিক প্রথা মাত্র। এটি না হলেও জীবন অচল হয়ে যায় না। তাই অতিরিক্ত চিন্তা না করে নিজের উন্নয়নে মনোযোগ দিন। যখন সময় হবে, তখনই বিয়ে হয়ে যাবে।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষিত ও কর্মজীবী মেয়েদের বিয়ে একটু দেরিতে হয়। কিন্তু তাদের বিয়ে টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বিয়ের জন্য অতিরিক্ত চিন্তা না করে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।ভারতে প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি বিয়ে হয়। এর মধ্যে ৪০% বিয়েই হয় ২৫-৩০ বছর বয়সের মধ্যে।
ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর করার প্রস্তাবিত আইন বিতর্কের ঝড় তুলেছে
তাই ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এটাই এখন সাধারণ ট্রেন্ড।বিয়ের বয়স বাড়ার কারণে ভারতে বাল্যবিবাহের হার কমছে। ২০০৬ সালে যেখানে ৪৭% মেয়ের বিয়ে হতো ১৮ বছরের আগে, ২০১৬ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৭%-এ। এটা একটা ইতিবাচক পরিবর্তন।তবে মনে রাখবেন, কেবল বিয়ের জন্যই জীবন নয়। নিজের পছন্দের কাজ করুন, নতুন কিছু শিখুন, ভ্রমণে যান – এভাবে জীবনকে উপভোগ করুন। বিয়ে হলে ভালো, না হলেও কোনো সমস্যা নেই। আপনি নিজেই নিজের জীবনের নায়িকা।