অবশেষে প্রকাশ পেল ১ হাজার ৮০৪ জন দাগি প্রার্থী তালিকা, সবার চোখ এখন স্কুল সার্ভিস কমিশনে

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) আজ অবশেষে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন নিয়ে অনিয়মে দাগি হিসেবে চিহ্নিত ১ হাজার ৮০৪ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় নামclusion পায়…

Laboni Das

 

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) আজ অবশেষে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন নিয়ে অনিয়মে দাগি হিসেবে চিহ্নিত ১ হাজার ৮০৪ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় নামclusion পায় প্রধানত শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রস্তুতিমূলক কেলেঙ্কারি, সেবা বদল, ও অন্যান্য অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত প্রার্থীরা।

আজ সকালে কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (wbssc.gov.in) আপলোডকৃত পিডিএফে দেখা যায়, গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতিমূলক টাকার বিনিময়ে কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করারসফটওয়্যার হ্যাক, এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট জালিয়াতির মতো অভিযোগ যাচাই করে ১ হাজার ৮০৪ জন প্রার্থীকে স্থায়ীভাবে দাগি তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, যারা এ তালিকায় আছে, তাঁরা ভবিষ্যতে কোনো সরকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না।

এর আগে, চলতি আগস্টে এক প্রেস রিলিজে কমিশন জানায়, অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে দফায় দফায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রথমে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০০ জনের অভিযোগ যাচাই করে সুপারিশ করা হয়েছিল; এরপর ব্যাপক অনুসন্ধানে আরও ৩০০ জনের নাম যোগ করা হয়। আজকের তালিকাটি হলো তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়ের ফল, যা গত কয়েক মাসে আইনশৃঙ্খলা দপ্তর ও অডিট দফতর যৌথভাবে সম্পন্ন করেছে।

তালিকায় নাম থাকা প্রার্থীর সংখ্যা জেলার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, কলকাতা থেকে ৩৫০ জন, হাওড়া ২৭৫ জন, হুগলি ২২৮ জন, পশ্চিম মেদিনীপুর ১৮০ জন এবং অন্যান্য জেলার মধ্যে আনুষ্ঠানিক ক্রমিক অনুসারে বাকি ৭৭১ জনের নাম রয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই প্রার্থীরা মূলত ভর্তি কেন্দ্র অবৈধ প্রভাব বিস্তারনকল পরীক্ষাজালিয়াতি ডাক ও সেবা বদলের মাধ্যমে নিয়োগ—এসব কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন।

নিয়মিত শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অন্যান্য প্রার্থীরা এমন কেলেঙ্কারিবাজদের কারণে আইনের চোখে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করতেন। অনেক প্রার্থী ছাত্র সংগঠন করে কমিশনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। আজকের ঘোষণায় তাঁদের দাবি কিছুটা মিটেছে বলে মনে করছেন দাবিদাররা। তবে কিছু অসন্তুষ্টি রয়েছেন; অনেকে মনে করছেন, অভিযুক্তদের অধিকাংশই অর্থনৈতিকভাবে সম্পদের প্রভাবশালী ব্যক্তি, তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

পটভূমি হিসেবে উল্লেখযোগ্য, ২০১৮ সালেও কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসে, তখন গ্রেফতার হন কয়েকজন প্রার্থী ও মধ্যস্বত্ত্বভোগী। তবে তারা নগদ জালিয়াতি, আবাসন হেফাজতকারী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারি করায় আজকের মতো চূড়ান্ত দাগি তালিকা তৈরি করা হয়নি। এই প্রথম এত বড় সংখ্যক প্রার্থীর নাম একসঙ্গে প্রকাশ করায় ব্যাপক সমালোচনা ও প্রশংসা দুই-ই ধরা দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, দাগি তালিকা থেকে বাদ পড়া প্রার্থীজনের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কমিশন এ তালিকা আপলোড করার পাশাপাশি অভিযোগ প্রতিকার কমিটি গঠন করেছে, যেখানে প্রার্থী তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রতি সপক্ষের জবাব দিতে পারবেন। ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করলে তালিকা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

সুপ্রিম কোর্টের পুরোনো রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন জানিয়েছে, ভবিষ্যতে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে চাওয়া হলে ‘কন্ডাক্ট অ্যান্ড কনভার্ট’ শংসাপত্রের নিয়মাবলী কঠোর করা হবে। আর দাগি তালিকাভুক্তদের ক্ষেত্রে সেই শংসাপত্রই মূল ‘নো এন্ট্রি’ পাসপোর্টের মতো কাজ করবে।

About Author
Laboni Das

এখানে লাবনী দাশের জন্য একটি সম্ভাব্য Author Bio প্রস্তাব করছি: লাবনী দাশ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি একজন উদীয়মান লেখিকা এবং সাংবাদিক, যিনি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমসাময়িক বিষয়ে লিখে থাকেন। তাঁর লেখায় সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ ফুটে ওঠে। লাবনী নিয়মিত এই ওয়েবসাইটে প্রবন্ধ, গল্প ও সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেন।